পুলিশের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে: ওজন কমান নয়তো চাকরি ছাড়ুন!
ভারতের আসামের পুলিশ কর্মকর্তাদের বাড়তি ওজন কমানোর নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। এমনকি আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ওজন কমাতে ব্যর্থ হলে কর্মকর্তাদের বাহিনী থেকে স্বেচ্ছায় অবসরে যেতে হবে বলে খবর বিবিসির।
এ সম্পর্কে আসাম পুলিশের শীর্ষস্থানীয় এক কর্মকর্তা জানান, চলতি বছরের আগস্ট মাসের মাঝামাঝি থেকে আসামের সকল পুলিশ কর্মকর্তার বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই) রেকর্ড করা হবে। এক্ষেত্রে যেসব কর্মকর্তা বিএমআই-এর মান অনুযায়ী 'স্থূলকায়' শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত হবেন, তাদের ওজন কমানোর জন্য নভেম্বর পর্যন্ত তিন মাসের সময় দেওয়া হবে। এই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ওজন কমাতে ব্যর্থ হলে বাহিনী থেকে তাদেরকে স্বেচ্ছায় অবসরে যেতে হবে।
তবে আসাম পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল জিপি সিং জানান, বাড়তি ওজনের ক্ষেত্রে যেসব কর্মকর্তাদের চিকিৎসা সংক্রান্ত জটিলতা রয়েছে, তাদেরকে ছাড় দেওয়া হবে। একইসাথে এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সর্বপ্রথম তিনি নিজের বিএমআই পরিমাপ করাবেন।
কয়েক সপ্তাহ আগে আসামের মূখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানান, আসামের প্রায় ৩০০ পুলিশ কর্মকর্তার 'শারীরিকভাবে অযোগ্য' হওয়া এবং নিয়মিত মদ্যপান করার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এজন্য তাদেরকে আগেই অবসরে পাঠানো হবে।
মুখ্যমন্ত্রী বিশ্ব শর্মা এ প্রক্রিয়াটিকে পুলিশ বাহিনী থেকে 'অকেজো কর্মকর্তা' ছাঁটাই করার উপায় হিসেবেই দেখছেন।
অন্যদিকে, গবেষণায় দেখা গেছে ভারতের পুলিশ সদস্যদের পরিমিত বিশ্রাম ও বিরতি ছাড়াই দীর্ঘ সময় ধরে দায়িত্ব পালন করতে হয়।
২০১৮ সালে ভারতের কর্ণাটক প্রদেশের সংরক্ষিত পুলিশ অফিসারদেরও বরখাস্ত হওয়া এড়াতে ওজন কমানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এ সম্পর্কে পুলিশের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বিবিসিকে জানান, লাইফস্টাইলের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত নানা রোগে ভুগে গত ১৮ মাসে বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা মারা যাওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এসব রোগের মধ্যে হৃদযন্ত্রের সমস্যা ও ডায়াবেটিস অন্যতম।
বিএমআই হচ্ছে শরীরের আদর্শ ওজন নির্ণয়ের একটি গাণিতিক পদ্ধতি। এতে দেহের ওজনকে (কেজি) উচ্চতার বর্গ (মিটার) দিয়ে ভাগ করে আদর্শ ওজন নির্ণয় করা হয়। পদ্ধতিটি বিশ্বব্যাপী চিকিৎসা সেবা থেকে শুরু করে স্থূলতা সংক্রান্ত নানা পরিমাপেও ব্যবহার করা হয়।
বিশ্বজুড়ে ব্যবহৃত হলেও বিএমআইয়ের পরিমাপ পদ্ধতি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন, গণহারে সবার স্বাস্থ্যের পরিমাপক হিসেবে এ পদ্ধতিটির ব্যবহার ত্রুটিপূর্ণ ও অবৈজ্ঞানিক। শ্বেতাঙ্গ ইউরোপীয় পুরুষদের কথা চিন্তা করে আদর্শ ওজন পরিমাপের এ পদ্ধতিটি তৈরি করা হয়েছে।