লোহিত সাগরে গ্রিসের মালিকানাধীন জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
লোহিত সাগরে মাল্টার পতাকাবাহী গ্রিক মালিকানাধীন একটি জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। ইয়েমেনের উপকূল দিয়ে যাওয়ার সময় আজ মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) জাহাজটি আক্রান্ত হয় বলে জানিয়েছে নৌবাণিজ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থাপক প্রতিষ্ঠান অ্যামব্রে।
এপর্যন্ত পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, জাহাজটির নাম জোগ্রাফিয়া। এটি একটি বাল্ক ক্যারিয়ার- বা শস্য, কয়লা, লৌহ আকরিক ইত্যাদি পণ্য পরিবহনে ব্যবহৃত নৌযান।
আরব নিউজ জানায়, গাজায় হামলা শুরুর পর থেকে এই জাহাজটি বেশ কয়েকবার ইসরায়েলের বন্দরে যাতায়াত করেছে। মিসাইল আঘাত হানার পরে জাহাজটি গতিপথ বদলে বন্দরের দিকে ফিরতে শুরু করেছে। তাৎক্ষনিকভাবে ক্ষয়ক্ষতি বা প্রাণহানির কথা জানা যায়নি।
গাজায় নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিবাদে লোহিত সাগর দিয়ে সুয়েজ খাল হয়ে ইসরায়েলগামী ও ইসরায়েলি মালিকানাধীন জাহাজে এর আগে হামলা চালায় ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। এরপর গত ১১ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ইয়েমেনে বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। গত সপ্তাহে ইয়েমেনমুখী একটি ইরানি অস্ত্রের চালানও আটক করার কথা জানায় মার্কিন সামরিক বাহিনী।
হুথিরা তাঁদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ইঙ্গ-মার্কিন হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। রোববার যুক্তরাষ্ট্রের একটি যুদ্ধজাহাজকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ে হুথিরা, এটি ভূপাতিত করার কথা জানায় যুক্তরাষ্ট্র।
তবে সোমবারেই যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানাধীন একটি পণ্যবাহী জাহাজে হুথিদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে।
মিডল ইস্ট মনিটরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক এই জলপথে হুথিদের আক্রমণে বিপাকে পড়েছে পশ্চিমা বিশ্ব, যারা ইসরায়েলের গণহত্যায় সামরিক, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছে। তারা ইসরায়েলকে এই গণহত্যা থামাতে প্রকৃতপক্ষে কোনো ধরনের চাপ দিচ্ছে না, উল্টো ইয়েমেন ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে এগিয়ে আসায় দেশটির ওপর হামলা করেছে।
গত বছরের নভেম্বর থেকে লোহিত সাগরে এক ডজনের বেশি জাহাজ হুথিদের ড্রোন ও মিসাইল হামলার শিকার হয়। হুথিদের বক্তব্য হলো- তাঁরা ইসরায়েলি মালিকানাধীন, পতাকাবাহী বা ইসরায়েলগামী জাহাজে হামলা করছে। পরে যেসব দেশ ইয়েমেনে পাল্টা-আক্রমণ করেছে, এখন তাঁদের সামরিক ও বেসামরিক জাহাজেও তারা আক্রমণ করবে।
বিশ্ববাণিজ্যের জন্য লোহিত সাগরের জলপথ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সুয়েজ খালের মাধ্যমে লোহিত সাগর হয়ে ভারত মহাসাগরের সাথে ভূমধ্যসাগরের নৌ যোগাযোগের পথ রয়েছে। যেখান দিয়ে কম সময়ে ও খরচে ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যে পণ্য লেনদেন করা যায়। সংঘাতের কারণে অনেক জাহাজকেই এখন এই জলপথের বদলে আফ্রিকার উত্তমাশা অন্তরীপ ঘুরে যেতে হচ্ছে। এতে পণ্য পরিবহনের ব্যয় বাড়ছে, একইসঙ্গে সময়ও বেশি লাগছে। বিশ্ব অর্থনীতির প্রতিকূল অবস্থায় এটি নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে।