রাস্তায় নামতে হলে নামব: মোস্তফা সরয়ার ফারুকী
ঢাকার গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী নির্মাণ করেছিলেন শনিবার বিকেল নামের সিনেমা। কিন্তু চার বছর ধরে সেটি সেন্সর বোর্ডে আটকে আছে। একই প্রেক্ষাপট নিয়ে ফারাজ নামের আরেকটি সিনেমা তৈরি হয়েছে, যা মুক্তি পাবে আগামী মাসে। প্রসঙ্গক্রমে বিষয়টি নিয়ে এখন আলোচনা তৈরি হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী তার অনূভূতি প্রকাশ করেছেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের কাছে।
'এর আগে আমাদেরকে আড়েঠারে বলা হয়েছে, ওনারা চান না বহির্বিশ্বের মানুষের কাছে শনিবার বিকেল ছবিটা যাওয়ার মাধ্যমে ওই দুঃসহ স্মৃতি আবার ফিরে আসুক। আই মিন, সিরিয়াসলি?
'ইউটিউবে এই বিষয়ে হাজার হাজার ভিডিও আছে, আর ওনারা ভাবছেন একটা সিনেমা আটকে এই ঘটনা ধামাচাপা দেবেন! আর শনিবার বিকেল তো বিদেশে দেখানোই হচ্ছে। কোথাও ভাবমূর্তি খসে পড়ার ঘটনা তো শুনিনি। হলিউডের রিপোর্টাররা তো তাদের রিভিউতে আপনাদের নিয়ে হাসাহাসি করছে।
'তারা বলছে, এই ছবি দেখে তারা বোঝেননি ভাবমূর্তি কীভাবে খসবে! তাদের মনে হয়েছে ভাবমূর্তির যদি কিছু হয় এই ছবির ফলে, সেটা হতে পারে ভাবমূর্তি বৃদ্ধি। দুঃখজনক কথা হচ্ছে, সিনেমাটা বাংলাদেশে ব্যান করা হয়েছে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা এবং ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা তৈরি করার আশঙ্কায়।
'কিন্তু সিনেমাটা দেখে যেটা বোঝা যায় সেটা হলো এই ছবি যদি কিছু করতে পারে সেটা হলো বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বাড়াতে পারে। এমনকি ধর্মীয় সহিষ্ণুতার ব্যাপারেও সিনেমাটা জোরালো আবেদন তৈরি করে। কিন্তু যদি ভেবে থাকেন, এই দুঃখ বুকে নিয়ে একটা-দুটো স্ট্যাটাস দিয়ে আমরা শান্ত হয়ে যাব, তাহলে ভুল করছেন। আমরা এই বাংলাদেশের বুকেই বেড়ে উঠেছি, বাংলাদেশের দর্শকদের সাথে।
'ফারাজ মুক্তি পাবে, আর আমরা নিজের দেশেই তৃতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়ে চুপ করে কেঁদে যাব—এটা হবে না। এই অপমান শুধু আমাদের ফিল্মমেকিং কমিউনিটির না, আমি মনে করি এটা বাংলাদেশের সব মানুষের আত্মসম্মানবোধে আঘাত হানার শামিল।
'আমাদের দর্শক ভাইবোনদের বলতে চাই—ফারাজের এক ঘণ্টা আগে হলেও শনিবার বিকেল যেন আপনাদের সামনে হাজির হয়, এটা নিশ্চিত করতে আমরা সম্ভব সব কিছু করব। রাস্তায় নামতে হলে নামব।'