‘মায়া’য় তিন প্রজন্মের নারী হিসেবে অভিনয় করেছি: মিথিলা
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/infograph/public/images/2021/08/05/maya_mithila.jpg)
ভারতের কলকাতায় 'মায়া' নামে একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন এ দেশের অভিনেত্রী রাফিয়াত রশীদ মিথিলা। রাজর্ষি দে পরিচালিত এই ছবির শুটিং শেষ হয়েছে গত মাসের শেষ দিকে।
বৃহস্পতিবার প্রকাশ পেয়েছে ছবিটির ফার্স্ট লুক।
ছবিতে কেন্দ্রীয় চরিত্র মায়ার ভূমিকায়ই দেখা যাবে মিথিলাকে। ফার্স্ট লুক প্রকাশের পর দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/infograph/public/images/2021/08/05/maya_mithila_3.jpg)
টিবিএস: দেশের বাইরে প্রথম কোনো চলচ্চিত্রের শুটিং, অনুভূতি কী?
রাফিয়াত রশীদ মিথিলা: আমি প্রচণ্ড তৃপ্ত। একটা নতুন জায়গায় সবাই নতুন কোনো কাজ করতে গেলে যেমনটা আশা করে, আমিও সে রকম আশা করেছিলাম। চেয়েছিলাম প্রথম কাজটা যেন অন্যরকম হয়। সেটা পেয়েছি। এই ছবিতে আমার অভিনয় করার অনেক জায়গা ছিল। সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়েছি। তাই আমার খুবই ভালো লাগছে।
টিবিএস: চলচ্চিত্রটিতে আপনার চরিত্রের নাম মায়া। কেমন সেই চরিত্র?
মিথিলা: গল্পটা শেক্সপিয়ারের 'ম্যাকবেথ' অবলম্বনে; অনুপ্রেরণায়ও বলতে পারেন। আমার চরিত্রটার নাম মায়া। এই চরিত্রে আমি তিন বয়সের নারী হিসেবে অভিনয় করেছি। ১৭-১৮ বয়সী, ৩০ বছর এবং ৫০ বছর বয়সী। আমার প্রচুর লুক চেঞ্জ করতে হয়েছে। আমার জন্য খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল এটি। গল্পটি নারীর দৃষ্টিকোণ থেকে লেখা। মায়া আসলে সকল নারীর প্রতীক, যারা সমাজে মাথা নিচু করে থাকতে চায় না। নিজের লক্ষ্যে দৃঢ়তার সাথে এগিয়ে যেতে চায়। এটাই পুরো গল্পে দেখানো হয়েছে।
টিবিএস: আপনাকেও অনেকে দৃঢ়চেতা নারী হিসেবে জানে। মায়া চরিত্রের সঙ্গে কি আপনার জীবনের কোনো মিল পেলেন?
মিথিলা: একেবারে মিলে গেছে, বলব না। মায়ার গল্পটা আলাদা। দৃঢ়তার জায়গায়টায় মিল পাবেন। আমি ব্যক্তিগত জীবনে অনেক স্ট্রাগল করে এই জায়গায় এসেছি। অনেকবার সাইবার হ্যারেসমেন্টের শিকার হয়েছি। সামাজিকভাবে হয়তো হেয় হয়েছি। কিন্তু নিজ লক্ষ্যে অবিচল ছিলাম। (তাহসানের সঙ্গে) আমার ডিভোর্সের সময় থেকে শুরু করে এত দূর অবধি আমাকে নানা স্ট্রাগল করতে হয়েছে। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে আমি চাকরি করে গেছি। লেখাপড়া করে গেছি। অভিনয় করেছি। সিঙ্গেল মাদার হিসেবে বাচ্চাকে মানুষ করেছি। এখনো যে বুলিং হয় না, তা কিন্তু না। কিন্তু এসবের আসলে আমি কাজ দিয়েই জবাব দেব। এ কারণে কাজ করে যাচ্ছি।
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2021/08/05/maya_mithila_2_0.jpg)
টিবিএস: 'মায়া'র শুটিং হয়েছে কোথায় কোথায়?
মিথিলা: এটার শুটিং হয়েছে ১২ জুলাই থেকে ২৭ জুলাই অবধি। আমার শুটিং হয়েছে গঙ্গার ধারে। পানিহাটিতে। পুরনো মন্দিরেও হয়েছে। কলকাতার আশেপাশেই শুটিং করেছি আমরা।
টিবিএস: সহশিল্পীরা কেমন করেছেন?
মিথিলা: আমার সাথে যারা অভিনয় করেছেন, তারা সবাই খুব গুণী শিল্পী। যেমন, কমলেশ্বর মুখার্জী একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা। তার 'মেঘে ঢাকা তারা' চলচ্চিত্রের আমি খুবই ফ্যান। সুদীপ্তা চক্রবর্তী ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পাওয়া শিল্পী। তনুশ্রীসহ সবাই খুব মেধাবী। ১৭ জন শিল্পীর বিশাল টিম। সবার সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছে।
টিবিএস: 'মায়া' কবে নাগাদ মুক্তি পেতে পারে?
টিবিএস: ৫০ ভাগ আসন খালি রেখে পশ্চিমবঙ্গে সিনেমা হল খুলেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে হয়তো এ বছরই মুক্তি পাবে।
টিবিএস: কলকাতায় শুটিং করতে গিয়ে নতুন কী অভিজ্ঞতা হলো? এ দেশের সঙ্গে শুটিংয়ের ধরনে কতটুকু পার্থক্য?
টিবিএস: অনেক পার্থক্য আছে। এখানে (কলকাতায়) মেকআপ আর্টিস্ট থেকে শুরু করে ডিরেক্টর, ডিওপি সবাই জানেন কার কী কাজ, কখন সেটা করতে হবে। সবার স্ক্রিপ্টটা মুখস্থ। সবাই সবার কন্টিউনিটি মনে রাখেন। এত অল্প সময়ে একটা সিনেমার শুটিং শেষ হবে, বুঝতেই পারিনি। আমার কল-টাইম ছিল সকাল সাড়ে ছয়টা থেকে সাতটা। আমি সাতটার আগেই পৌঁছে যেতাম। তারপর ক্যামেরা চালু হতো। আমি রেডি হয়ে শুটিং শুরু করতাম। নয়টার মধ্যে শুটিং প্যাকআপ। বলতে পারেন, খুবই গোছানো কাজ হয় এখানে।
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/infograph/public/images/2021/01/05/rafiath_rashid_mithila_2.jpg)
টিবিএস: মায়া চরিত্রটা করতে গিয়ে কোন দুটি বিষয় আপনাকে আকৃষ্ট করেছে?
মিথিলা: শুটিংয়ের আগের দিনও খুব টেনশনে ছিলাম। আমার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ কেমন হবে, কীভাবে কী করব, লুকটা কেমন...? পরদিন শুটিংয়ে গিয়েও নার্ভাস ছিলাম। কিন্তু শট দেওয়ার পর ডিরেক্টররা যখন হাততালি দিলেন, তখন খুব ভালো লেগেছে। আরেকটা জিনিস ভালো লেগেছে, হেয়ার স্টাইলিশ, মেকআপ আর্টিস্ট থেকে শুরু করে ইউনিটের সবাই প্রথম এক-দুদিন আমাকে মিথিলা দি ডেকেছেন। তারপর থেকে মিথিলা আপা, মিথিলা আপু ডেকেছেন। এমনকি তারা সবাই 'বাঙ্গাল' ভাষায়, মানে আমরা যেভাবে কথা বলি, সেভাবে আমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছেন। ওরা আসলে মনে করতে দেননি, এটা আমার প্রথম কাজ।
টিবিএস: কলকাতায় প্রথম সিনেমায় অভিনয় নিয়ে আপনার স্বামী, বিখ্যাত পরিচালক সৃজিত মুখার্জির মন্তব্য কী?
মিথিলা: ও তো তেমন কিছু জানেই না। ওর নিজের শুটিং ছিল। তারপর মুম্বাইয়ে চলে গেল। আমি নিজেও কিছু শেয়ার করি নাই। কারণ, ও নিজেও তো নির্মাতা। তাই আমি চাইনি ও সবকিছু জানুক, যেটার দ্বার আমি প্রভাবিত হই। মজার ঘটনা হলো, পরিচালক প্রথমে কলকাতার আমার এক বন্ধুর কাছ থেকে নম্বর নেন। কিন্তু আমাকে ফোন করেননি। ফোন করেন সৃজিতকে। ফোন করে বলেন, 'আমি কি মিথিলাকে একটু কন্টাক্ট করতে পারি?' এটাই হলো ঘটনা। শুধু তাই না, আমার কী চরিত্র, সেটা সৃজিত শুটিংয়ের আগের দিনও জানত না। তারপর তো ও শুটিং করতে মুম্বাই চলে যায়। আমি সেট থেকে ভিডিওকল করে ওকে আমার লুকটা দেখিয়েছিলাম শুধু।
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/infograph/public/images/2020/02/10/mithila_srijit_1_0.jpg)
টিবিএস: সৃজিত মুখার্জির সিনেমায় অফার পেয়েছেন?
মিথিলা: সবাই আমাকে এই প্রশ্নটা করে। কিন্তু সত্যি কথা হলো, এখনো পাইনি। সামনে পাব কি না, তাও জানি না।