একই সঙ্গে অস্কার ও নোবেল পুরস্কার জিতেছেন বিশ্বের মাত্র দুজন ব্যক্তি!
অস্কারের একশো বছরেরও দীর্ঘ ইতিহাসে অসংখ্য শিল্পী-অভিনেতা-পরিচালককে সেরা হিসেবে পুরস্কৃত করা হয়েছে। মেরিল স্ট্রিপ বা ডেনজেল ওয়াশিংটনের মতো একাধিকবার মনোনয়ন পাওয়া অভিনেতার সংখ্যাও কম নয়। অস্কার এমনই এক আরাধ্য বস্তু যে ক্যারিয়ারে একবার এই পদক স্পর্শ করার জন্য মুখিয়ে থাকেন শিল্পীরা।
সঙ্গীতের ক্ষেত্রেও বিখ্যাত নামের অভাব নেই, অনেকের নাম হয়তো আপনি জানেনও না; এই যেমন- অ্যাডেলে, স্যাম স্মিথ এবং বিলি আইলিশের মতো গায়িকারাও জেমস বন্ড ফ্র্যাঞ্চাইজিতে তাদের অবদানের জন্য অস্কার পেয়েছেন এবং এলটন জন, স্টিভি ওয়ান্ডার, ব্রুস স্প্রিংস্টিন ও বব ডিলানের মতো ক্লাসিক, প্রভাবশালী সঙ্গীতশিল্পীদের সাথে একই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন। তবে একটি কথা না বললেই নয় যে, সঙ্গীতের প্রতিটি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার মাধ্যমে বব ডিলান চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির মধ্যেও পৌঁছে গেছেন।
'ওয়ান্ডার বয়েজ' সিনেমার 'থিংস হ্যাভ চেঞ্জড' শিরোনামের গানটির জন্য ২০০০ সালে আকাডেমি অ্যাওয়ার্ড লাভ করেছিলেন বব ডিলান এবং একই সাথে অ্যাওয়ার্ড শো-এর ইতিহাসে অদ্বিতীয় একটি স্থান লাভের সুযোগ তৈরি করেছিলেন।
২০১৬ সালে একই সাথে অস্কার এবং নোবেল পদক জয় করা, বিশ্বের মাত্র দুজন মানুষের একজন হন বব ডিলান! আমেরিকান সংস্কৃতির ইতিহাসে একজন কিংবদন্তি হিসেবে নিজের নাম অমলিন করে রাখেন এই শিল্পী। অস্কার জেতার ১৬ বছর পর বিশ্বের প্রথম গীতিকার হিসেবে সাহিত্য শাখায় নোবেল পদক দেওয়া হয় বব ডিলানকে।
এছাড়া, সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে বব ডিলানের পাওয়া হল অব ফেম, প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম এবং লিজিয়ন ডি'অনারের মতো পদকগুলোর শোভা বর্ধন করেছে তার একাডেমি অ্যাওয়ার্ড। বাড়তি হিসেবে 'ব্লোয়িং ইন দ্য ওয়াইন্ড' গায়কের ঝুলিতে আছে একটি গোল্ডেন গ্লোব এবং দশটি গ্র্যামি পদক! এর মধ্যে ১৯৯৮ সালে নিজের 'টাইম আউট অব মাইন্ড' অ্যালবামের জন্য অ্যালবাম অব দ্য ইয়ার, বেস্ট কন্টেম্পোরারি ফোক অ্যালবাম এবং বেস্ট রক ভোকাল পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন ডিলান।
একই সঙ্গে অস্কার ও নোবেলজয়ী আরেকজন শিল্পী হলেন আইরিশ নাট্যকার জর্জ বার্নার্ড শ। 'সেইন্ট জোয়ান' নাটকের জন্য ১৯২৫ সালে নোবেল পদক লাভ করেন বার্নার্ড শ।
নোবেল পুরস্কার বিজয়ী হিসেবে বার্নার্ড শ'র নাম ঘোষণা করে বলা হয়, 'তার লেখায় আদর্শ ও মানবতা উভয়ই ফুটে উঠেছে এবং সেখানে কাব্যিক সৌন্দর্য্যের সাথে হাস্যরসের এক অপূর্ব সংমিশ্রণ ঘটেছে।
কিন্তু নোবেল পদক গ্রহণ করলেও এর আর্থিক পুরস্কার প্রত্যাখান করেন বার্নার্ড শ। এ বিষয়ে তিনি বলেন, "আমার চাহিদা পূরণের জন্য যতখানি টাকা দরকার, আমার পাঠক এবং দর্শকদের কাছ থেকে আমি তার চাইতেও বেশি পাই।"
এ ঘটনার ১৩ বছর পর বার্নার্ড শ তার নিজের লেখা নাটক 'পিগম্যালিয়ন'-এর চলচ্চিত্র চিত্রনাট্য তৈরিতে সহ-লেখকের ভূমিকার জন্য 'বেস্ট রাইটিং' শাখায় অস্কার লাভ করেন। অ্যান্থনি অ্যাস্কুইথ এবং লেসলি হাওয়ার্ডের পরিচালনায় নির্মিত এই সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন লেসলি হাওয়ার্ড, ওয়েন্ডি হিলার এবং মারি লোর। একজন ধ্বনিবিজ্ঞান ও বাগরীতি বিশেষজ্ঞ, যিনি বাজি ধরেন যে পূর্ব লন্ডনের একজন মেয়েকে তিনি সঠিক ইংরেজি বলতে শেখাবেন, তার গল্প নিয়ে নির্মিত এই চলচ্চিত্র।
সূত্র: ফার আউট ম্যাগাজিন