দীর্ঘ ১১ ঘণ্টা গভীর সমুদ্রে আটকে ছিল ১৩০০ পর্যটক
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2022/12/21/saint_martin_ship_3_0.jpg)
কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে চলাচলকারী একটি পর্যটকবাহী জাহাজ ১ হাজার ৩০০ যাত্রী নিয়ে গভীর সমুদ্রে আটকে ছিল টানা ১১ ঘণ্টা। মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টায় সেন্টমার্টিন থেকে যাত্রা শুরু করে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়াস্থ বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে পৌঁছার কথা ছিল সন্ধ্যা ৫ টায়।
কিন্তু জাহাজটি গভীর সমুদ্র আটকা পড়ে দীর্ঘ সময়। জাহাজের যাত্রীদের গভীর সমুদ্রে বারো আউলিয়া নামের অপর একটি জাহাজ তুলে ঘাটে পৌঁছে দেওয়া হয় বুধবার ভোর ৪ টায়।
এই দীর্ঘ সময় যাত্রীরা কাটিয়েছে প্রচণ্ড আতঙ্কের মধ্যে। পর্যটকদের অভিযোগ, জাহাজ কর্তৃপক্ষের চরম অব্যবস্থাপনা আর অসহযোগিতার কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। জাহাজে ছিল তীব্র খাবার সংকট। শিশু এবং বয়স্কদের ভোগান্তি ছিল চরমে। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে অনেকে বসার জায়গাও পাননি।
তবে জাহাজ কর্তৃপক্ষের দাবি ভিন্ন। জাহাজটির কক্সবাজার কার্যালয়ের ইনচার্জ হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর বলেন, নির্ধারিত সময়ে জাহাজটির ঘাটে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু সাগরে জাহাজটির যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে নোঙর করতে হয়। এর মধ্যে জাহাজের যাত্রীদের ফেরার জন্য বারো আউলিয়া জাহাজটি পাঠানো হয়। ওই সময় সাগর উত্তাল থাকায় ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীদের জাহাজ পরিবর্তন সাগরে অসম্ভব হয়ে পড়ে। ফলে সাগর শান্ত হওয়ার পর জাহাজ পরিবর্তন করে ঘাটে ফিরতে বিলম্ব হয়েছে।
খাবার সংকট, অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হোসাইনুল। তিনি বলেন, জাহাজে ১ হাজার ১০০ যাত্রী ছিল। আর খাবার মজুদ ছিল অন্তত ৪ হাজার জনের।
বুধবার ভোরে ঘাটে ফেরা যাত্রীদের মধ্যে এক নারী বলেন, 'জাহাজটি পরিচালনা করা হচ্ছে অদক্ষ নাবিক দিয়ে। যেখানে জাহাজ কর্তৃপক্ষের চরম অব্যবস্থাপনা আর অসহযোগিতা ছিল। জাহাজের মাত্র ১৫ শতাংশ যাত্রীকে খাবার দেয়া হয়েছে। অন্যরা খাবার পাননি।'
তিনি বলেন, আগের দিন ভোর ৫টায় তারা ঘাটে আসেন সেন্টমার্টিন যাওয়ার জন্য আর পরদিন ভোর ৪টায় ফিরেছেন। সেন্টমার্টিন দেখার সুযোগও হলো না, মাত্র ৪৫ মিনিট দ্বীপে অবস্থান করার সুযোগ হয়েছিল।
রফিকুল নামের এক যাত্রী বলেন, সমুদ্র উত্তাল ছিল। বারবার বলার পরও কর্তৃপক্ষ লাইফ জ্যাকেট সরবরাহ করেনি। সেই সঙ্গে তিনটি আলু শিঙাড়ার দাম রাখা হয়েছে ১০০ টাকা, খিচুড়ির দাম রাখা হয়েছে ২৫০ টাকা।
রফিকুল জানান, তিনি সাড়ে ৭ হাজার টাকা দিয়ে টিকেট কিনেছেন কেবিনের, তাকে খাবারও দেয়া হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষে সংশ্লিষ্ট বিভাগে দায়িত্বশীল অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আবু সুফিয়ানের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।