ইরানে বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে নিহত ৫
পুলিশের হেফাজতে থাকা মাহসা আমিনি নামে এক নারীর মৃত্যুতে ইরানের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বিক্ষোভ থামাতে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হলে, এ পর্যন্ত গুলিতে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। মানবাধিকার সংস্থা হেনগাও অর্গানাইজেশন ফর হিউম্যান রাইটস সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে এ তথ্য জানিয়েছে।
ইরানে মানবাধিকার লঙ্ঘন পর্যবেক্ষণকারী নরওয়েজিয়ান সংস্থাটি বলছে, গত কয়েকদিন ধরে ইরানের কুর্দি অধ্যুষিত অঞ্চলে বিক্ষোভ চলাকালীন পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। সপ্তাহের শেষের দিকে অন্যান্য শহরগুলোতেও অন্তত ৭৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানায় সংস্থাটি। তবে, হতাহতের এই সংখ্যা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি সিএনএন।
ইরান সরকারের দাবি, পরিকল্পিতভাবে শহরে নাশকতা চালাচ্ছে বিক্ষোভকারীরা।
রাজধানী তেহরানের গভর্নর মোহসেন মনসুরি বিক্ষোভকারীদেরকে পুলিশের ওপর হামলা এবং সরকারি সম্পত্তি ধ্বংসের দায়ে অভিযুক্ত করেছেন। সোমবার গভীর রাতে এক টুইটার পোস্টে তিনি দাবি করেন, বিক্ষোভকারীরা তেহরানে অশান্তি সৃষ্টির জন্য সম্পূর্ণ সংগঠিত এবং প্রশিক্ষিতভাবে কাজ করেছে।
এদিকে, মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নাদা আল-নাশিফ এক বিবৃতিতে ইরানের বিক্ষোভে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংস প্রতিক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
গত সপ্তাহে দেশের হিজাব আইন ভঙ্গের অভিযোগে ইরানের নৈতিকতা বিষয়ক পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন ২২ বছর বয়সী ইরানি তরণী মাহসা আমিনি। পুলিশি হেফাজতেই তেহরানে মৃত্যু হয় তার। পরবর্তীতে তার মৃত্যুর প্রতিবাদে দেশটির বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
ইরানের কর্মকর্তারা বলছেন, গত মঙ্গলবার গ্রেপ্তার হওয়ার পর 'হৃদরোগে' আক্রান্ত হয়ে কোমায় চলে যান আমিনি। এরপর চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার তার মৃত্যু হয়।
অন্যদিকে আমিনির পরিবারের দাবি, আগে কখনোই হৃদরোগ ছিলনা তার।
ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সিসিটিভি ক্যামেরার সম্পাদিত এক ফুটেজে আমিনিকে একটি 'পুনঃশিক্ষা' কেন্দ্রে অসুস্থ হয়ে পড়তে দেখা যায়। সেখানে তাকে পোশাক-পরিচ্ছদ সম্পর্কে 'নির্দেশনা' দিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
ইরানের আইনশৃঙ্খলা প্রয়োগকারী সংস্থার অংশ হিসেবে কাজ করে সেদেশের নৈতিকতা বিষয়ক পুলিশ। জনসমক্ষে নারীদের বাধ্যতামূলক হিজাব পরাসহ ইসলামী প্রজাতন্ত্রের কঠোর সব সামাজিক বিধিনিষেধ প্রয়োগের দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে এই বাহিনী।
- সূত্র: সিএনএন