কেরানীগঞ্জ থেকে এমভি-১০ লঞ্চের চার মালিকের একজন গ্রেপ্তার
গত শুক্রবার ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে ৪২ জন নিহতের ঘটনায় লঞ্চটির চারজন মালিকের একজন হামজালাল শেখকে কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এমভি অভিযান-১০ এর চারজন মালিকসহ আটজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর হামজালাল শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়। র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রোববার এ ঘটনায় একটি মামলা দায়েরের পর মেরিন কোর্টের স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জয়নাব বেগম এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, অভিযুক্তরা হলেন লঞ্চ কোম্পানি মেসার্স আল আরাফ অ্যান্ড কোম্পানির চারজন মালিক হামজালাল শেখ, মো শামীম আহমেদ, মো রাসেল আহমেদ ও ফেরদৌস হাসান রাব্বি; লঞ্চের মাস্টার-ইন-চার্জ মো রিয়াজ শিকদার, ড্রাইভার-ইন-চার্জ মো মাসুম বিল্লাহ; সেকেন্ড মাস্টার মো খলিলুর রহমান ও সেকেন্ড ড্রাইভার আবুল কালাম।
নৌপরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান পরিদর্শক মো. শফিকুর রহমান নৌ আদালতে নৌ-চলাচল অধ্যাদেশ, ১৯৭৬ (আইএসও-১৯৭৬) এর আওতায় মামলাটি করেন।
নৌপরিবহন অধিদপ্তরের সূত্র বলছে আইনানুযায়ী রোববার লঞ্চের ফিটনেস সার্টিফিকেট, রেজিস্ট্রেশন ও মাস্টার-ড্রাইভারের সার্টিফিকেট স্থগিত করা হবে।
মামলার নথিতে বলা আছে, লঞ্চটিতে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক সামগ্রী ছিল না। এছাড়া, লঞ্চে অননুমোদিত ডিজেলের ড্রাম এবং রান্নার জন্য অতিরিক্ত সিলিন্ডার গ্যাস মজুদ ছিল। এগুলো আইএসও'৭৬ আইন এবং ২০০৫ এর সংশোধনীর ৫৬, ৬৬, ৬৯ এবং ৭০ ধারা অনুযায়ী দন্ডনীয় অপরাধ।
বরিশাল নৌ বিভাগের পরিদর্শকের দেওয়া প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী এই মামলা করা হয়েছে।
তদন্ত দলের প্রধান নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো তোফায়েল ইসলাম রোববার দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, 'গতকাল আমরা লঞ্চে পরিদর্শন করে, বিভিন্ন বিষয় খুঁটিয়ে দেখেছি। তাতে লঞ্চের ইঞ্জিনে কিছু ত্রুটি পেয়েছি। এতে মনে করছি আগুনের সূত্রপাত ইঞ্জিন রুম থেকেই হতে পারে এবং কোনো বাধা না পাওয়ায়, পরে তা সমস্ত লঞ্চে ছড়িয়ে গেছে।"
গত বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে ঝালকাঠি জেলার সুগন্ধা নদীতে চলন্ত লঞ্চে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নৌপথে স্মরণকালের ভয়াবহতম এ অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ৪৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন। তবে ঝালকাঠিতে অবস্থিত বাংলাদেশ রেড-ক্রিসেন্ট অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এখনো ৫৪ জন নিখোঁজ।
আজ সকালেও অগ্নিকাণ্ডে নিহত আরও একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।) ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা সংলগ্ন বিশখালি নদীতে মরদেহটি ভেসে ওঠে।