দরজায় নক করা, শ্যুটিংয়ের জন্য ডাকা নিষেধ! ডেপের সাথে কাজের অভিজ্ঞতা জানালেন ফরাসি নির্মাতা
ফরাসি অভিনেত্রী ও চলচ্চিত্র নির্মাতা মাইওয়েন এর পরিচালনায় 'জ্যাঁ দো বাঘি' ছবিতে কাজ করার মাধ্যমে আলোচনায় রয়েছেন হলিউড অভিনেতা জনি ডেপ। ইতোমধ্যেই ছবিটি আসন্ন কান চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনীর রাতে প্রদর্শনের জন্য নির্বাচিত হয়েছে। ব্যক্তিগত জীবনের নানা ঝড়ঝাপ্টা কাটিয়ে এখন পুরোপুরি ফর্মে আছেন 'পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান' তারকা। আর জনি ডেপ মানেই যে আলাদা স্টাইল, তা আরও একবার প্রমাণিত হলো চলচ্চিত্র নির্মাতা মাইওয়েন এর কথায়। সম্প্রতি অভিনেতার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন তিনি।
ফরাসি ভাষার এই চলচ্চিত্রে ফ্রান্সের রাজা পঞ্চদশ লুই এর চরিত্রে অভিনয় করেছেন ডেপ। ইতিহাসনির্ভর এই চলচ্চিত্রের কাজ শুরু হয়েছে গত বছরের জুলাইয়ে।
প্রাক্তন স্ত্রী অ্যাম্বার হার্ডের সঙ্গে বহুল আলোচিত মানহানি মামলায় জয়ের পর সুদিন ফিরেছে ডেপের। একে একে বিভিন্ন প্রজেক্ট তার হাতে এসেছে। তবে ফরাসি ভাষার এই চলচ্চিত্রে অভিনয় করাটা ডেপের জন্য নতুন এক অভিজ্ঞতা ছিল, তেমনই 'ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যারো'র মেজাজ সম্পর্কেও ভালো ধারণা পেয়েছেন পরিচালক নিজেও!
ওয়ার্ল্ড অব রিল এর একটি প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিনোদন সংবাদদাতা কইমই ডটকম জানিয়েছে, জনি ডেপের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে কিছু জটিলতায় পড়তে হয়েছিল মাইওয়েনকে। কারণ হলিউড ও ফ্রান্সের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের ধরন বেশ আলাদা।
মাইওয়েন জানিয়েছেন, তাকে বলা হয়েছিল যে তারা শ্যুটিং সেটে ডেপের জন্য অপেক্ষা করছেন- একথা যেন কখনো ডেপকে জানানো না হয়। মাইওয়েন বলেন, "ডেপের ড্রেসিং রুমের দরজায় নক করার ব্যাপারেও নিষেধাজ্ঞা ছিল। একদিন আমি নক করে ফেলেছিলাম, পরে সে আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছিল যে আমি একটা অনধিকার প্রবেশ করে ফেলেছি। সেই সাথে আমাকে এও বুঝিয়েছিল যে আমার ড্রেসিং রুমের দরজায় সে গিয়ে নক করলে আমার কেমন লাগতো!
আমি উত্তর দিয়েছিলাম- ফ্রান্সে তো সবাই সারাক্ষণই এরকম কিছু না কিছু করছে। কারণ এখানে শ্যুটিং সেটে এভাবেই কাজ করা হয়!"
তিনি ডেপের আচরণকে 'সাংস্কৃতিক দ্বন্দ্ব' এর একটি অংশ বলে অভিহিত করেন। মাইওয়েন আরও জানান যে যুক্তরাষ্ট্রে অভিনেতাদের আসলে পরিচালনা করা হয় না। বরং অভিনেতা পরিচালককে বুঝান যে তিনি কিভাবে দৃশ্যটিতে অভিনয় করতে যাচ্ছেন, আর পরিচালক সেই ফ্লো অনুসরণ করেন। "কিন্তু ফ্রান্সে পরিচালকই বস। তাই প্রতিটা শটের সময় আমি অবশ্যই ডেপের কথা শুনেছি, কিন্তু আমি কিভাবে দৃশ্যটা চাচ্ছি সেটাও তাকে বুঝিয়েছি, যাতে সম্পাদনার সময় আমাদের হাতে অপশন থাকে।"
মাইওয়েন জানান, ডেপের মুখে ফরাসি ভাষা দুর্দান্ত ছিল না, তবে তিনি ডায়লগের চেয়ে ইমোশনের প্রকাশের জন্য তার দক্ষতার উপর বেশি নির্ভর করেছেন।
"আমার কাছে মনে হয় যারা একটু কম কথা আছে এমন চলচ্চিত্র পছন্দ করেন, তাদের জন্য এটা খুব দারুণ একটা ছবি হবে, সেখানে দেখা যাবে কিভাবে ডেপ তার দৃষ্টি, মুখভঙ্গির মাধ্যমে তার চিন্তাভাবনা প্রকাশ করছে, অনেকটা নির্বাক অভিনেতার মতো।"