টিকাদান কার্যক্রমের ২৩ হাজার কোটি টাকার হিসাব মেলেনি: টিআইবি
কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সরকারের নেওয়া ভ্যাকসিন কার্যক্রমে অর্থ ব্যয়ে স্বচ্ছতার ঘাটতি ছিলো বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। ভ্যাকসিন কেনা ও ব্যবস্থাপনায় প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকার হিসাব দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
আজ এক ভার্চুয়াল কনফারেন্সে একটি গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করে টিআইবি পক্ষ থেকে এ কথা বলা হয়েছে।
'করোনাভাইরাস সংকট মোকাবেলায় সুশাসন: অন্তর্ভুক্তি ও স্বচ্ছতার চ্যালেঞ্জ' শিরোনামের প্রতিবেদনেটিতে বলা হয়েছে, এ বছর মোট ২৯৬.৪ মিলিয়ন ডোজ কোভিড ভ্যাকসিন পেয়েছে বাংলাদেশ। ভ্যাকসিন কেনার দাম ও ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমে আনুমানিক খরচ হতে পারে ১৩ হাজার-১৭ হাজার কোটি টাকা। এ পরিমাণ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া হিসাবের অর্ধেকেরও কম।
এর আগে, গত বছরের জুলাইতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছিল, প্রতি ডোজ ভ্যাকসিনের দাম পড়বে ৩ হাজার টাকা। তবে, টিআইবি বলছে ভ্যাকসিন প্রতি খরচ হতে পারে সর্বোচ্চ ২২৫ টাকা।
২০২২ সালের ১০ মার্চ স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছিলেন, ভ্যাকসিন কার্যক্রমে ৪০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে।
টিআইবি বলছে, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর টিকার পরিচালন ব্যয় সম্পর্কে একটি মডেল দাঁড় করিয়েছে কোভ্যাক্স রেডিনেস অ্যান্ড ডেলিভারি ওয়ার্কিং গ্রুপ। ভ্যাকসিন কার্যক্রমে টিকা পরিবহন, সংরক্ষণ, টিকাকর্মী নিয়োগ এবং তাদের বেতন-ভাতা, বিদ্যমান অবকাঠামো, জনবলের ব্যবহারসহ যতো খরচ হতে পারে সব বিবেচনায় নিয়ে হিসাব করা হয়েছে। এই মডেলের মাধ্যমে প্রতি ডোজ ভ্যাকসিনের খরচ কেমন হতে পারে তা দেখানো হয়েছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, 'ভ্যাকসিন ক্রয় ও ব্যবস্থাপনায় সচ্ছতার ঘাটতি ছিলো। শুধু একটি দেশের ক্ষেত্রে টিকার ক্রয়মূল্য প্রকাশ না করার শর্ত থাকলেও অন্যান্য উৎস থেকে কেনা টিকার ব্যয় এবং টিকা কার্যক্রমে কোন কোন খাতে কত টাকা ব্যয় হয়েছে তা প্রকাশ করা হয়নি। ভ্যাকসিন কার্যক্রমে অর্থ ব্যয় সম্পর্কে মোটাদাগে কোনো তথ্য দেয়নি স্বাস্থ্যমন্ত্রী। স্বাস্থ্যমন্ত্রী যে ব্যয়ের কথা বলেছে তা বাস্তব ব্যয়ের অর্ধেক।'
টিআইবির এই গবেষণা প্রতিবেদনের ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কিছু জানানো হয়নি।