গাজা সিটিতে ত্রাণের জন্য অপেক্ষারতদের ওপর ইসরায়েলি হামলায় নিহত ১০৪
গাজা সিটির কাছে ত্রাণের জন্য অপেক্ষারত মানুষদের ওপর বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ১০৪ জনের বেশি নিহত ও ২৮০ জনের বেশি আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজা'র স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র বলেন, ওই এলাকায় কোনো ধরনের গোলাবর্ষণের কথা তাদের জানা নেই। পরে সেনাবাহিনী বলেছে, উত্তর গাজায় ত্রাণ পরিবাহী ট্রাক এলে ধাক্কাধাক্কি ও পদদলিত হয়ে কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি একটি সূত্র জানিয়েছে, দেশটির সশস্ত্রবাহিনী ভিড়ের মাঝে হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে 'কয়েকজন ব্যক্তির' ওপর গুলি চালিয়েছিল।
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কিদরা বলেন, উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে গাজা সিটির পশ্চিমে আল-নাবুলসি চৌরাস্তার কাছে এ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
কিদরা আরও বলেন, কয়েক ডজন আহত ও তাদের আঘাতের তীব্রতা সামাল দিয়ে পেরে ওঠেনি আল-শিফা হাসপাতালের চিকিৎসক দলগুলো।
গাজা সিটির কামাল আদওয়ান হাসপাতালের প্রধান হুসাম আবু সাফিয়া বলেন, তার হাসপাতালে ঘটনাস্থল থেকে ১০টি মৃতদেহ এবং কয়েক ডজন আহতকে আনা হয়েছে।
'অন্য হাসাপাতালগুলোতে কতজন আছে আমরা জানি না,' ফোনে রয়টার্সকে বলেন সাফিয়া।
এক বিবৃতিতে হামাস হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে চুক্তি আলোচনা ব্যর্থ করে দিতে পারে এ ঘটনা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, একাধিক ট্রাকে করে অনেক মৃতদেহ পরিবহন করা হচ্ছে।
একটি ভিডিওর স্থান আল-নাবুলসি চৌরাস্তা বলে চিহ্নিত করেছে রয়টার্স। ওই ভিডিওতে অনেককে নিশ্চল হয়ে পড়ে থাকতে এবং অনেক আহত ব্যক্তিকে দেখা যায়।
রয়টার্স-এর নিশ্চিত না করা আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, রক্তাক্ত মানুষজনকে ট্রাকে তোলা হচ্ছে, একটি হাসপাতালের মেঝেতে আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং অনেকগুলো লাশ কাফনের কাপড়ে মোড়ানো হচ্ছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে হামলা চালায় সশস্ত্রগোষ্ঠী হামাস। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, ওই হামলায় এক হাজার ২০০ জন নিহত হন এবং হামাস ২৫৩ জনকে জিম্মি করে।
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এরপর থেকে উপত্যকাটিতে ইসরায়েল হামলায় ৩০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া কয়েক হাজার মানুষ ধ্বংসস্তূপের ভেতরে রয়ে গেছেন বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।