দীর্ঘ সাত বছর পর সৌদি আরবে দূতাবাস চালু করছে ইরান
সৌদি আরবে ফের দূতাবাস চালু করছে ইরান। এর মাধ্যমে দীর্ঘ সাত বছর পর মধ্যপ্রাচ্যের দুই গুরুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে পুনরায় কূটনীতিক সম্পর্ক স্থাপিত হতে যাচ্ছে।
সোমবার (৬ জুন) ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখপাত্র নাসের কানানি এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ মুখপাত্র জানান, আজ (মঙ্গলবার) দূতাবাসটি পুনরায় চালু করা হবে।
একইসাথে আগামীকাল (বুধবার) জেদ্দায় দেশটির কনস্যুলেট ও ওআইসির প্রতিনিধি অফিসও চালু করা হবে।
গতকাল মুখপাত্র নাসের কানানি বলেন, "হজে অংশ নেওয়া তীর্থযাত্রীদের সুবিধার্থে সৌদিতে অবস্থিত আমাদের দূতাবাস ও কনস্যুলেট ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছে। এখন শুধু দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে তা চালু করা হবে।"
মূলত গত ১০ মার্চ চীনের মধ্যস্থতায় বেইজিংয়ে ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যেকার চুক্তির ফলশ্রুতিতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চুক্তিতে আগামী দুই মাসের মধ্যে দূতাবাস চালু করার কথা বলা হয়েছিল।
এরপর ইরানের কর্তৃপক্ষ জানায়, চুক্তির পর থেকেই তারা দূতাবাসে ব্যবহারিক কিছু কাজ শুরু করেছে। কিন্তু দূতাবাসটি যেহেতু বছরের পর বছর বন্ধ ছিল, তাই আনুষ্ঠানিকভাবে এটি চালু হতে আরও সময় লাগবে।
অন্যদিকে তেহরানে অবস্থিত সৌদির দূতাবাস কিংবা মাশাদে অবস্থিত সৌদির কনস্যুলেট ঠিক কবে চালু হবে তা নিয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি। এমনকি ইরানে নিযুক্ত সৌদির রাষ্ট্রদূত কে হবেন সে সম্পর্কেও কিছু জানা যায়নি।
গত মাসে ইরানের পক্ষ থেকে দেশের শীর্ষ কূটনৈতিক আলী রেজা এনায়েতিকে সৌদিতে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। তিনি কুয়েতে নিযুক্ত ইরানের সাবেক রাষ্ট্রদূত।
২০১৬ সালে এক শিয়া ধর্মীয় নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রতিবাদে তেহরানে অবস্থিত সৌদির প্রতিনিধি অফিসে প্রতিবাদকারীরা হামলা করে। এই ঘটনার পরেই সুন্নি প্রধান আঞ্চলিক পরাশক্তির দেশটি তেহরানের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল।
সৌদি-ইরানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই কূটনৈতিক দূরত্ব বজায় ছিল। তবে গত কয়েক মাসে দেশ দুটির মধ্যকার সম্পর্কের যে উন্নতি হয়েছে, সেটি মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বেশ কার্যকরী হবে বলে মনে করেন অনেক কূটনৈতিক বিশ্লেষক।
গত মার্চে সম্পাদিত ইরান-সৌদির চুক্তির পর মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলো সৌদির নেতৃত্বে সিরিয়ার সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এমনকি দীর্ঘ সময় দূরত্ব বজায় রাখা সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার-আল-আসাদের সাথেও মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্রপ্রধানরা সম্পর্ক উন্নয়নের পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
অন্যদিকে ইরানের মিত্র হুথিদের সাথে সৌদি আরব সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ শুরু করেছে। ২০১৫ সালে থেকে ইয়েমেনে চলমান গৃহযুদ্ধে সৌদি-ইরান পরস্পর বিপরীত দুটি গোষ্ঠীকে সমর্থন দিয়ে আসছে।