আজ থেকে রাত ৮টার পর দোকানপাট, বিপণিবিতান বন্ধ
আগামীকাল থেকে সারা দেশে রাত ৮টার দোকান, বিপণিবিতান খোলা রাখা যাবে না।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের লক্ষ্যে আজ সোমবার (২০ জুন) থেকে সারা দেশে রাত ৮টার পর বন্ধ থাকবে দোকান ও বিপনিবিতান।
রোববার বিকেলে সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, সার্বিক বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয় করার জন্য সরকার বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ১১৪ কঠোরভাবে প্রতিপালনের উদ্যোগ নিয়েছে। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) সহ সকল ব্যবসায়ী সংগঠন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার প্রতি সম্মান জানিয়ে সরকারের এ উদ্যোগ মেনে নিয়েছেন।
তবে দোকান মালিক সমিতি আগামী ১লা জুলাই থেকে ১০লা জুলাই পর্যন্ত পবিত্র ঈদ-উল আযহাকে সামনে রেখে রাত ১০টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলা রাখার অনুমতির চান।
প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, তাদের অনুরোধ বিবেচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নিকট উপস্থাপন করা হবে।
পরে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. এহছানে এলাহী জানান, ডক, জেটি, স্টেশন অথবা বিমান বন্দর এবং পরিবহন সার্ভিস টার্মিনাল অফিস; তরিতরকারি, মাংস, মাছ, দুগ্ধ জাতীয় সামগ্রী, রুটি, পেস্ট্রি, মিষ্টি এবং ফুল বিক্রির দোকান; ঔষধ, অপারেশন সরঞ্জাম, ব্যান্ডেজ অথবা চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান; দাফন ও অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রির দোকান; তামাক, সিগার, সিগারেট, পান-বিড়ি, বরফ, খবরের কাগজ, সাময়িকী বিক্রির দোকান; খুচরা পেট্রোল বিক্রির জন্য পেট্রোল পাম্প এবং মেরামত কারখানা নয় এমন মোটর গাড়ির সার্ভিস স্টেশন; নাপিত এবং কেশ প্রসাধনীর দোকান; যেকোন ময়লা নিষ্কাশন অথবা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা; যে কোন শিল্প, ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠান যা জনগণকে শক্তি, আলো-অথবা পানি সরবরাহ করে; এবং ক্লাব, হোটেল, রেস্তরাঁ, খাবার দোকান, সিনেমা অথবা থিয়েটার এই বিধিনিষেধের আওতার বাইরে থাকবে।
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১১৪ এর উপধারা-৩ এ বলা হয়েছে, কোন দোকান রাত ৮টার পর খোলা রাখা যাবে না। তবে কোন গ্রাহক যদি উক্ত সময়ে কেনাকাটার জন্য দোকানে থাকেন তা হলে উক্ত সময়ের অব্যবহতি আধা ঘণ্টা পর পর্যন্ত তাকে কেনাকাটার সুযোগ দেওয়া যাবে।
এছাড়াও ১১৪ এর উপধারা-১ এ বলা হয়েছে, প্রত্যেক দোকান বা বাণিজ্য বা শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রতি সপ্তাহে অন্তত দেড় দিন সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।
কোন এলাকায় কোন প্রতিষ্ঠান কোন দেড় দিন সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে তা প্রধান পরিদর্শক স্থির করে দেবেন।
সভায় শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. এহছানে এলাহী, বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মহ. শের আলী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নুসরাত জাবীন বানু, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাসুদ করিম, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ, এফবিসিসিআই এর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি মো. নূর কুতুব আলম মান্নানসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সিটি কর্পোরেশন, দপ্তর- সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।