হাতুড়িপেটার শিকার মালদ্বীপের শীর্ষ আইন কর্মকর্তা
মালদ্বীপে নতুন সরকারকে ঘিরে চলছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। সংসদ সদস্যদের নজিরবিহীন মারামারির পর এবার হাতুড়িপেটার শিকার হলেন সরকারের প্রধান কৌঁসুলি হোসেন শামীম।
কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার পথে শামীমকে অজ্ঞাত হামলাকারীরা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। আঘাতে তার বাম হাত জখম হয়েছে বলে বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন এক পুলিশ কর্মকর্তা।
ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে শামীম জানান, তিনি বাসায় ফিরে এসেছেন এবং পরিবারের সঙ্গে রয়েছেন। অর্পিত দায়িত্ব পালনের বিষয়ে নিজের প্রতিশ্রুতির কথা জানান তিনি। ফেসবুকে শামীম লিখেছেন, ''আমি আজ ভোরে হামলার শিকার হয়েছি...আমার বাম হাত ভেঙে গেছে।' ঘটনার বিস্তারিত আর কিছু না জানালেও তিনি বলেছেন, ''দ্রুতই আরো শক্তিশালী হয়ে কাজে ফিরবে, দৌড়াব, সাইকেল চালাব এবং আগের চেয়েও দ্রুত সাঁতার কাটব।'
এই হামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছে মালদ্বীপের প্রধান বিরাোধী দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি—এমডিপি। তবে পুলিশের সন্দেহ, শামীমের সামলানো কোনো ফৌজদারি মামলার শত্রুতার জেরে এই হামলা হয়ে থাকতে পারে। ২০১৯ সালে এই আইনজীবী পদোন্নতি পেয়ে প্রধান কৌঁসুলি হিসেবে নিয়োগ পান।
হামলার তিনদিন আগে দেশটির পার্লামেন্টে অ্যাটর্নি জেনারেলসহ মন্ত্রীসভার তিনটি পদের রদবদল নিয়ে আইনপ্রণেতাদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। ক্ষমতাসীন দলের আইনপ্রণেতারা রোববার বিরোধী দলের আনা এই ভোট প্রতিহতের চেষ্টা চালান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সংসদ সদস্যেদের মারামারির ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে বিরোধী জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে ধর্ম, গৃহায়ণ ও অ্যাটর্নি জেনারেলের রদবদলের প্রস্তাব সোমবার পার্লামেন্টে পাশ হয়েছে। শীর্ষ আইন কর্মকর্তার ওপর হামলার সঙ্গে এই ঘটনার কোনো সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ প্রাথমিকভাবে মেলেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মালদ্বীপের নতুন প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জু সোমবার জানিয়েছেন, তিনটি পদে নতুন করে নিয়োগ দেবেন তিনি। গত সেপ্টেম্বরে নির্বাচনে জয়লাভ করে ক্ষমতায় আসেন ভারতবিরোধী ও চীনঘেঁষা রাজনীতিবিদ মুইজ্জু। কিন্তু পার্লামেন্টে তার দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রবল বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে তাকে। এই মুহূর্তে এমডিপিসহ তাদের জোটের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যারিষ্ঠতা রয়েছে। আগামী মধ্য মার্চে পালার্মেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
এমডিপি সূত্রের বরাত দিয়ে এএফপি জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুকে অভিশংসনের মুখোমুখি করার পরিকল্পনা করেছে তারা। তবে কীসের ভিত্তিতে সেটি করা হবে কিংবা এজন্য বিরোধীদের সবার সমর্থন মিলবে কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়।