জাপানে নববর্ষের দিন ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩০ জনে
জাপানের মধ্যাঞ্চলে গতকাল সোমবার আঘাত হানা ৭.৬ মাত্রার ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ জন। দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের উপকূলীয় ইশিকাওয়া প্রিফেকচারের (প্রশাসনিক অঞ্চল) কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এই অঞ্চলটিই ছিল ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল।
নিহতদের মধ্যে ১৫ জনই ওয়াজিমা শহরের। এছাড়াও সুজু শহরে ৬ জন, নানাও শহরে ৫ জন, আনামিজু শহরে ২ জন এবং হাকুই ও শিকা শহরে ২ জন নিহত হয়েছেন।
পুলিশের উদ্ধৃতি দিয়ে দেশটির সরকারি সম্প্রচার মাধ্যম এনএইচকে জানিয়েছে, ভূমিকম্পে ধসে পড়া একটি বাড়ি থেকে উদ্ধারের পর একজন বয়স্ক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
এনএইচকে হাসপাতাল ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, তোয়ামা ও নিগাতাসহ আরও চারটি প্রিফেকচারে কয়েক ডজন লোক আহত হয়েছে।
এটি আরও জানায়, ফায়ার ডিপার্টমেন্ট এখনও ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের নিচে আটকা পড়াদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে।
ভূমিকম্পের পর বিদ্যুৎহীন ৪৫ হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি
জাপানের হোকুরিকু ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানি আজ মঙ্গলবার জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর ইশিকাওয়া প্রিফেকচারে প্রায় ৪৫ হাজার ৭০০ পরিবার বিদ্যুৎহীন রয়েছে।
দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী মিনোরু কিহারা গতকাল সোমবার সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় হতাহতদের উদ্ধার ও পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টায় সহায়তা করতে এক হাজার সামরিক সদস্য পাঠিয়েছে।
ভূমিকম্পের পর সুনামির সতর্কতা তুল নিল জাপান
দেশটির আবহাওয়া সংস্থার ওয়েবসাইটে মঙ্গলবার সকালে জানানো হয়, জাপানে সুনামির সব ধরনের সতর্কতা সংকেত তুলে নেওয়া হয়েছে। সোমবার বিকালে ভূমিকম্প আঘাত হানার পর এ সতর্কতা জারি করা হয়েছিল।
সংস্থাটি পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলে জরুরিভিত্তিতে সুনামি সতর্কতা জারি করার মাত্র ১০ মিনিট পর প্রথম ঢেউ উপকূলে আঘাত হানে। ১.২ মিটার (৪ ফুট) পর্যন্ত উঁচু সুনামি ঢেউ দেশটির পশ্চিম উপকূল বরাবর বেশ কয়েকটি এলাকায় আছড়ে পড়ে।
ভূমিকম্পের পর ছড়িয়ে পড়া আগুনে পুড়ছে শতাধিক ঘরবাড়ি ও দোকান
এনএইচকে জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর সোমবার সন্ধ্যায় ইশিকাওয়া প্রিফেকচারে অবস্থিত উপকূলীয় শহর ওয়াজিমায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে ১০০ টিরও বেশি দোকান ও বাড়ি পুড়ে গেছে।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকালেও আগুন জ্বলছিল বলে খবরে জানানো হয়।
১১ ঘণ্টারও বেশি সময় আটকে থাকার পর চালু হলো বুলেট ট্রেন
এনএইচকে জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কারণে চারটি বুলেট ট্রেন আটকা পড়ে। এসব ট্রেনের ভেতর আটকা পড়ে প্রায় এক হাজার ৪০০ যাত্রী। আজ মঙ্গলবার স্থানীয় সময় ভোরে ট্রেনগুলো আবারও চালু হয়েছে। যাত্রীদের সবাই সুস্থ্য আছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
কর্মকর্তারা জানান, ট্রেনগুলো জাপানের মধ্যাঞ্চলীয় শহর তোয়ামা ও কানাজাওয়ার মধ্যে আটকা পড়েছিল। ১১ ঘণ্টারও বেশি সময় আটকে থাকার পর মঙ্গলবার ভোর ৪টায় দুটি ট্রেন তোয়ামা স্টেশনে এস পৌঁছায়। বিপরীত দিকে যাত্রা করা আরও দুটি ট্রেন ইশিকাওয়া প্রিফেকচারের কানাজাওয়া স্টেশনে পৌঁছেছে।