সেনাবাহিনীতে যোগ দিচ্ছেন কে-পপ ব্যান্ড বিটিএস এর সদস্যরা!
জনপ্রিয়তায় সমসাময়িক বা ইতোপূর্বেরও অনেক বিখ্যাত ব্যান্ড দলকে টেক্কা দিলেও, দেশের আইনের উর্ধ্বে যাওয়ার সুযোগ নেই কে-পপ ব্যান্ড বিটিএস-এর। তাই দেশের সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করতে দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে যাচ্ছেন বিটিএসের সদস্যরা। সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, সোমবার বিটিএস তারকাদের এজেন্টরাই তাদের সেনাবাহিনীতে যোগদানের খবর নিশ্চিত করেছেন।
বলাই বাহুল্য, এই খবরে বিটিএস ভক্ত যারা কিনা 'বিটিএস আর্মি' নামে পরিচিত, তাদের মাথায় বাজ পড়ার মতো অবস্থা! দক্ষিণ কোরিয়ার আইন অনুযায়ী, দেশের ১৮-২৮ বছর বয়সী, শারীরিকভাবে ফিট সকল পুরুষদের অবশ্যই দুই বছর সেনাবাহিনীতে দায়িত্ব পালন করতে হবে। তবে বিটিএসের ক্ষেত্রে নিয়মের কিছুটা ব্যতিক্রম ঘটেছে, গতবছর তাদের জন্য বয়সসীমা ৩০ বছর পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিটিএস সদস্যদের মধ্যে সবচেয়ে বয়স্ক গায়ক জিন এর বয়স এখন ২৯ বছর, তাই খুব শীঘ্রই সাতজনই একসঙ্গে যোগ দিবেন সেনাবাহিনীতে। বিটিএসের ব্যবস্থাপনা টিম জানিয়েছে, আগামী মাস থেকেই প্রস্তুতি শুরু করবেন জিন। দলের সাত সদস্যের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠজনের বয়স ২৪ বছর; তিনিও বাকিদের সাথেই যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
প্রতিবেশী দেশ উত্তর কোরিয়ার সাথে এখনও সংঘাতে জড়িয়ে থাকার কারণে দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের মিলিটারি সার্ভিসে যোগদান করতেই হয়।
২০২০ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার সংসদে একটি বিল পাশের মাধ্যমে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় কে-পপ তারকাদের ৩০ বছর বয়স অবধি সেনাবাহিনীতে যোগদান মুলতবি রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
এদিকে, কয়েক মাস আগেই বিটিএস গানের জগত থেকে সাময়িক বিরতি নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। দলের কয়েকজন সদস্য ব্যক্তিগত প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছেন জানিয়ে তারা এ ঘোষণা দিয়েছিল। ভক্তরাও অপেক্ষায় ছিলেন, বিরতি কাটিয়ে আবার ফিরবে বিটিএস। কিন্তু আপাতত তা অসম্ভব বলেই মনে করা হচ্ছে।
গত দুই বছর যাবত বিশ্বের সবচেয়ে বেস্ট-সেলিং শিল্পীগোষ্ঠীর তকমা নিজেদের দখলে নিয়ে রেখেছে কে-পপ গ্রুপ বিটিএস। শুধু গানই নয়, গানের তালের সঙ্গে তাদের নাচগুলোও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তাছাড়া, তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে পরামর্শ দেওয়ার জন্যও খ্যাতি কুড়িয়েছে এই দলটি।
দক্ষিণ কোরিয়ার অসংখ্য নাগরিক বিটিএস সদস্যদের জাতীয় সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করেন। দেশটির কয়েকজন আইনপ্রণেতা পরামর্শ দিয়েছেন, বিটিএস যেন পারফর্ম করা বজায় রাখতে পারে, সেজন্য তাদেরকে সেনাবাহিনীতে যোগদানের নিয়ম থেকে রেহাই দেওয়া উচিত। এর আগে অলিম্পিক মেডেলিস্ট, ক্লাসিক্যাল সঙ্গীতশিল্পী ও নৃত্যশিল্পীসহ একাধিক হাই-প্রোফাইল ক্রীড়া তারকাকে এই নিয়ম থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে।
তবে বিটিএসের ম্যানেজারদের পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বিটিএস সদস্যরা খুশিমনেই এ দায়িত্ব পালন করতে রাজি হয়েছেন।
তবে এমন বিবৃতির পর ধারণা করা হচ্ছে, অন্তত দুই বছরের জন্য আর একসাথে কাজ করবে না বিটিএস।
বিটিএসের ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান তাদের বিবৃতিতে জানায়, "কোম্পানি এবং বিটিএস সদস্যরা, দুই পক্ষই আশা করছে যে ২০২৫ সালের দিকে আবারও একসাথে পারফর্ম করতে পারবে বিটিএস।"
তবে এবছরের আগস্টে বিটিএসের সেনাবাহিনীতে যোগদান প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লি জং বলেছিলেন, সেনাবাহিনীতে থাকাকালীনও বিটিএস পারফর্ম করে যেতে পারবে; তাদেরকে একসাথে অনুশীলন ও পারফর্মের সুযোগ দেওয়া হবে।"