জার্মানির লেপার্ড ট্যাংক কর্নেট মিসাইলের সহজ শিকারে পরিণত হবে: রাশিয়া
গত ১ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার সামরিক সরঞ্জাম নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রসটেক দেশটির সংবাদসংস্থা তাসকে জানিয়েছে, ইউক্রেনকে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর প্রতিশ্রুত জার্মান লেপার্ড ২ ট্যাংককে সহজেই ট্যাংকবিধ্বংসী মিসাইল কর্নেট দিয়ে ধ্বংস করা যাবে।
লেপার্ড ২ একটি অত্যাধুনিক ও সুরক্ষিত ট্যাংক হলেও রসটেকের দাবি, এটি অজেয় কিছু নয়। খবর দ্য ইউরেশিয়ান টাইমস-এর।
রাশিয়ান এ প্রতিষ্ঠানটির আরও দাবি, পুরোনো মডেলের বহনযোগ্য ট্যাংকবিধ্বংসী মিসাইল ব্যবস্থা দিয়েও লেপার্ড ২ ধ্বংস করা সম্ভব।
কর্নেট মিসাইল ছাড়াও ১২৫ মিলিমিটার ম্যাংগো বর্মভেদী (আর্মার-পিয়ার্সিং) গোলা এবং আকাশ থেকে নিক্ষিপ্ত ভিকর ও আটাকা মিসাইলের কাছেও নিরাপদ নয় লেপার্ড ২ ট্যাংক।
তাস'র ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ান ট্যাংকগুলোর মতো লেপার্ড ট্যাংকে এক্সপ্লোসিভ রিঅ্যাকটিভ আর্মার নেই। এর ফলে এগুলো রাশিয়ান যুদ্ধবিমান থেকে নিক্ষেপ করা ভিকর ও আটাকা মিসাইলের কাছে অনিরাপদ।
রসটেকের মূল্যায়ন হলো, রাশিয়ান সেনাবাহিনীর কাছে টি-৯০এম প্ররিভ ট্যাংক রয়েছে যেগুলোর কিছু সক্ষমতা লেপার্ড ট্যাংকের চেয়েও উন্নম এবং এ রুশ ট্যাংকগুলো লেপার্ডকে পরাভূত করতে সক্ষম।
এর আগে গত ২৮ জানুয়ারি রাশিয়ান সামরিক বিশ্লেষক ভাসিল ড্যানডিকিন বলেছিলেন, পশ্চিমারা ট্যাংক সরবরাহ করলে তা-তে এ যুদ্ধের তীব্রতা আরও বৃদ্ধির ঝুঁকি থাকলেও এসব ট্যাংকের পক্ষে ইউক্রেনীয় বাহিনীর সক্ষমতা বাড়ানোর সম্ভাবনা কম।
২৫ জানুয়ারি জার্মান সরকার ঘোষণা দেয়, এটি ইউক্রেনকে ১৪টি লেপার্ড ২ ট্যাংক সরবরাহ করবে এবং অন্য দেশ থেকে লেপার্ড ট্যাংকের পুনরায় রপ্তানির অনুমতি দেবে।
জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াসের দেওয়া তথ্যমতে, আগামী তিন থেকে চার মাসের মধ্যে ইউক্রেনকে প্রথম ধাপে এ ট্যাংক দেওয়া হবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও জানিয়েছে, এটি কিয়েভকে ৩১টি এম১ আব্রামস ট্যাংক সরবরাহ করবে। ইউক্রেনের অনুরোধ জানানো পশ্চিমা ট্যাংকের অন্যতম একটি হচ্ছে লেপার্ড ২।
লেপার্ড ২ একটি মেইন ব্যাটল ট্যাংক। ১৯৭৯ সালে এটি প্রথমবার উন্মুক্ত করা হয়। বর্মভেদী গোলা ও ট্যাংকবিধ্বংসী গাইডেড অস্ত্রের বিরুদ্ধে এটি ভালো প্রতিরক্ষা দিতে পারে।
চার থেকে ছয়টি লেপার্ড ২এ৪ ট্যাংক ইউক্রেনকে দিতে স্পেন রাজি হয়েছে বলে সম্প্রতি দেশটির একজন সরকারি কর্মকর্তার বরাতে জানা গেছে।
এসব ছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ মাসের শুরুতে ইউক্রেনকে কয়েক ডজন ব্র্যাডলি ফাইটিং ভেহিকল দেবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।
এ সাঁজোয়া যানগুলো ট্যাংকের সমকক্ষ না হলেও এগুলোর ফলে সৈন্যরা যুদ্ধক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা পান। এছাড়া এ সামরিক যানগুলোরও পর্যাপ্ত বিধ্বংসী ক্ষমতা রয়েছে।
কর্নেট অ্যান্টি-ট্যাংক ওয়েপন সিস্টেম
এ অস্ত্রটি তৈরি করা হয়েছে ট্যাংকসহ অন্যান্য সাঁজোয়া যান ধ্বংসের জন্য। আধুনিক রিয়্যাক্টিভ আর্মার সংযুক্ত যুদ্ধযানগুলোকেও প্রতিহত করতে সক্ষম এ মিসাইল।
দিনের বেলা এ অস্ত্র ১০০ থেকে ৫,৫০০ মিটার এবং রাতে ৩,৫০০ মিটার দূরত্বে পর্যন্ত আঘাত হানতে পারে।
কর্নেট মিসাইল নিক্ষেপেণ ব্যবস্থা থেকে ১৫২ মিলিমিটার মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়। ২০০৬ সালে লেবাননে ইসরায়েলি আক্রমণের সময় হিজবুল্লাহ সফলভাবে ইসরায়েলি ট্যাংকের বিরুদ্ধে এ মিসাইল ব্যবহার করেছিল।
সাধারণত এ মিসাইল নিক্ষেপ করতে দুজন মানুৃষের দরকার হয়। তবে ক্ষেত্রবিশেষে একজনের পক্ষেই এটি পরিচালনা করা সম্ভব।