খাবার নিয়ে তীব্র অনীহা শাহরুখের, শ্যুটিং সেটে খান না কিছুই
খাবার নিয়ে বড্ড অনীহা শাহরুখ খানের- একবার এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন 'ডিয়ার জিন্দেগি' ছবিতে 'কিং খান' -এর সহশিল্পী বলিউড অভিনেত্রী আলিয়া ভাট। আরও জানিয়েছিলেন ওই ছবির শ্যুটিং চলাকালীন শাহরুখকে কোনদিন খেতে দেখেননি তিনি। এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর প্রিয় তারকার স্বাস্থ্যের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে ওঠেন অনেকেই।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আলিয়া বলেছিলেন, "শাহরুখের কোনও ব্যাপারই আমার অপছন্দ নয়। কিন্তু হ্যাঁ, ওর একটি ব্যাপার রয়েছে যা দেখে খুব খারাপ লাগে। শাহরুখ বলতে গেলে কিচ্ছু খায় না। একটি ঘটনা বললে বুঝবেন।
ছবির সেটে যেন খুব বেশি শোরগোল না হয়, তেমনই নির্দেশ ছিল। কঠিন সব শট, লম্বা লম্বা সংলাপ ইত্যাদি থাকার কারণে ছিল এই সতর্কতা। সোজা কোথায়, যাতে অভিনেতা কিংবা পরিচালকের কাজে কোনও ব্যাঘাত না ঘটে। একেকবার আমরা একটি আস্ত সিকোয়েন্স এক শটে নিয়ে নিতাম। একবার শাহরুখের খুব কাছে দাঁড়িয়ে শট দিচ্ছি, এমন সময় ওর পেটের মধ্য থেকে গুড়গুড় শব্দ ভেসে এল। স্পষ্ট শুনতে পেলাম। বুঝলাম সারাদিন কোন খাবারই ওর পেটে যায়নি। সঙ্গে সঙ্গে বিস্কুট খাইয়ে দিলাম। এত খারাপ লাগত যে কী বলব! অনেকবার ওকে বলেছি যেন খাওয়াদাওয়াটা ঠিকমতো করে সে।"
এর কারণও পরে শাহরুখ নিজেই ব্যাখ্যা করেছেন এক অনুষ্ঠানে। 'বাদশাহ-র কথায়, "২৫ বছর বয়সে আমার মা মারা গিয়েছিলেন। তার আগ পর্যন্ত উনি নিজের হাতে আমাকে খাইয়ে দিতেন। ডাল, ভাত, পেঁয়াজ, আচার, পাঁপড় সবকিছুই। ওনার হাতেমাখা খাবারই খেতাম আমি। তাই মা চলে যাবার পর বলতে গেলে খাবারের প্রতি একটা অনীহা জন্মে গিয়েছিল আমার। আমি আমার বাড়ির খাবার এত ভালোবাসতাম যে, এরপর থেকে অন্য কোনও খাবার আমার মুখেই রুচত না।
তার মানে এই নয় যে সেসব খারাপ। খাবার মানেই ভালো, তা সে যে খাবারই হোক। কিন্তু সত্যি এটাই যে, আমার বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর তাদের হাতে তৈরি খাবার না পেয়ে আমার খাওয়া নিয়ে প্রবল অনীহা জন্মে। এখন আমার বাড়ির লোক কিংবা আমার টিম যা খাবার দেয়, শুধু তাই খাই। সে যে খাবারই দিক। কিন্তু নিজে থেকে কিছু ইচ্ছে করে না খেতে।"
জানা যায়, শাহরুখের বাবা এবং মা দুজনেই রেস্তরাঁ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। দুজনেই দুর্দান্ত রান্না করতেন। পাঠানি-পেশোয়ার রান্নায় সিদ্ধহস্ত ছিলেন শাহরুখের বাবা। অন্যদিকে, শাহরুখের মা ছিলেন হায়দরাবাদি খাবারের বিভিন্ন পদ রান্নায় ওস্তাদ।