২০ বছরে হ্যারি পটার: কে সবচেয়ে ধনী 'হ্যারি পটার' তারকা?
হাঁটি হাঁটি পা পা করে ২০ বছর পূরণ করে ফেললো জনপ্রিয় সিরিজ চলচ্চিত্র 'হ্যারি পটার'। এই সুদীর্ঘ যাত্রায় আমরা দেখেছি কিশোর হ্যারি পটার, মায়াবি মেয়ে হার্মিওনি গ্রেঞ্জার কিভাবে বড় হয়ে উঠেছেন, কিভাবে একেকজন হয়ে উঠেছেন হলিউডের প্রথম সারির তারকা। সিনেমার দুই দশক পূর্তি উপলক্ষে 'হ্যারি পটার' ছবির সকল তারকা একত্রিত হবেন বলে ঘোষণা দিয়েছে ওয়ার্নার ব্রোস স্টুডিও। বিশ বছর পূর্তি উদযাপন করতে একটি 'অ্যানিভার্সারি স্পেশাল' মুক্তি দিবে তারা।
জে কে রাউলিং এর বিখ্যাত বই 'হ্যারি পটার' অবলম্বনে নির্মিত হ্যারি পটার চলচ্চিত্রটি বিশ্বব্যাপী ব্লকবাস্টার ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর মধ্যে অন্যতম। ফোর্বস সূত্র বলছে, ২০০১ সালে মুক্তির পর থেকে হ্যারি পটারের আয় ৭ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় তা ৬৫ হাজার ৯৯৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা!
হ্যারি পটার সিরিজের সর্বশেষ ছবি মুক্তির পর আরও অনেক চলচ্চিত্র ও টিভি সিরিজে কাজ করেছেন ছবিটির অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। এদের মধ্যে কেউ কেউ হলিউডে মোটা অংকের পারিশ্রমিকভুক্ত তারকাদের তালিকায়ও উঠে এসেছেন। এসব তারকার সম্পদ বিত্তান্ত হিসাব করেছে সেলিব্রেটি নেট ওর্থ। চলুন জেনে নেওয়া যাক ২০ বছর পর 'হ্যারি পটার' এর প্রধান কিছু তারকা কে কোথায় আছেন এবং তাদের সম্পদের পরিমাণ কত।
জে কে রাউলিং- ১ বিলিয়ন ডলার
আপনি হয়তো জেনে অবাক হবেন যে হ্যারি পটার তারকা হিসেবে সবচেয়ে বিত্তশালী ব্যক্তিটি কোনো অভিনেতা নন, বরং লেখিকা জে কে রাউলিং নিজে! রাউলিং এর নিজের সম্পদের পরিমাণ ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এযাবত সারা বিশ্বে তার বইগুলোর ৫০০ মিলিয়নেরও বেশি কপি বিক্রি হয়েছে।
শুধু বই থেকেই নয়, অরল্যান্ডোতে ইউনিভার্সাল স্টুডিওর 'উইজার্ডিং ওয়ার্ল্ড অব হ্যারি পটার' নামক থিম পার্ক এবং পটারমোর ওয়েবসাইট থেকেও আয় করেছেন তিনি। এডিনবার্গ ও পার্থশায়ারে দুটি এস্টেট রয়েছে জনপ্রিয় এই লেখিকার। ফোর্বস সূত্র অনুযায়ী, জেমস প্যাটারসনের পর রাউলিংই দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী লেখক। এটাকেও আমরা তার জাদু বলেই ধরে নিতে পারি!
ড্যানিয়েল র্যাডক্লিফ- ১১০ মিলিয়ন ডলার
হ্যারি পটারের পুরো সিরিজ থেকে মোট ৯৫.৬ মিলিয়ন ডলার আয় করেছেন সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে থাকা তারকা ড্যানিয়েল র্যাডক্লিফ, জানিয়েছে সিবিসি নিউজ। এমনকি সিবিসি নিউজের কাছে র্যাডক্লিফ অকপটে স্বীকার করেছেন, তিনি এই বিপুল পরিমাণ সম্পদ দিয়ে তেমন কিছুই করেন না।
দ্য বেলফাস্ট টেলিগ্রাফকে দেওয়া আরেক সাক্ষাতকারে এই তারকা জানান, তিনি তার সব টাকা গোপন স্থানে সরিয়ে রেখেছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও নিউইয়র্কে কিছু বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে্র পেছনে খরচা করেছেন র্যাডক্লিফ। তার বাড়িতে স্রেফ একটি ম্যাট্রেসের দামই ১৭,০০০ ডলার বলে জানায় ইনসাইডার।
রবার্ট প্যাটিনসন- ১০০ মিলিয়ন ডলার
হ্যারি পটার সিরিজের চতুর্থ সিরিজে সেড্রিক ডিগোরির ভূমিকায় ছিলেন রবার্ট প্যাটিনসন। হ্যারি পটারের পরেই টোয়ালাইট সাগা দিয়ে বাজিমাত করেন এই তারকা। টোয়ালাইটে এডওয়ার্ড কিউলেন চরিত্রে অভিনয় করে তুমুল জনপ্রিয়তা লাভের পাশাপাশি এই ফ্র্যাঞ্চাইজিতে ২৫ মিলিয়ন ডলার মূল বেতন ধরা হয় তার। শেষ দুটি চলচ্চিত্রের জন্য পান আরও ৪০ মিলিয়ন। ব্যাটম্যানের ভূমিকায় অভিনয়ের পাশাপাশি ২০১৩ সাল থেকে 'ডায়র' এর পুরুষদের সুগন্ধির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে কাজ করছেন ৩৫ বছর বয়সী এই তারকা। শুধুমাত্র ডায়র থেকেই তার আয় ১২ মিলিয়ন ডলার।
এমা ওয়াটসন- ৮৫ মিলিয়ন
হ্যারি পটার ছবির মিষ্টি মেয়ে হার্মিওনি গ্রেঞ্জারকে পছন্দ করেন না এমন লোক পাওয়া কঠিন! হলিউড রিপোর্টার সূত্র অনুযায়ী, হ্যারি পটারের মোট ৮টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে মোট ৬০ মিলিয়ন ডলার নিজের পকেটে পুরেছেন এমা ওয়াটসন। এর পরে ডিজনির বিউটি অ্যান্ড দ্য বিস্ট ছবিতে প্রধান একটি চরিত্রে 'বেলে'র ভূমিকায় অভিনয় করে পেয়েছেন আরো ১৫ মিলিয়ন ডলার। বলা যায় হ্যারি পটারের সাথে সাথে গোটা একটা প্রজন্মকে মাতিয়ে তুলেছিলেন এমা ওয়াটসন। অভিনয়ের পাশাপাশি কেভিন ক্লেইন, ল্যানকম, ডলস অ্যান্ড গাবানা ও বারবেরির মতো বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ডগুলোর মডেল হিসেবেও কাজ করছেন তিনি।
ফ্রান্সে অবসর যাপনের ভবন 'শ্যালে' নির্মাণের পেছনে নিজের কিছুটা অর্থ ব্যয় করেছেন এই অভিনেত্রী। এছাড়াও নিউইয়র্ক ও লন্ডনে একাধিক বিলাসবহুল বাড়ি রয়েছে তার।
কেনেথ ব্রানাগ- ৬০ মিলিয়ন ডলার
'হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য চেম্বার অব সিক্রেটস'-এ গিল্ডারয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন পাঁচবারের অস্কার মনোনয়নপ্রাপ্ত অভিনেতা কেনেথ ব্রানাগ। ব্রানাগের ৬০ মিলিয়ন ডলার সম্পত্তির পেছনে তার মার্ভেল চলচ্চিত্র 'থর' (২০১১), ডি্জনির 'সিন্ডারেলা' (২০১৫) এবং 'মার্ডার অন দ্য ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস' ছবিগুলো পরিচালনার ভূমিকা রয়েছে।
রূপার্ট গ্রিন্ট- ৫০ মিলিয়ন ডলার
হ্যারি পটারে রন ওয়েসলে চরিত্রে অভিনয়ে মাধ্যমে পরিচিত হয়ে ওঠেন ব্রিটিশ অভিনেতা রূপার্ট গ্রিন্ট। যদিও খুব বেছে বেছে কাজ করেছেন তিনি, তবুও তার ব্যাংকব্যালেন্সের পরিমাণ কম নয়। এডিনবার্গ লাইভ সূত্র জানায়, হ্যারি পটারের ডেথলি হলোজ পার্ট ওয়ান ও টুতে অভিনয়ের মাধ্যমে ৩০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছেন তিনি। তাছাড়া পুরো সিরিজে পেয়েছেন ৭০ মিলিয়ন ডলার। অভিনয়ের পাশাপাশি রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করেও টাকা আয় করেছেন তিনি।
সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট