উড়িষ্যায় ট্রেন দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানা গেছে: ভারতীয় মন্ত্রী
শুক্রবার (২ জুন) রাতে ভারতের উড়িষ্যায় এক মারাত্মক ট্রেন দুর্ঘটনায় অন্তত ২৮৮ জন নিহত এবং ৮৫০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে। আজ সকালে দেশটির রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, এ দুর্ঘটনার আসল কারণ জানা গেছে এবং এর পেছনে যারা দায়ী তাদেরও চিহ্নিত করা হয়েছে। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।
অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, 'এই দুর্ঘটনার মূল কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। আমরা আজ ট্র্যাক মেরামত করার চেষ্টা করব। সব মরদেহ ইতিমধ্যে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য হলো বুধবার সকালের মধ্যে লাইন মেরামতের কাজ শেষ করা। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই ট্র্যাকে যাতে ফের ট্রেন চলতে শুরু করতে পারে, সেদিকেই এখন আমাদের নজর।'
দুর্ঘটনার তদন্ত নিয়ে তিনি বলেন, 'রেলওয়ে নিরাপত্তা কমিশনার বিষয়টির তদন্ত করেছেন এবং প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট ইতিমধ্যেই এসেছে। আমরা ঘটনার কারণ এবং এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করেছি...ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং পরিবর্তনের কারণে এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। এই মুহূর্তে আমাদের ফোকাস লাইন মেরামতের দিকে।'
প্রসঙ্গত, শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ উড়িষ্যার বাহানাগা স্টেশনের কাছে শালিমার-চেন্নাই রুটের করমণ্ডল এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়ে যায়। দুর্ঘটনার তীব্রতা এতই ছিল যে যাত্রীবাহী ট্রেনটির ইঞ্জিন উঠে যায় এক মালগাড়ির ওপর। ট্রেনের অধিকাংশ বগি ছিটকে পড়ে পাশের লাইনে। এই সময় উলটো দিক থেকে আসা যশবন্তপুর-হাওড়া হামসফর এক্সপ্রেসের সঙ্গে ধাক্কা লাগে করমণ্ডলের লাইনচ্যুত বগিগুলোতে।
প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, সিগন্যালিং কন্ট্রোল রুমের ভিডিওতে দেখা গেছে, ভুল লাইনে ঢুকে পড়েছে আপ ১২৮৪১ শালিমার-চেন্নাই সেন্ট্রাল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। তবে এখনও বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় রেলের তরফে সরকারিভাবে কিছু জানানো হয়নি।
হিন্দুস্তান টাইমসকে রেলের এক শীর্ষকর্তা জানিয়েছেন, খড়্গপুর ডিভিশনের সিগন্যালিং রুমের ভিডিওতে দেখা গিয়েছে যে সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিট নাগাদ উড়িষ্যার বালাসোর জেলার বাহানগা বাজার স্টেশন অতিক্রম করার পর লুপ লাইনে ঢুকে পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। এদিকে সেই লুপ লাইনে আগে থেকেই একটি মালগাড়ি ছিল। এই মারাত্মক ভুলের কারণেই এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে। এই লুপ লাইনে করমণ্ডল এক্সপ্রেস না ঢুকলেই দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।
এছাড়াও প্রাথমিক তদন্তে জানা যাচ্ছে, সিগন্যালিংয়ের গলদে এই দুর্ঘটনা হয়ে থাকতে পারে। জানা গিয়েছে, প্রথমে মেইন লাইনে ঢোকার জন্য সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেসকে। পরে সেই সংকেত বন্ধ করা হয়। এই আবহে লুপ লাইনে ঢুকে পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস।