ঐতিহ্যবাহী ধামাইল সংগীত ও নৃত্যানুষ্ঠান কর্মশালা
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত সুনামগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ধামাইল গান ও নৃত্য প্রশিক্ষণের সমাপনী আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রবিবার (১৪ জুলাই) একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা স্টুডিও থিয়েটার হলে এই সমাপনী আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়।
একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী’র পরিকল্পনায় একাডেমির ২৫জন সংগীত ও নৃত্য শিল্পীর অংশগ্রহণে তিন দিনব্যাপী এই কর্মশালা শুরু হয় গত ১২ জুলাই। ১২-১৪ জুলাই প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। প্রশিক্ষণ দিয়েছেন সুনামগঞ্জের সংগীত প্রশিক্ষক দেবদাস চৌধুরী রঞ্জন। নৃত্য প্রশিক্ষণ দিয়েছেন তুলিকা ঘোষ চৌধুরী এবং যন্ত্রসহযোগী অমিত বর্মণ।
তিন দিনের প্রশিক্ষণ শেষে ১৪ জুলাই সন্ধ্যা ৬টায় সমাপনী এবং ধামাইল নৃত্য ও সংগীতানুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষনার্থীদের অংশগ্রহণে ৭টি গানের সাথে নৃত্য পরিবেশিত হয়।
সমাপনী আয়োজনের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্যে প্রশিক্ষক তুলিকা ঘোষ চৌধুরী বলেন, ‘এখন আমরা একটা স্মার্ট যুগে চলে এসেছি। আমাদের যে ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক পরিবেশনাগুলো কোন নির্দিষ্ট সংস্কৃতি বা জাতির নয়। তাই আমরা সবাই মিলে সেটি করতে পারি। ধামাইল সাধারণত
নারীরা করে থাকে কিন্তু আমি চাই, নারী পুরুষ বৈষম্য না করে সবাই একযোগে কাজ করবো। তাই এই প্রশিক্ষণে পুরুষদেরকেও অন্তর্ভুক্ত করেছি।’
ধামাইল মূলত নারীরা পরিবেশন করে থাকে। এটি দক্ষিনের দিকে পরিবেষ্টিত হয়ে দলগত ভাবে পরিবেশন করতে হয়।
উল্লেখ্য, ধামাইলের পরিবেশনায় রয়েছে বেশ কয়েকটি পর্ব। এরমধ্যে তিনদিনে ৫টি পর্বের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। যথা-
আসন বন্দনা-তোমরা আসন সাজাওগো, বিচ্ছেদ বন্দনা-আমার বন্ধু দয়াময়…তোমারে দেখবার মনে লয়, বাঁশি পর্ব-বাঁশিত ধইরা মারলো টান ও বাইজ্জোনারে শ্যামের বাঁশি জয় রাধা বলিয়া, আক্ষেপ পর্ব-আমি সাধ করে পরেছি গলে শ্যাম কলঙ্কের মালা, জলভরা পর্ব-আমি কি হেরিলাম জলের ঘাটে গিয়া সখি গো এবং সবশেষে পরিবেশিত হয় মিলন পর্ব-যুগল মিলন হইলো গো বৃন্দাবন আজ প্রেমে ভাইসা যায়।
ধামাইলে পর্ব অনুযায়ী পোশাকেও রয়েছে ভিন্নতা।
বাংলাদেশে রয়েছে বৈচিত্র্যময় ঐতিহ্যবাহী লোকজ নাচ আর গানের ধরণ। এই ঐতিহ্য গুলো যাতে হারিয়ে না যায় তাই লোকজ উৎস ও প্রশিক্ষকদের কাছ থেকে এরকম নাচের ধরন শেখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন প্রশিক্ষনার্থীরা।
পরবর্তীতে আরও বিভিন্ন লোকজ গান ও নৃত্যের প্রশিক্ষণ আয়োজন এবং ধামাইল উৎসব আয়োজনের পরিকল্পার কথা জানিয়েছেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।