দুই বছর পর বেনাপোল দিয়ে ট্যুরিস্ট ভিসায় যাতায়াত শুরু
অবশেষে দুই বছর বন্ধের পর গত মঙ্গলবার থেকে স্থলপথে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আবারও ট্যুরিস্ট ভিসায় বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত শুরু হয়েছে। দুই বছর পর যাতায়াত স্বাভাবিক হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে যাত্রীদের মধ্যে।
করোনা সংক্রমণ রোধে ২০২০ সালের ১৩ মার্চ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ভারত। সংক্রমণ কমে আসলে মেডিকেল ও বিজনেস ভিসা চালু হলেও এতদিন বন্ধ ছিল ট্যুরিস্ট ভিসায় যাতায়াত।
জানা যায়, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল বন্দর দিয়ে চিকিৎসা, ব্যবসা ও ভ্রমণে সবচেয়ে বেশি মানুষ ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করে থাকে। প্রতিবছর বেনাপোল বন্দর দিয়ে ট্যুরিস্ট ভিসায় প্রায় ১০ লাখ পাসপোর্টধারী যাত্রী ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করে। যাত্রীদের কাছ থেকে ভিসা ফি বাবাদ ভারতীয় দূতাবাসের আয় একশ কোটি টাকার কাছাকাছি। আর ভ্রমণ কর বাবদ বাংলাদেশ সরকারের রাজস্ব আসে প্রায় ৫০ কোটি টাকা।
২০২০ সালের ৮ মার্চ প্রথম বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ দেখা দিলে ১৩ মার্চ সীমান্ত বন্ধ করে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ভারত। এতে বন্ধ হয়ে যায় যাত্রী যাতায়াত। পরে করোনা সংক্রমণ কমে আসলে ৬ মাস পর মেডিকেল ও পরে বিজনেস ভিসা চালু হয়। তবে এসব ভিসায় জটিলতা বেশি থাকায় ভ্রমণে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল।
ফলে দুই দেশের মানুষের দাবি ছিল- ট্যুরিস্ট ভিসা চালুর মাধ্যমে যাতায়াত সহজ করা। অবশেষে গত ২৫ মার্চ থেকে ভারতীয়দের ট্যুরিস্ট ভিসার আবেদন গ্রহণ করে কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস। পরে ৩০ মার্চ থেকে বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসগুলো বাংলাদেশিদের ট্যুরিস্ট ভিসা প্রদান করে।
সোমবার থেকে ট্যুরিস্ট ভিসায় বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত ভ্রমণ শুরু হয়। সহজে ভিসা মেলায় স্বস্তি ফিরেছে যাত্রীদের মাঝে। বাংলাদেশিদের ভিসা দিতে ভারতীয় দূতাবাস ৮৪০ টাকা চার্জ নিচ্ছে। আর বাংলাদেশ দূতাবাস ভিসা ফি নিচ্ছে ৮২৫ রুপি। সীমান্ত অতিক্রমের সময় বাংলাদেশ সরকার ভ্রমণ কর বাবদ ১২ বছরের ঊর্ধ্বে প্রত্যেক যাত্রীদের ৫০০ টাকা, ৫ থেকে ১২ বছরের মধ্যে যাত্রীদের ২৫০ টাকা আদায় করছে। ৫ বছরের নিচে শিশুদের ভ্রমণ কর মওকুফ রয়েছে।
ভারতগামী ট্যুরিস্ট ভিসার যাত্রী রবিউল আলম জানান, মেডিকেল ও বিজনেস ভিসায় অনেক ভোগান্তি। এখন সহজে ট্যুরিস্ট ভিসা মিলছে তাই অনেক খুশি।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি মোঃ রাজু জানান, ট্যুরিস্ট ভিসা চালু হওয়ায় যাত্রী যাতায়াত বেড়েছে। তবে নতুন ট্যুরিস্ট ভিসা যাদের তারা কেবল ভারতে যেতে পারছেন। পুরানো ট্যুরিস্ট ভিসায় যাতায়াত আপাতত বন্ধ রয়েছে। ভারত যাওয়ার সময় বাংলাদেশি যাত্রী যারা করোনার ডাবল ডোজ টিকা নিয়েছেন তাদের করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ সনদ লাগছে। ভারত থেকে ফেরার সময় করোনা পরীক্ষা করতে হবে না। তবে ভারতীয় যাত্রীরা ডাবল ডোজ টিকা গ্রহণে করোনা পরীক্ষা ছাড়াই আসা যাওয়া করতে পারছেন।
বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, ২ বছর পর সোমবার থেকে ট্যুরিস্ট ভিসায় বেনাপোল বন্দর দিয়ে সড়ক পথে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত শুরু হয়েছে। যাত্রী সেবায় অন্যান্য সংস্থার পাশাপাশি কাজ করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।