গাজার জনগণের উপর ইসরায়েল ‘গণহত্যার যুদ্ধ চালাচ্ছে’: কাতার
কাতার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে (আইসিজে) জানিয়েছে, "গাজার জনগণের উপর ইসরায়েলের চালানো গণহত্যার যুদ্ধ" আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি।
কাতারের কূটনীতিক মুতলাক আল-কাহতানি শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের দখলদারিত্বের বিষয়ে আইনি পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের শীর্ষ আদালতের শুনানির পঞ্চম দিনে তাঁর যুক্তি উপস্থাপনের সময় এই কথা বলেন।
মুতলাক আল-কাহতানি বলেন, "গাজার জনগণের উপর ইসরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধ দেখিয়ে দিয়েছে ফিলিস্তিনের পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হতাশাজনক।"
জুরিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, "এই অগ্রহণযোগ্য পরিস্থিতির সমাধানের জন্য আপনাদের স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে। আন্তর্জাতিক আইনি আদেশের গ্রহণযোগ্যতা আপনাদের মতামতের উপর নির্ভরশীল।"
ফিলিস্তিনি জনগণের দুর্দশার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, "যে কোন পরিস্থিতিতেই আন্তর্জাতিক আইনকে বহাল রাখতে হবে। আইন অবশ্যই সবার জন্য সমানভাবে প্রয়োগ করতে হবে এবং আইনের লঙ্ঘন হলে তার জন্য জবাবদিহিতার ব্যবস্থা থাকতে হবে। তবুও ৭৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনি জনগণের দুর্দশাকে আন্তর্জাতিক আইনের ব্যতিক্রম হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।"
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার রিপোর্ট অনুযায়ী, ফিলিস্তিনি অঞ্চলে ইসরায়েলের দখলের বিষয়ে শুনানির সময় কাতার আইসিজের 'ডাবল স্ট্যান্ডার্ড' প্রত্যাখ্যান করেছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক আইন কিছু ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলেও অন্যদের জন্য তা হচ্ছে না।
নেদারল্যান্ডের হেগ শহরে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সদর দপ্তরে কাতারের সিনিয়র কূটনীতিক মুতলাক আল-কাহতানি বলেছেন, "কিছু শিশুকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য যোগ্য বিবেচনা করা হচ্ছে অথচ অন্য স্থানে হাজার হাজার শিশু নিহত হচ্ছে।"
তিনি আরো বলেন, ইসরাইল "ফিলিস্তিনিদের উপর ইহুদি ইসরায়েলিদের আধিপত্য" বজায় রাখার উদ্দেশ্যে একটি "বর্ণবাদী শাসন" প্রয়োগ করছে।
তিনি এটিকে "অবৈধ" বলেছেন কারণ এর মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারকে অস্বীকার করা হচ্ছে।
কাতার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং মিশর বর্তমানে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে যুদ্ধ বন্ধ করার উদ্দেশ্যে ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে আলোচনা চালানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
গত সপ্তাহে ইসরায়েলের দখলদারিত্বের আইনি বৈধতা নিয়ে আইসিজে ৫০ টিরও বেশি দেশের মতামত শুনেছেন। আদালত শীঘ্রই এই বিষয়ে একটি অবাধ্য মতামত প্রদান করবেন।
১৫ জন বিচারকের একটি প্যানেল ইসরায়েলের দখলদারিত্ব, বসতি স্থাপন এবং সংযুক্তি সম্পর্কিত পদক্ষেপগুলো খতিয়ে দেখছে যার মধ্যে জেরুজালেমের জনসংখ্যা ও বৈষম্যমূলক আইনে পরিবর্তন আনার বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।