গাজায় 'যুদ্ধক্ষেত্র' উত্তরাঞ্চল থেকে বাসিন্দাদের দক্ষিণাঞ্চলে সরে যেতে লিফলেট বিতরণ ইসরায়েলের
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হ্যাগারি সম্প্রতি গাজার উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের দক্ষিণাঞ্চলে সরে যেতে নির্দেশ দিয়েছিল। মূলত মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্স (প্রাক্তন টুইটার) এ তিনি এই ঘোষণা দেন। খবর বিবিসির।
পোস্টে হ্যাগারি বলেন, "প্রতিরক্ষা বাহিনীর অভিযানের লক্ষ্য হলো হামাসের হুমকি ধ্বংস করা। গাজার উত্তরাঞ্চল ও গাজা সিটির বাসিন্দাদের বলছি; পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ ফুরিয়ে আসছে… দক্ষিণ দিকে সরে যান। এটি শুধুমাত্র একটি পূর্ব সতর্কতা নয়, এটি একটি জরুরি অনুরোধ।"
অথচ গাজায় বর্তমানে ইন্টারনেট সুবিধাই চালু নেই। ফলে টুইটারের এই নির্দেশনা গাজাবাসীদের নিকট কীভাবে পৌঁছাবে, তা নিয়ে রয়েছিল সন্দিহান।
এমতাবস্থায় সোশ্যাল মিডিয়ার পাশাপাশি ইসরায়েলি সেনাবাহিনী নতুন করে একই ধরনের সতর্কতা সম্বলিত লিফলেট গাজায় বিতরণ করছে। ঐ লিফলেটগুলো মূলত আরবি ভাষায় লেখা।
এক্ষেত্রে সেখানে গাজার উত্তরাঞ্চলকে 'যুদ্ধক্ষেত্র' হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে৷ লিফলেটে বলা হয়, "গাজায় থাকা নিরাপদ নয়। তাই বাসিন্দাদের দক্ষিণে সরে যাওয়া উচিত।"
ইসরায়েলের ক্রমাগত হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ৮ হাজার ছাড়িয়েছে৷ হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে অবশ্য বোমা হামলায় নিহতের যে সংখ্যা ফিলিস্তিনিরা প্রকাশ করছে, সেটির ওপর 'আস্থা নেই' বলে জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিহত হওয়া ৭,০২৮ জনের নামসহ বিস্তারিত ডকুমেন্ট প্রকাশ করেছিল।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আচমকা হামলা করে হামাস। এতে সেখানে প্রায় ১৪০০ মানুষ নিহত হয়। একইসাথে ২২৯ জনকে জিম্মি করে স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি। যার পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে নির্বিচারে বোমা হামলা করে যাচ্ছে ইসরায়েল৷
গত বুধবার অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি অ্যালবানিজের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের উত্থাপিত প্রশ্নের জবাবে বাইডেন বলেন, "নিহতের সংখ্যা নিয়ে ফিলিস্তিনিরা সত্য বলছে কি-না তা নিয়ে আমার কোনো ধারণা নেই। তবে আমি এটা নিশ্চিত যে নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। একটি যুদ্ধের মূল্যই এসব।"
ইসরায়েলি সশস্ত্র বাহিনী গত শুক্রবার রাত থেকে গাজায় আকাশ ও স্থলপথে হামলার গতি বৃদ্ধি করছে। এমতাবস্থায় গতকাল (রবিবার) হামাসের পক্ষ থেকে 'পূর্ণ শক্তি' দিয়ে তেল আবিবের এই হামলা প্রতিরোধের অঙ্গীকার করা হয়েছে।
হামাসের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, "আল-কাশেম ব্রিগেড এবং ফিলিস্তিনি সকল প্রতিরোধকামী বাহিনী পূর্ণ শক্তির দিয়ে ইসরায়েলের আগ্রাসনের মোকাবিলা করতে এবং তাদের অনুপ্রবেশকে ব্যর্থ করতে সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত।"
অন্যদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বিবৃতিতে বলা হয়, "নেতানিয়াহু এবং তার পরাজিত সেনাবাহিনী কোনো সামরিক বিজয় অর্জন করতে পারবে না।"