লেডি গাগার সম্পদের পরিমাণ কত? ইউটিউব চ্যানেল থেকে কত টাকা আয় করেন?
২০০৮ সালে নিজের প্রথম অ্যালবামের হিট গান 'জাস্ট ডান্স' মুক্তির পর থেকেই বিশ্বের অন্যতম সেরা পপ তারকা হয়ে উঠেছেন লেডি গাগা। বিশ্বজুড়ে রয়েছে তার কোটি কোটি ভক্ত। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে পোকার ফেস, ব্যাড রোমান্স, অ্যাপ্লজ, বর্ন দিস ওয়ে'র মতো একাধিক তুমুল জনপ্রিয় গান শ্রোতাদের উপহার দিয়েছেন এই শিল্পী।
শুধু গানেই নয়, ফ্যাশন জগতেও লেডি গাগা একটি উল্লেখযোগ্য নাম। নিত্যনতুন পোশাক, আনুষঙ্গিক ও সাজের এক্সপেরিমেন্টের মাধ্যমে সবসময়ই আলোচনায় থাকেন তিনি। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকের অনেক ছবিতেই তাকে দেখা যাবে ক্লাসিক হেয়ার বো'তে। আবার ২০১০ সালে ভিএমএতে তার বিখ্যাত 'মিট ড্রেস' ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। দুটি জিনিসই 'সিগনেচার' গাগা লুক তৈরির জন্য বিখ্যাত। আর নিজের মিউজিক ভিডিওগুলোতেও বাহারি সব সাজপোশাকে হাজির হতে পছন্দ করেন গাগা।
লেডি গাগার গান ও মিউজিক ভিডিওর জনপ্রিয়তার কথা তো সবারই জানা। কিন্তু এসব মিউজিক ভিডিও থেকে কী পরিমাণ টাকা আয় করেন গাগা, তা কি জানেন?
সঙ্গীত জগতে সফল ক্যারিয়ার বলতে যা বোঝায়, লেডি গাগা তারই উজ্জ্বল উদাহরণ। গাগার তৃতীয় স্টুডিও অ্যালবাম 'বর্ন দিস ওয়ে' বিশ্বের লাখ লাখ শ্রোতার হৃদয় জয় করে নিয়েছিল। তার এই গান শ্রোতাদের নিজ সত্ত্বাকে আপন করে নিতে সাহায্য করেছে।
২০০৮ সালে প্রথম খ্যাতি পাওয়ার পর থেকে সর্বমোট ছয়টি স্টুডিও অ্যালবাম বের করেছেন লেডি গাগা। সেই সাথে টনি বেনেট ও ব্র্যাডলি কুপারের মতো তারকাদের সঙ্গে মিলে যৌথ অ্যালবামও প্রকাশ করেছেন। সবকটি অ্যালবামই ব্যবসাসফল হয়েছে। এই তারকার প্রথম অ্যালবাম 'দ্য ফেম' এর লাখ লাখ কপি বিক্রি হয়েছে বিশ্বজুড়ে।
২০০৯ সালে গাগার অ্যালবাম 'দ্য ফেম মনস্টার' মুক্তি পায় এবং এটিও বেশ ব্যবসাসফল ছিল। বিশেষ করে 'ব্যাড রোমান্স' গানটির কথা না বললেই নয়। সারা বিশ্বে ১২ মিলিয়ন কপি বিক্রি হওয়ার ফলে এটি সর্বকালের সেরা বেস্ট সেলিং সিঙ্গেলসের একটিতে পরিণত হয়।
সঙ্গীত জগতে প্রায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী লেডি গাগার সাম্প্রতিক ট্যুর 'দ্য ক্রোমাটিকা বল' এর প্রতিটি ভেন্যুর সব টিকিট বিক্রি হয়ে গিয়েছে। বক্স অফিসে এটির আয় ১১২ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার! লেডি গাগার জনপ্রিয়তা ও সফলতা, দুটোই যে আকাশচুম্বী তা এখান থেকেই প্রমাণিত।
গানের পাশাপাশি অভিনয় জগতেও নিজের আভা ছড়িয়েছেন এই তারকা। 'হাউজ অব গুচ্চি', 'আ স্টার ইজ বর্ন' এবং টিভি সিরিজ 'আমেরিকান হরর স্টোরি'তে অভিনয় করে খ্যাতি পেয়েছেন তিনি। শোনা যাচ্ছে, ২০২৪ সালে মুক্তির অপেক্ষায় থাকা 'জোকার: ফোলি আ দ্যু' চলচ্চিত্রেও দেখা যাবে এই সঙ্গীতশিল্পীকে।
৩২০ মিলিয়ন ডলার সম্পদের মালিক লেডি গাগা
সঙ্গীত, অভিনয়, ফ্যাশন, কনসার্টসহ নানা ক্ষেত্রে কাজ করার সুবাদে মোটা অংকের টাকা আয় করে চলেছেন লেডি গাগা। মিউজিক ক্যারিয়ারের পাশাপাশি নিজস্ব পারফিউম বাজারে এনেছেন তিনি। সঙ্গীত ও বিনোদন জগতে এক দশকের ক্যারিয়ারে তাহলে মোট কত টাকা আয় করেছেন লেডি গাগা?
এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত লেডি গাগার মোট সম্পদের পরিমাণ ৩২০ মিলিয়ন ডলার।
অবশ্যই এর বেশিরভাগ টাকাই এসেছে তার অত্যন্ত সফল মিউজিক ক্যারিয়ার থেকে। শুধুমাত্র ডিজিটাল সিঙ্গেলস থেকেই ৮০.৫ মিলিয়ন ডলার আয় করেছেন লেডি গাগা; সেই সাথে তার অ্যালবাম বিক্রির আয় তো আছেই।
বিশ্বের নানা দেশে মিউজিক ট্যুর-কনসার্ট করে বেড়িয়েছেন লেডি গাগা। এসব ট্যুর থেকেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ টাকা আয় করেছেন তিনি। এই যেমন- ২০০৯-২০১১ সালের মধ্যে তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য একটি ট্যুর, 'দ্য মনস্টারবল ট্যুর' থেকে তিনি আয় করেছেন ২২৭.৪ মিলিয়ন ডলার!
আবার 'আ স্টার ইজ বর্ন', 'আমেরিকান হরর স্টোরি'তে অভিনয় করেও নিজের সম্পদের ভাড়ার ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে তুলেছেন এই তারকা। 'আ স্টার ইজ বর্ন' সিনেমায় অভিনয়ের জন্য ৫-১০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছেন এই গায়িকা-অভিনেত্রী।
বেশিরভাগ খ্যাতনামা তারকাদের মতো লেডি গাগারও রয়েছে নিজস্ব মেকআপ ব্র্যান্ড 'হাউস ল্যাবস'। এটিও তার আয়ের একটি বড় উৎস, বিশেষ করে ২০২২ সালে এটি রিব্র্যান্ডিং করার পর থেকে। ২০২২ সালে নিজের ব্র্যান্ডের খোলনলচে পাল্টে দিয়েছেন লেডি গাগা। ব্র্যান্ডের সাজসজ্জা ও পণ্যের ধরনে নিয়ে এসেছেন পরিবর্তন, যা বেশ ইতিবাচক রিভিউ পেয়েছে; এমনকি তার একটি পণ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরালও হয়েছিল।
ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয়
নিজের ইউটিউব চ্যানেল থেকে লেডি গাগা ঠিক কত টাকা আয় করেন তার একেবারে সঠিক হিসাব পাওয়া কঠিন। এ বিষয়ে কোনো অফিশিয়াল রিপোর্টও নেই, আবার সিপিসি রেটও প্রতিনিয়তই ওঠানামা করতে থাকে। এর মানে সমান সংখ্যক ভিউ নিয়েও এক সপ্তাহে দুজন ইউটিউবারের আয়ে পার্থক্য থাকতে পারে।
সোশ্যাল ব্লেড এক হিসাব অনুযায়ী, লেডি গাগার ইউটিউব চ্যানেলের বার্ষিক আয় ৪৩৭,০০০ ডলার থেকে ৭,০০০,০০০ ডলারের মধ্যে। তবে গায়িকার অনেক মিউজিক ভিডিওই তুমুল জনপ্রিয় হওয়ার আয়ের অংকটা দেখে অবাক হবেন না অনেকেই।
সূত্র: এমএসএন/দ্য থিংস