মাসিক ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে মামাতো ভাইয়ের পরিবর্তে জেল খাটতেন তিনি
কদমতলীতে এক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে সোহাগ ওরফে বড় সোহাগকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই সোহাগ পরে তার ফুফাতো ভাইকে প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে তার বদলে জেলে খাটতে রাজি করে নিজে আত্মগোপনে চলে যান। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) আজ এ তথ্য জানিয়েছে।
শনিবার (২৯ জানুয়ারি) স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল মিটফোর্ড হাসপাতালে দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন নিতে এসে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয় পলাতক এ অপরাধী।
আজ র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
ঢাকার কদমতলীতে ২০১০ সালের একটি হত্যাকাণ্ড মামলার প্রধান আসামী হিসেবে সোহাগকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর ২০১৪ সালে জামিন পেয়ে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। ২০১৭ সালে আদালত তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দন্ডিত করেন।
এ রায়ের পর সোহাগ পরিচয়ে কারাভোগের জন্য তার ফুফাতো ভাই মোঃ হোসেনের সাথে চুক্তি করেন।
হোসেনকে সোহাগ জানিয়েছিলেন, ৩ মাসের মধ্যে তাকে বের করে আনা হবে, এই সময়ে তাকে প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে।
২০১৮ সালে মোঃ হোসেন আদালতে আত্মসমর্পনপূর্বক জামিন প্রার্থনা করেন। আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
ঘটনাটি গত বছর একজন সাংবাদিক আদালতের নজরে আনেন। পরে আদালত কারা কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন চায়। প্রতিবেদনে ২০১০ সালে ধৃত আসামী সোহাগ আর বর্তমানে হাজতে থাকা নকল সোহাগের অমিলের বিষয়টি উঠে আসে।
গত বছরের আগস্ট মাস থেকে র্যাবের অপারেশন টিম ও গোয়েন্দা টিম আসল সোহাগকে ধরতে কাজ করে আসছিল। পরে বিশেষ দায়রা আদালত ও দ্রত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪, প্রকৃত আসামীর (সোহাগ) বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
সোহাগ এই ঘটনা জানতে পেরে দেশত্যাগের চেষ্টা শুরু করে। এজন্য জাতীয় পরিচয়পত্র পরিবর্তন করে পাসপোর্ট তৈরি করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসা সংগ্রহ করে।
দেশত্যাগের আগে গতকাল ভ্যাকসিনের ২য় ডোজ গ্রহণ করার জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল মিডফোর্ড হাসপাতাল আসে। এসময় র্যাব-১০ এর একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে।
র্যাবের কর্মকর্তারা জানিয়েছে, সোহাগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ২ টি হত্যা মামলা, ২ টি অস্ত্র মামলা ও ৬ টি মাদক মামলাসহ মোট ১০ টি মামলা আছে।