ঝড় আতঙ্কে সাতক্ষীরার বাজার আমে ভরপুর, কমেছে দাম
ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাব পড়েছে সাতক্ষীরার আম বাজারে। ব্যবসায়ীরা গাছ থেকে দ্রুত আম ভেঙে নিচ্ছেন। এতে বাজারে আমের সরবরাহ কয়েকগুণ বেড়ে গেছে, কমেছে আমের দাম। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ও ব্যবসায়ীরা।
সাতক্ষীরার বড় বাজারের আম আড়ত ব্যবসায়ী সেমার্স জান্নাতুল বানিজ্য ভান্ডারের সত্ত্বাধিকারী আব্দুল হামিদ জানান, ঝড়ের আতঙ্কে গাছ থেকে চাষীরা আম ভেঙে বাজারে নিয়ে আসছেন। বাজারে আমের দাম একেবারেই কমে গেছে।
"প্রতি মণ গোবিন্দভোগ আম বাজারে বিক্রি হয় ২৫০০ টাকা। সেই আম আজ সোমবার বিক্রি হচ্ছে ১৮০০-১৯০০ টাকায়। এতে চাষীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আবার ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।"
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় গত বছর ৪ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছিল। চলতি বছর ৪ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। আবাদ বাড়লেও এ বছর ৫০ ভাগ গাছেই আম হয়নি। জেলায় ৫ হাজার ২৯৯টি আমবাগান ও ১৩ হাজার আমচাষী আছে।
সাতক্ষীরার শিবপুর গ্রামের আম ব্যবসায়ী রাশেদুল ইসলাম শহরের বড় বাজারে আমের আড়তে ১০ মন আম বিক্রি করতে এসেছেন। তিনি বলেন, "গাছ থেকে গোবিন্দভোগ আম সব ভেঙে নিয়ে এসেছি। শুনেছি ঝড় আসবে সেকারণে আগেভাগেই ভেঙেছি। ঝড় হলে তখন আমগুলো সব নষ্ট হয়ে যাবে।"
রাজধানীর যাত্রাবাড়ির রুজেন ফ্রুটস থেকে সাতক্ষীরার বড়বাজারে আম কিনতে এসেছেন লুৎফর রহমান খান। তিনি বলেন, "দেশের মধ্যে সর্বপ্রথম সাতক্ষীরার আম বাজারে আসে। ঢাকা থেকে এখানে আম কিনতে এসেছি। বাজারে গোবিন্দভোগ, গোপালভোগসহ ভালো আম পাওয়া যাচ্ছে। তবে যেভাবে ধারণা করেছিলাম তার থেকেও কম দামে আম পাচ্ছি। মূলত ঝড় আসার খবরে আমের দাম কমে গেছে।"
সাতক্ষীরা আম ব্যবসায়ী সমিতির সাধারন সম্পাদক আব্দুর রহিম জানান, "প্রতিদিন ১০-১২টি ট্রাক করে আম যাচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। আম্পান, ইয়াস, করোনা এসব কারণে আম ব্যবসায়ীরা গত কয়েক বছর ধরে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ বছর এমনিতে গাছে আমের ফলন কম তারপর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আম ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।"
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ির উপ পরিচালক নুরুল ইসলাম বলেন, "আমাদের কাছে তথ্য আছে এদিকে ঝড় হবে না তবে বৃষ্টিপাত হতে পারে। এখন ঝড় আতঙ্কে যদি আম চাষী বা ব্যবসায়ীরা গাছ থেকে কাঁচা আম পেড়ে নেয় সেখানে আমরা কী করতে পারি। তবে আম চাষী ব্যবসায়ীদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ থাকবে।"