জাতীয় পুরস্কার থেকে বঙ্গ বিভূষণ, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের যত অর্জন
লতা মঙ্গেশকরের পরে এবার গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে সঙ্গীত জগতে ঘটলো আরেক নক্ষত্রের পতন। ৯০ বছরে এসে পথচলা শেষ হল তার।
গত কয়েক দিন ধরেই অসুস্থ অবস্থায় ভর্তি ছিলেন হাসপাতালে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন কিংবদন্তি শিল্পী।
খুব ছোটবেলা থেকে শুরু হয় তার গানের যাত্রা। পণ্ডিত সন্তোষকুমার বসু, এটি কানন ও চিন্ময় লাহিড়ির থেকে তিনি তালিম পেয়েছেন।
তবে, গুরু হিসাবে তিনি বারবার বলতেন উস্তাদ বড়ে গুলাম আলি খাঁ সাহেবের কথা।। সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে একের পর এক হিট গান উপহার দিয়েছেন তিনি।
১৯৩১ সালের ৪ অক্টোবর কলকাতার ঢাকুরিয়ায় জন্ম হয় তার। ছয় ভাইবোনের মধ্যে কনিষ্ঠতম ছিলেন তিনি। বাবা নরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ছিলেন রেলের অফিসার, মা হেমপ্রভা দেবী গৃহবধূ।
১৯৪৩ সালে মাত্র ১২ বছর বয়সেই কলকাতা আকাশবাণীর 'গল্পদাদুর আসর'-এ গীতিকার অজয় ভট্টাচার্যের লেখা একটি গান গেয়েছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়।
এরপর ১৯৪৫ সালে প্রথম বেসিক রেকর্ড করেন তিনি। এইচএমভি থেকে প্রকাশিত সেই গানের কথা ও সুর গিরিন চক্রবর্তীর।
১৯৪৭ সালে 'অঞ্জনগড়' ছবিতে গান গাওয়ার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো বাংলা ছবিতে প্লেব্যাক গায়িকা হিসেবে নাম লেখান তিনি। এর ঠিক তিন বছর পরই হিন্দি ছবির প্লেব্যাকের জন্য মুম্বাই যাত্রা করেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়।
১৯৫১ সালে হিন্দি ছবি 'তারানা' তে প্লেব্যাক গায়িকা হিসেবে গান রেকর্ড করেন তিনি।
এরপর ১৯৬০-৭০ এর দশকে বাংলা সিনেমার অন্যতম জনপ্রিয় প্লেব্যাক গায়িকা হয়ে ওঠেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়।
১৯৬৫ সালে সন্ধ্যা দীপের 'শিখা' ছবিতে গান গাওয়ার সুবাদে বেঙ্গল ফিল্ম জার্নালিস্ট অ্যাওয়ার্ড-এ 'সেরা গায়িকা'র পুরস্কার পান তিনি।
এরপর ১৯৭১ সালে 'জয় জয়ন্তী' ছবির 'আমাদের ছুটি ছুটি' গানের জন্য পান প্রথম জাতীয় পুরস্কার। পরের বছর এই ছবির জন্যে দ্বিতীয়বারের মতো সেরা গায়িকার পুরষ্কার পান তিনি।
২০১১ সালে ভারতীয় বাংলার সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার বঙ্গ বিভূষণে ভূষিত হন তিনি।
গতকাল তার মৃত্যুর কিছুদিন আগেই তাকে পদ্মশ্রী পুরস্কার দেওয়ার জন্য যোগাযোগ করা হলে তা নিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।
'মধু মালতি', 'আমি তার ছলনায়' এর মতো কালজয়ী কিছু গান গেয়ে সঙ্গীতজগতে অমর হয়ে থাকবেন গুণী এই শিল্পী।
- সূত্র: আনন্দবাজার