র্যাবের হাতে কারা নিহত হয়েছে সে ব্যাপারে সরকারের কাছে তথ্য নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, র্যাবের হাতে কারা নিহত হয়েছে সে ব্যাপারে সরকারের কাছে কোনো তথ্য নেই।
র্যাব এবং এর বর্তমান ও সাবেক ৭ কর্মকর্তাদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় এ কথা বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'ওরা বলেছে, বাংলাদেশে ১০ বছরে র্যাবের হাতে ৬০০ জন নিহত হয়েছে। কে কে নিহত হয়েছে, তার কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। ওদের (আমেরিকার) আরও বেশি তথ্য-প্রমাণ যাচাই করা উচিত ছিল। শুধু বলার জন্য বলে দেওয়া উচিত হয়নি।'
গতকাল শুক্রবার মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব বিভাগ) ও পররাষ্ট্র দপ্তর।।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই নিষেধাজ্ঞা অত্যন্ত দুঃখজনক।
নিষেধাজ্ঞা পাওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ রয়েছেন। তিনি এখন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি)। গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি নিষেধাজ্ঞা কর্মসূচির আওতায় এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকার জন্য এ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা পাওয়া অন্যরা হলেন— র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) তোফায়েল মোস্তাফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) মো. আনোয়ার লতিফ খান।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর আলাদা এক ঘোষণায় বেনজীর আহমেদ এবং র্যাব-৭-এর সাবেক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মিফতাহ উদ্দীন আহমেদের ওপর সে দেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাতে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত তাকে ফোন করে এই নিষেধাজ্ঞার কথা জানান।
র্যাবের প্রশংসা করে তিনি বলেন, 'তারা এমন একটি প্রতিষ্ঠানকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যেটি বাংলাদেশকে সন্ত্রাসমুক্ত করেছে, এটা খুবই দুঃখজনক। তারা বাংলা ভাইয়ের মতো সন্ত্রাসীদের নির্মূল করেছে। এই প্রতিষ্ঠানের ওপর বাংলাদেশের জনগণের আস্থা আছে।'
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর ছয় লাখ মানুষ নিখোঁজ হয়। কর্তব্যরত অবস্থায় পুলিশ প্রায় এক হাজার মানুষকে হত্যা করে, কিন্তু কোনো শাস্তি হয় না।
তিনি আরও বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তার প্রধানকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা যুক্তরাষ্ট্রের নতুন একটা ঢং। 'আর এখানে নতুন এক ঢং বের হলো—হেড অব দি ইন্সটিটিউশন, তাকে কী করে…এগুলো খুব দুঃখজনক।'
এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, হয়তো প্রভাব পড়বে, পারে তবে এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চিতভাবে বলতে পারবে। তিনি বলেন, দেশ কোনো ভূরাজনীতির শিকার হলে তা-ও সরকার বিশ্লেষণ করবে।