বন্ধ হয়ে যাচ্ছে জনসন অ্যান্ড জনসনের ট্যালকমভিত্তিক বেবি পাউডার বিক্রি
স্বাস্থ্যঝুঁকির অভিযোগ ও অগণিত মামলার মুখোমুখি হওয়ার পর অবশেষে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে জনসন অ্যান্ড জনসনের তৈরি বেবি পাউডার। আগামী বছর থেকে ট্যালকমভিত্তিক বেবি পাউডার বিক্রি বন্ধ করে দিবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এই বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানটি। যুক্তরাষ্ট্রে অবশ্য আরও দুই বছর আগেই বন্ধ হয়েছে এই পণ্য।
জনসন অ্যান্ড জনসনের ট্যালকম পাউডারে অ্যাসবেসটস রয়েছে যা জরায়ু ক্যান্সারের কারণ হতে পারে বলে দাবি করে এযাবত বহু নারী প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন যাবত জনসন অ্যান্ড জনসন দাবি করে এসেছে যে তাদের তৈরি বেবি পাউডার ব্যবহার করা নিরাপদ।
এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, "বিশ্বব্যাপী পোর্টফোলিও মূল্যায়নের অংশ হিসেবে আমরা একটি বাণিজ্যিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে এখন থেকে আমাদের সব বেবি পাউডার হবে কর্ন-স্টার্চভিত্তিক।" ইতোমধ্যেই জনসন অ্যান্ড জনসনের কর্নস্টার্চভিত্তিক বেবি পাউডার বিশ্বের কয়েকটি দেশে বিক্রি হয়েছে বলেও জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
তবে বরাবরের মতো এবারও নিজেদের আগের দাবিতে অনড় রয়েছে জনসন অ্যান্ড জনসন। তাদের ভাষ্যে, "আমাদের কসমেটিক ট্যালকম যে নিরাপদ, এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান আগের মতোই থাকছে।"
বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি আরও বলে, "মেডিকেল বিশেষজ্ঞদের দ্বারা পরিচালিত কয়েক দশকের বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা থেকেই জানা গেছে যে জনসন অ্যান্ড জনসনের ট্যালকমভিত্তিক বেবি পাউডারে কোনো অ্যাসবেসটস নেই, এতে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি নেই এবং এটি ব্যবহার করা নিরাপদ।"
২০২০ সালে জনসন জানায়, তারা যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বাজারে তাদের ট্যালকমভিত্তিক বেবি পাউডার বিক্রি বন্ধ করে দিবে। জনসনের বেবি পাউডার নিয়ে 'ভুল তথ্য ছড়ানোর ফলে' চাহিদা কমে যাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে তখন দাবি করেছিল প্রতিষ্ঠানটি।
বেবি পাউডার তৈরিতে ব্যবহৃত ট্যালকম মাটির নিচ থেকে খনন করা হয় এবং অ্যাসবেসটসের খুব কাছাকাছি অংশে পাওয়া যায়। এই অ্যাসবেসটস মানুষের শরীরে ক্যান্সার সৃষ্টির পেছনে দায়ী।
বিগত ১৩০ বছর যাবত বিশ্বজুড়ে বিক্রি হচ্ছে জনসন অ্যান্ড জনসনের বেবি পাউডার। প্রতিষ্ঠানটির বহুল পরিচিত একটি পণ্য এটি। ন্যাপি ব্যবহারের ফলে র্যা শ দূর করা, ড্রাই শ্যাম্পু হিসেবে ব্যবহার ইত্যাদি কাজে এই প্রসাধনীটি ব্যবহৃত হয়।
২০১৮ সালে রয়টার্সের এক তদন্তে উঠে আসে যে, জনসন অ্যান্ড জনসন কয়েক দশক ধরেই জানতো যে তাদের ট্যালকমভিত্তিক পণ্যে অ্যাসবেসটস রয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি কখনোই এ অভিযোগ স্বীকার করে নেয়নি।
সূত্র: বিবিসি