প্রকৃতির ক্ষতি রোধে গড়ে তুলতে হবে পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নগর: বিশেষজ্ঞ দল
প্রকৃতির ক্ষতি রোধ করতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় ইকোসিস্টেম পুনরুদ্ধার, বনের টেকসই ব্যবস্থাপনা এবং পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নগর উপযোগিতাসহ বেশ কয়েকটি পদক্ষেপের সুপারিশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
২০৩০ সালের মধ্যে গ্লোবাল কমিশন অন বায়োডাইভারসিটিজ-এর সাম্প্রতিক প্রকাশনার একটি ওয়েবিনার চলাকালীন সময় বিশেষজ্ঞরা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে নগরায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
উল্লেখ্য, সবুজ শহর নির্মাণের জন্য নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণ বাড়ানোর লক্ষ্যে বসে এই ওয়েবিনার।
ওয়েবিনারে আলোচিত অন্যান্য বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল উৎপাদনশীল এবং পুনরুৎপাদনশীল কৃষি, স্বচ্ছ এবং টেকসই সাপ্লাই চেইন, প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ খনিজ ও ধাতু নিষ্কাশন, প্রাকৃতিক শক্তি স্থানান্তর এবং পরিবেশের সাথে মানানসই নকশা তৈরি।
আলোচনায় বিশেষ দূত হিসেবে গ্লোবাল কমিশন অন বায়োডাইভারসিটিজ এর সিভিএফ এবং কমিশনার মোঃ আবুল কালাম আজাদ, বায়োডাইভারসিটিস রিপোর্টের উপর তৈরি প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম এবং আলেকজান্ডার ভন হাম্বোল্ট বায়োলজিক্যাল রিসোর্সেস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ে তৈরি এই প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছে নেচার গভর্নমেন্ট অব কলম্বিয়া।
"২০৩০ সালের বায়োডাইভারসিটিজ রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিনিয়োগের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে শহরগুলোতে ৫৯ মিলিয়নেরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং এর অর্থমুল্য ১.৫ ট্রিলিয়ন ডলার," বলেন আজাদ।
এছাড়া, সীড (এসইইড) এর চেয়ারম্যান, পিকেএসএফ এবং প্রধান উপদেষ্টা ডঃ কাজী খলিকুজ্জামান আহমেদ বলেন, "জলবায়ু পরিবর্তন এবং জীববৈচিত্র্য একে অপরের সাথে যুক্ত।
বিশ্বব্যাপী শহরগুলোর অবস্থা বেশ খারাপ এবং দুর্ভাগ্যবশত আমরা সেই তালিকার শীর্ষে রয়েছি। সবচেয়ে বেশি দূষণ রেকর্ড করা হয়েছে আমাদের শহরে। ভবিষ্যতে প্রকৃতিবান্ধব শহর গড়তে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।"
এনভায়রনমেন্ট, ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড রিসার্চ সিস্টেমের পরামর্শদাতা হাসিব ইরফানউল্লাহ বলেন, "প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধান নতুন কিছু নয়। আমাদের যা দরকার তা হলো ইতিমধ্যে প্রস্তুত থাকা সমাধানগুলোকে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা।"
এ বিষয়ে বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, "মূলত শহর সম্পর্কে আমাদের কোনো দৃষ্টিভঙ্গি নেই। সতর্কতা অবলম্বন না করলে আমরা ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে পারি।"
ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, পুরো নগরী দূষণ ও দখলদারিতে ভুগছে।
তিনি আরও বলেন, যেসব অবকাঠামোতে বৃষ্টির পানি সংগ্রহের নিজস্ব ব্যবস্থা রয়েছে তাদের হোল্ডিং ট্যাক্সের ১০ শতাংশ মওকুফ করা হবে।
"আমরা আমাদের পরিবেশের ক্ষতি করা উন্নয়নের দিকে আরও বেশি ঝুঁকছি, যদিও প্রতিদিন নতুন প্রযুক্তি এবং পদ্ধতি আবিষ্কৃত হচ্ছে," বলেন মেয়র।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, প্রতিবেশীদের মধ্যে বৃক্ষরোপণ প্রতিযোগিতার বিষয়টি এখন আর শহরে দেখা যায় না।