২০২৪ সালের নির্বাচনে বাইডেনকে বর্জনের আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম নেতাদের
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার প্রশাসনের পক্ষ থেকে গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় সমর্থন দেওয়া হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম সম্প্রদায় এজন্য বাইডেনের প্রতি ক্ষুদ্ধ। মুসলিমরা আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাইডেনকে বয়কটের আহ্বান জানিয়ে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন।
আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এতে আবারো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বাইডেন। কিন্তু, নির্বাচনের ফলনির্ধারণী (সুইং স্টেট) দেশটির অন্তত ছয় অঙ্গরাজ্যের মুসলিম নেতারা গতকাল শনিবার বলেছেন, আসন্ন নির্বাচনে বাইডেনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে মুসলিমদের এককাট্টা করবেন তাঁরা। তবে বাইডেনের পরিবর্তে কোন প্রার্থীকে মুসলিমরা সমর্থন করবে সেটি তাঁরা স্পষ্ট করেননি।
গাজায় ইসরায়েলের নিষ্ঠুর হামলায় নারী-শিশুসহ প্রতিদিন শত শত মানুষ হতাহত হতে থাকলে মার্কিন মুসলিমরা প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন। এর আগে গত ৩১ অক্টোবরের মধ্যে গাজায় একটি (স্থায়ী) যুদ্ধবিরতি কার্যকরের সময়সীমা বেধে দেন মিনেসোটার মুসলিম নেতারা। এসময় তাঁরা বলেছিলেন, বাইডেন এই আল্টিমেটাম না মানলে তাঁর বিরুদ্ধে মুসলিম ভোটারদের ঐক্যবদ্ধ করবেন তাঁরা। কিন্তু, বাইডেন প্রশাসন তাতে কর্ণপাত করেনি। ফলে '#অ্যাবানডন বাইডেন' (বাইডেনকে ত্যাগ করো) নামে একটি প্রচারাভিযান শুরু হয় মিনেসোটা থেকে। এরপর মিশিগান, অ্যারিজোনা, উইসকনসিন, পেনসিলভানিয়া ও ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যেও তা ছড়িয়ে পড়ে।
২০২০ সালের নির্বাচনে বাইডেনের প্রেসিডেন্ট হওয়ার নেপথ্যে যেসব অঙ্গরাজ্যের বড় ভূমিকা ছিল তার মধ্যে এই ছয় অঙ্গরাজ্যও আছে। এসব রাজ্যের ভোটারদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ মুসলিম ও আরব–আমেরিকান। তাঁরা বর্জন করলে– আসন্ন নির্বাচনে ইলেকটোরাল কলেজ ভোটে বাইডেন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হবেন, যা তাঁর জয়ের পথেও বড় বাধা হয়ে উঠতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমদের নাগরিক অধিকার রক্ষায় কাজ করা একটি সংগঠন কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস (সিএআইআর)। শনিবার মিশিগানের ডিয়ারবর্ন শহরে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির মিনেসোটা শাখার পরিচালক জায়লানি হুসেইনকে বাইডেনের বিকল্প নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। জায়লানি হুসেইন বলেন, 'আমাদের কাছে দুজন নয়, অনেক বিকল্প (প্রার্থী) আছে। তবে আমরা (মুসলিমরা) ট্রাম্পকেও (সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প) সমর্থন দিচ্ছি না।'
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে সরাসরি জনগণের ভোটে (পপুলার ভোট হিসেবে পরিচিত) প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন না। তারা মূলত পছন্দের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার মধ্য দিয়ে একটি নির্বাচকমণ্ডলীকে নির্বাচিত করেন। 'ইলেকটোরাল কলেজ' নামের এই নির্বাচকমণ্ডলী প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কাজটি করে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট রাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচকমণ্ডলী নির্ধারণ করে। সেক্ষেত্রে ডেমোক্রেটদের এই সক্ষমতা কমবে মুসলিম ভোটার হারালে।
যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করে – ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান – এ দুটি দল। তবে এ দুই দলের বাইরেও স্বতন্ত্র প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে পারেন যেকোনো নাগরিক।
২০২৪ সালের নির্বাচনে তেমনই একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেন করনেল ওয়েস্ট। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই অধ্যাপক একজন প্রখ্যাত কৃষ্ণাঙ্গ দার্শনিক। তিনি গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন এবং একইসঙ্গে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের নিন্দা জানিয়েছেন।