টেক্সাসের অস্টিনে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পরিকল্পনা ইলন মাস্কের
ইলন মাস্কের দাতব্য সংস্থা দ্য ফাউন্ডেশনের আয়করের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মহামারীর সময়ে টেক্সাসে চলে আসা বিলিয়নেয়ার টেক্সাসের রাজধানী অস্টিনে একটি বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পরিকল্পনা করছেন।
নতুন প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হবে মাস্কের দান করা ১০০ মিলিয়ন ডলারের সাহায্যে প্রথমে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের স্টেম (সায়েন্স-টেকনোলজি-ইঞ্জিনিয়ারিং-ম্যাথেমেটিকস)-কেন্দ্রিক স্কুলের মাধ্যমে। ইন্টার্নাল রেভিনিউ সার্ভিসের কাছে করা প্রত্যাহারের আবেদন থেকে ব্লুমবার্গ জানতে পারে, এই স্কুলটি চালু হওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য হবে 'সর্বোচ্চ পর্যায়ের শিক্ষার জন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়' চালু করা।
বিশ্ববিদ্যালয়টি অভিজ্ঞ শিক্ষকদের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। একইসাথে ঐতিহ্যগত পাঠদানের পাশাপাশি সিমুলেশন, কেস স্টাডি, ডিজাইন প্রোজেক্ট এবং ল্যাবরেটরির মতো ব্যবহারিক পাঠদানের ব্যবস্থাও থাকবে। সাউদার্ন অ্যাসোসিয়েশন অফ কলেজেস অ্যান্ড স্কুলস কমিশন অন কলেজেস থেকেও অ্যাক্রেডিশন নেওয়ার চেষ্টা করবে প্রতিষ্ঠানটি।
মন্তব্য করার জন্য অনুরোধ করা হলেও তাৎক্ষনিকভাবে কোনো জবাব দেয়নি ইলন মাস্কের প্রতিনিধিরা।
এটা অবশ্য ৫২ বছর বয়সী ইলন মাস্কের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম উদ্যোগ নয়। প্রায় এক দশক আগে, টেসলার সহ-প্রতিষ্ঠাতা স্পেসএক্সের ক্যালিফোর্নিয়া অফিসে তার পাঁচ সন্তান এবং স্পেসএক্সের অন্যান্য সহকর্মীদের বাচ্চাদের পড়াশোনার জন্য অ্যাড অ্যাস্ট্রা নামের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করেছিলেন। ২০২০ সালে টেক্সাসে চলে আসার পর স্কুলও ক্যালিফোর্নিয়া থেকে টেক্সাসে সরিয়ে আনা হয়।
ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাসের মূল ক্যাম্পাস তো রয়েছেই, সাম্প্রতিক সময়ে অস্টিন শহর হয়ে উঠেছে উচ্চতর শিক্ষায় উদ্ভাবনের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র। এছাড়াও দুই বছর আগে স্থাপিত ইউনিভার্সিটি অফ অস্টিন মূলত চালু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর 'অ-উদারনীতি'-এর বিরুদ্ধে একটি বিকল্প হিসেবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ১০০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে আগামী বসন্তে চালু হবে। ইতিহাসবিদ নিয়াল ফার্গুসন, ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট জো লনসডেল এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী ল্যারি সামারসের মতো শিক্ষা এবং বাণিজ্য খাতের বড় বড় ব্যক্তির দানের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়টি ২০০ মিলিয়ন ডলার তুলেছে।
আবেদন অনুযায়ী, ইলন মাস্কের নতুন স্কুলটির যাত্রা শুরু হবে ৫০ জন শিক্ষার্থীর মাধ্যমে। ইতিমধ্যেই নির্বাহী পরিচালক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়ার কাজ করছে তারা।
ইলন মাস্ক ২০২২ সালে তার মাস্ক ফাউন্ডেশনের জন্য ২.২ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ টেসলা কোম্পানির স্টকে দান করেন। সম্প্রতি উদ্যোগ নেওয়া স্কুলের জন্য ১০০ মিলিয়ন ডলারের পাশাপাশি এর আগে তিনি ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেন, খান অ্যাকাডেমিতেও বেশ মোটা পরিমাণ অর্থ দান করেছেন বলে তার আয়করের ফাইল থেকে জানা যায়।
ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার ইনডেক্সের তথ্য অনুযায়ী ইলন মাস্ক বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ ধনী, যার বর্তমান সম্পদ ২২০.৮ বিলিয়ন ডলার। এছাড়াও ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অস্টিন শহরের পাশে নিজের একটি শহরও তৈরি করছেন ইলন মাস্ক, যেখানে টেসলা, স্পেসএক্স এবং দ্য বোরিং কোম্পানির কর্মচারী-কর্মকর্তাদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা, বিনোদন ব্যবস্থা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরির পরিকল্পনা করছেন।