ইসরায়েলের বিরামহীন হামলা, গাজায় নিহতের সংখ্যা ২২ হাজার ছাড়াল
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের নিরবচ্ছিন্ন হামলায় নিহতের সংখ্যা ২২ হাজার ছাড়িয়েছে। এদিকে লেবাননের বৈরুতে হামাসের কার্যালয় লক্ষ্য করে চালানো ড্রোন হামলায় গোষ্ঠীটির শীর্ষ এক নেতাসহ অন্তত চারজন নিহতের খবর পাওয়া গিয়েছে।
গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে মোট ২২ হাজার ১৮৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও অন্তত ৫৭ হাজার আহত হয়েছেন বলে মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) জানিয়েছে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বোমা হামলায় গাজায় নিহতদের দুই-তৃতীয়াংশ নারী ও শিশু। এর আগে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে আচমকা হামলা চালিয়ে এক হাজার ১৪০ ইসরায়েলিকে হত্যা ও ২৪০ জনকে বন্দি করলে গাজায় পালটা আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েলে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের মোট ১৫টি হামলায় ২০৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। একই সময়ে ৩৩৮ জন আহত হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছে এটি।
এদিকে লেবাননের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানিয়েছে, দক্ষিণ বৈরুতের মাশরাফিয়া এলাকায় হামাসের কার্যালয় লক্ষ্য করে চালানো এক ড্রোন হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন।
একাধিক গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়, এ হামলায় হামাসের পলিটব্যুরোর ডেপুটি লিডার সালেহ আল-আরোরি নিহত হয়েছেন। পরে হামাসের নিজস্ব মিডিয়া আল-আরোরি'র মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করে।
এদিকে হাজারো বাস্তুহারা শরণার্থীর আশ্রয় নেওয়া দক্ষিণ গাজাসহ উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলের স্থল ও বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে।
খান ইউনিসে থাকা আল জাজিরা'র প্রতিনিধি হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, মধ্য ও দক্ষিণ গাজায় গত রাতে ও মঙ্গলবার সকালে 'তীব্র বোমাবর্ষণ' করে ইসরায়েলি বাহিনী।
বোমাবর্ষণের তীব্রতা এবং সড়ক ও অবকাঠামো ধ্বংস হওয়ায় হামলার শিকার স্থানগুলোতে গিয়ে আহতদের হাসাপাতালে নিতে পারেনি অ্যাম্বুলেন্সগুলো।
ফিলিস্তিনের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ওয়াফা নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, মধ্য গাজার দেরি এল-বালাহয় ইসরায়েল একটি বাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। এতে নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি ড্রোন একটি বাজার লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করলে অন্তত একটি বালিকা নিহত ও আরও কয়েকজন আহত হন।
গত ১৩ অক্টোবরের পর থেকে উত্তর গাজার প্রায় ১০ লাখের বেশি বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
হামাসের সশস্ত্র বিভাগ কাসাম ব্রিগেডস জানিয়েছে, এটি মধ্য গাজার বুরেইজ শরণার্থী ক্যাম্পের পূর্বদিকে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। এছাড়া এটি ইসরায়েলের একটি মারকাভা ট্যাংক লক্ষ্য করে হামলা চালানোর দাবিও করেছে।
বুরেইজ শরণার্থী ক্যাম্পে দুই পক্ষের এক লড়াইয়ে ইসরায়েলি সৈন্যরা আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইসলামিক জিহাদের সশস্ত্র বিভাগ আল-কুদস ব্রিগেডস।
এদিকে ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করেছে, গাজার উপকূলীয় এলাকা ও আশপাশের ভবনগুলোতে মাইন বসানোর সময় কয়েকজন হামাস সদস্যকে হত্যা করেছে এটি।
এছাড়া অপর একটি বিমান হামলায় তিন হামাস সদস্যকে হত্যার কথাও জানিয়েছে বাহিনীটি।