আবু সাঈদকে নিয়ে কটূক্তি: মানহানির মামলায় ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুমের বিচার শুরু
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সাময়িক বরখাস্ত সহকারী কমিশনার (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) তাপসী তাবাসসুম ঊর্মির বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগে বিচার শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহ মামলায় অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন আদালত নাকচ করে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী খাদেমুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আইনজীবী খাদেমুল ইসলাম জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদকে নিয়ে চরম অবমাননাকর মন্তব্যের অভিযোগে দায়ের করা মানহানির মামলায় আজ অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির দিন ছিল। আসামিপক্ষ তাপসীকে মামলায় অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করেছিল, তবে আদালত তা নাকচ করে অভিযোগ গঠন করেন। এর মাধ্যমে মামলার বিচারকাজ শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৮ অক্টোবর, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রথম শহিদ আবু সাঈদসহ অন্যান্য শহিদদের নিয়ে তাপসী তাবাসসুমের বিরূপ মন্তব্যের অভিযোগে গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ ঢাকার আদালতে মানহানির মামলা করেন।
আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড এবং পর্যালোচনা শেষে ২৮ নভেম্বর তাপসী তাবাসসুমকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী খাদেমুল ইসলাম জামিনের বিরোধিতা করলেও ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইমরান আহমেদের আদালত ৫০০ টাকা বন্ডে সেদিন তার জামিন মঞ্জুর করেন।
মামলার আবেদনে বলা হয়, গত ৫ অক্টোবর আসামি উর্মি শুধু নিহত আবু সাঈদ নয়, সরকারের দায়িত্বশীল পদে থাকা সত্ত্বেও ছাত্র-গণআন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত সরকার ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধেও অবমাননাকর বক্তব্য ফেসবুক লেখেন। যার মাধ্যমে আপিল বিভাগের রেফারেন্সের ভিত্তিতে সংবিধান সম্মতভাবে গঠিত একটি সরকারপ্রধান সম্পর্কে বিষাদগার করা হয়েছে। পাশাপাশি সরকার উৎখাতের হুমকি দিয়ে জনমনে ভীতি সৃষ্টি করা হয়েছে।
তাপসী আদালতের শুনানির সময় জামিনে উপস্থিত ছিলেন। গত বছরের ৮ অক্টোবর ঢাকা সিএমএম আদালতে গণ অধিকার পরিষদের সদস্য আবু হানিফ তাপসীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ২৮ নভেম্বর তাপসীকে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেছিলেন। তাপসী যথাসময়ে আদালতে হাজির হয়ে জামিন নেন।
লালমনিরহাটের সহকারী কমিশনার (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) হিসেবে কর্মরত অবস্থায় তাপসী এক ফেসবুক পোস্ট দেন, যা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এরপর তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয় এবং পরে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তাপসীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয় এবং তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।