মেয়েকে স্কুল থেকে আনতে বের হয়ে আর ফেরা হলো না রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের
মেয়েকে স্কুল থেকে আনতে বের হয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. পুরনজিত মহালদার। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে রাজশাহী মহানগরীর চন্দ্রিমা থানা এলাকায় দ্রুতগতির একটি ট্রাককে সাইড দিতে গিয়ে মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে মৃত্যু হয় তার।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মোসা. শামসুন নাহার বলেন, 'পুরনজিত স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে নগরীর পদ্মা আবাসিকে থাকতেন।'
জানা যায়, ড. পুরনজিত মহালদারের স্ত্রীর নাম সীমা। এই দম্পতির দুটি সন্তান রয়েছে। তার বড় মেয়ের নাম তিতিল মহালদার, সে রাজশাহী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী। তার ছোট সন্তানের নাম পূষণ মহালদার। তার বয়স তিন বছর।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. শহীদ ইকবাল বলেন, 'ড. পুরনজিত প্রতিদিন দুপুরে মেয়েকে স্কুল থেকে আনতে যান। গতকালও তিনি মোটরসাইকেলে করে স্কুল থেকে মেয়েকে আনতে যাচ্ছিলেন। নগরীর বারো রাস্তার মোড়ের পাশের সড়কে দ্রুতগতির একটি ট্রাককে সাইড দিতে গিয়ে তার মোটরসাইকেল বালুর ওপর উঠে যায়। এর ফলে মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে পাশের বৈদ্যুতিক পোলের সঙ্গে তার মাথায় আঘাত লাগে।'
তিনি বলেন, 'সেখানেই রক্তক্ষরণ দেখে স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে সাড়ে তিনটায় তার মৃত্যু হয়। মস্তিষ্কে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয়েছে বলে জানান চিকিৎসকরা।'
তিনি আরও বলেন, 'তার অবস্থা এত খারাপ ছিল যে ঢাকাতেও মুভ করার সুযোগ ছিল না।'
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. শঙ্কর কে বিশ্বাস বলেন, 'দুর্ঘটনার পর তাকে বিকাল ৩টা ৪০মিনিটে হাসপাতালের ৮ নং ওয়ার্ডে নিউরোসার্জারী বিভাগে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানেই রাত সাড়ে ৩টায় মৃত্যু হয়।'
তিনি বলেন, 'তার অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। মস্তিষ্কের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে।'
আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টায় তার মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ কলাভবনের সামনে আনা হয়। সেখানে তার দীর্ঘদিনের সহকর্মী শিক্ষার্থী ও শুভানুধ্যায়ীরা তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং চোখের জলে তাকে চিরবিদায় জানান।
শ্রদ্ধা নিবেদনের পর, তার মৃতদেহ খুলনার ডুমুরিয়া গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে।