বাউলদের পদচারণায় মুখর সাঁইজির আখড়াবাড়ি
বাউল সম্রাট মরমী সাধক ফকির লালন সাঁইয়ের ১২৯ তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে আজ থেকে কুষ্টিয়ায় শুরু হচ্ছে লালন মেলা।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) থেকে শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী উৎসব ও মেলাকে কেন্দ্র করে জেলার ছেঁউড়িয়ায় সাঁইজির বারাম খানার আখড়া বাড়িতে বসছে সাধুর হাট।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় কুষ্টিয়া লালন একাডেমির আয়োজনে তিরোধান দিবস পালন উপলক্ষ্যে আখড়া বাড়িতে সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
‘সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হোক আমাদের দিন বদলের অনুপ্রেরণা’ মুলমন্ত্র বাস্তবায়িত করতে বাউল সম্রাটের ১২৯ তম তিরোধান দিবসের অনুষ্ঠানমালাকে সাজানো হয়েছে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ সদর আসনের এমপি মাহবুব উল আলম হানিফ আজ উৎসবের আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেনের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক হিসেবে থাকছেন কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমান।
সুষ্ঠুভাবে আয়োজন সম্পন্ন করতে নেয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশের পাশাপাশি অনুষ্ঠানস্থলে থাকছে র্যাব ও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ।
এদিকে, মূল উৎসব শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগ থেকে আখড়ায় আসা বাউল সাধকরা মাজারের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে গেয়ে চলেছে সাঁইজির আধ্যাত্মিক মর্মবাণী ও ভেদ তথ্যের গান।
উল্লেখ্য, বৃটিশ শাসকগোষ্ঠির নির্মম অত্যাচারে গ্রামের সাধারণ মানুষের জীবনকে যখন বিষিয়ে তুলেছিল, ঠিক সেই সময়ই মানবতার পথ প্রদর্শক হিসাবে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ’র আবির্ভাব ঘটে কুমারখালির ছেঁউড়িয়াতে। ১৮৯০ সালের ১৭ অক্টোবর বাউল সম্রাট দেহত্যাগ করেন। পরে তার সাধন-ভজনের ঘরের মধ্যেই তাকে সমাহিত করা হয়।
জানা যায়, ছেঁউড়িয়ার আঁখড়া স্থাপনের পর থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত শিষ্যভক্তদের নিয়ে পরিবৃত থাকা লালন প্রায় এক হাজার গান রচনা করে গেছেন।