‘এটা আমার বাঁচা-মরার লড়াই’
নাজমুন মুনিরা ন্যান্সি। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী। তবে এখন তিনি ভিন্ন আলোচনায়। গায়ক আসিফ আকবরের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তিনি। অভিযোগ- বিভিন্ন মিডিয়ায় তাকে নিয়ে মানহানিকর বক্তব্য দিয়েছেন আসিফ। পুলিশ বলছে, প্রাথমিক তদন্তে মিলেছে অভিযোগের সত্যতা।
এই মামলায় গত ৩১ ডিসেম্বর আদালতের সমন পেয়েছেন আসিফ আকবর।
কেন মামলা করলেন, কী অভিযোগ তার- এসব বিষয়ে দ্য বিজনেস স্ট্যার্ন্ডাডের সঙ্গে কথা বলেছেন ন্যান্সি।
গত বছর ১০ জুলাই ময়মনসিংহ কতোয়ালী থানায় আসিফ আকবরের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন ন্যান্সি। সেখানে বলা হয়, বিভিন্ন মিডিয়ায় তার মানহানি হয়- এমন বক্তব্য দিয়েছেন আসিফ। যার ফলে তিনি ও তার পরিবার হেয় প্রতিপন্ন হয়েছেন।
এদিকে, ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানার ইন্সপেক্টর অপারেশন ওয়াজেদ আলী জানিয়েছেন, বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় দীর্ঘ সময় নিয়ে তদন্ত করার পর অভিযোগের সত্যতা পেয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার এই মামলায় সমন পান গায়ক আসিফ আকবর। নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে নিজেকে নিরপরাধ দাবি করে পোস্ট দেন তিনি।
ন্যান্সি যা বললেন
টিবিএস: মামলা কেন করলেন?
নাজমুন মুনিরা ন্যান্সি: আমি আসলে নিরুপায় হয়ে আসিফ ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছি। আমার মামলা করার কোনো ইচ্ছা ছিল না। মানুষের যখন পিছাতে পিছাতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়, তখন আর করার কিছু থাকে না। একজন নিরস্ত্র মানুষকেও যদি একের পর এক আঘাত করা হয়, এক সময় সেও নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করে। আমার কাছে মনে হয়েছে, এটা আমার বাঁচা-মরার লড়াই।
টিবিএস: কী এমন ঘটেছে যে, নিরুপায় হয়ে আদালতে যেতে হলো?
ন্যান্সি: তিনি (আসিফ) বিভিন্ন গণমাধ্যমে আমাকে নিয়ে অসত্য কথা বলেছেন। তার বক্তব্য আমাকে ও আমার পরিবারকে হেয় প্রতিপন্ন করেছে। বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে তিনি আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। আমি তো একজন শিল্পী। এই পরিচয় ছাড়াও আমি একজন স্ত্রী, একজন মা, আমার পরিবার-পরিজন আছে। আমার সন্তানরা বড় হচ্ছে, তাদের নিজস্ব একটি পরিমণ্ডল আছে। মিডিয়ায় তিনি যেভাবে আমাকে নিয়ে বলেছেন, তা মানার মতো না।
টিবিএস: যেহেতু আপনারা একই অঙ্গনে কাজ করছেন, আপনাদের দুজনের যুগলবন্দিতে বেশ ভালো কিছু গান দর্শক পেয়েছে, সেহেতু নিজেরা বসে সমাধান করা যেত না?
ন্যান্সি: আসিফ ভাইয়ের প্রথম অ্যালবাম যখন বের হয়, তখন আমি খুবই ছোট। ফাইভ কি সিক্সে পড়ি। এত সিনিয়র একজন আর্টিস্ট যখন একজন জুনিয়রকে ব্যক্তিগত ক্ষোভের জায়গা থেকে আক্রমণ করছেন, এটা মানার মতো না। সিনিয়র হোক, জুনিয়র হোক- এ ধরনের আচরণ করা ঠিক না। এসব বন্ধ হওয়া উচিত। কারণ, দর্শকরা আমাদেরকে ফলো করে: আমরা কী করছি না করছি- সব খোঁজ দর্শক রাখে। তাই এরকম একটি প্লাটফর্মে থেকে সহকর্মীকে নিয়ে কোনো মানহানিকর বক্তব্য দেওয়া উচিত না- এটাই আমি বলতে চাচ্ছি। কারণ, সিনিয়রাই তো আমাদের শেখাবেন।
টিবিএস: এখন কী করবেন? উভয় পক্ষ বসে সমাধানের কি কোনো সম্ভাবনা আছে?
ন্যান্সি: আইন যে পথে যাবে, আমি এখন সেই পথেই যাব। এর বাইরে তো যাওয়ার সুযোগ নেই। আমি যেতেও চাই না। ব্যক্তিগতভাবে কোনো আলোচনার প্রয়োজন দেখছি না। আইনিভাবে এটি শেষ হওয়ার মধ্যেই উভয়পক্ষের জন্য মঙ্গল।
টিবিএস: আপনার কি আর কিছু বলার আছে?
ন্যান্সি: আমি চাই, কারও অসম্মান হয়, সমাজে হেয় প্রতিপন্ন হয়- এমন অনুষ্ঠান যে সকল গণমাধ্যম প্রকাশ করে, তারা একটু সচেতন হবে। কোনো নারীকে অসম্মান করে দেওয়া বক্তব্য প্রচার করা থেকে বিরত থাকবে। আমি চাই এতটুকু বার্তা দিতে যে, আপনি চাইলেই কারও মানহানি করতে পারেন না।