কী আছে মুকেশ আম্বানির বাড়ি ‘অ্যান্টিলিয়া’য়? বিশ্বের দ্বিতীয় দামি ভবনের অজানা কথা!
রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুকেশ আম্বানি বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি। তার বাড়ি, অ্যান্টিলিয়া একটি ২৭ তলা উঁচু অতি-বিলাসী একটি বাড়ি এবং সমস্ত সুযোগ-সুবিধা দিয়ে সম্পূর্ণরূপে সজ্জিত। এই বাড়িটি সম্পর্কে কিছু চমকপ্রদ তথ্য তুলে ধরা হল।
১. অ্যান্টিলিয়া বানানোর অনুপ্রেরণা
অ্যান্টিলিয়ার স্থাপত্য নকশাটি সূর্য এবং পদ্ম ফুল থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে করা হয়েছিল। বাড়ির অভ্যন্তরের প্রাথমিক ভাবনা এসেছে পদ্ম এবং সূর্যকে কেন্দ্র করে। বাড়ির ভেতরের অংশ মূল্যবান পাথর এবং উপকরণ যেমন মাদার-অফ-পার্ল ও মার্বেল দিয়ে নির্মিত। অ্যান্টিলিয়া নামটি পৌরাণিক দ্বীপ অ্যান্টিলিয়া থেকে নেওয়া হয়েছে যা ১৫ শতকে একটি ভুতুড়ে দ্বীপ হিসেবে পরিচিত ছিল।
২. নির্মাণকাজ ২০০৬ সালে শুরু হয়ে ২০১০ সালে শেষ হয়
বিশ্বের বিখ্যাত কয়েকজন স্থপতি বাড়িটির নকশা করার দায়িত্বে ছিলেন। পারকিন্স এবং উইল এবং হির্শ বেডনার অ্যাসোসিয়েটসের মত বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান বাড়িটির নির্মাণকাজের সাথে জড়িত ছিল। অস্ট্রেলিয়ান নির্মাণ কোম্পানি লেইটন কন্ট্রাক্টর এবং ভারতীয় নির্মাণ কোম্পানি বি.ই. বিলিমোরিয়া অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড এটি নির্মাণের দায়িত্বে ছিল।
৩. প্রতিটি ফ্লোরেই আছে নতুনত্ব
অ্যান্টিলিয়া বাড়িটি বিলাসিতার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। প্রতিটি ফ্লোরেই আছে নতুনত্ব এবং অভিনব কিছু। সুইমিং পুল এবং ক্রিস্টাল ঝাড়বাতি থেকে শুরু করে একটি একটি বহুতল গ্যারেজও আছে। প্রতিটি ফ্লোরেই আলাদা থিম এবং হস্তশিল্পের নকশা দেখা যায়।
৪. ঝুলন্ত বাগান
বাড়িটিতে একটি বড় এবং চমৎকার ঝুলন্ত বাগান আছে। বাগানটি সুন্দরভাবে পরিচর্যা করা হয় এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একদল কেয়ারটেকার নিয়োজিত আছেন। বাগানে বিভিন্ন ধরনের ফুলের গাছ সহ বিভিন্ন গাছ রয়েছে। কিন্তু এটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয়।
৫. দামি জমিতে নির্মিত বাড়ি
দক্ষিণ মুম্বাইয়ের সম্পত্তিগুলো বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল সম্পত্তির মধ্যে একটি। অ্যান্টিলিয়া দক্ষিণ মুম্বাইয়ের আলটামাউন্ট রোডে অবস্থিত যেখানে প্রতি স্কয়ার ফিট জমির দাম বিশ্বের সব থেকে ব্যয়বহুল হিসেবে বিবেচিত হয়। এখানে প্রতি বর্গফুট জমির বর্তমান মূল্য ৮০ হাজার রুপি উপরে। অ্যান্টিলিয়া ৪ লক্ষ বর্গফুট জায়গা জুড়ে নির্মাণ করা হয়েছে এবং এর মূল্য প্রায় ১৫ হাজার কোটি রুপি। এটি বাকিংহাম প্যালেসের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় ব্যয়বহুল আবাসিক সম্পত্তি।
৬. পাঁচ তারকা হোটেলের সুবিধা
অ্যান্টিলিয়ায় একটি স্পা, ব্যায়াম করার জায়গা, জাকুজি, বেশ কয়েকটি পুল, একটি যোগ ব্যায়ামের স্টুডিও এবং একটি নৃত্য স্টুডিও আছে। এগুলো বাড়িটিতে সম্পূর্ণ পাঁচ তারকা হোটেলের সুযোগ-সুবিধা দেয়।
৭. ৬০০ জন কর্মী বাড়িটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত
৬০০ জন কর্মী অ্যান্টিলিয়ার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত।
৮. তিনটি হ্যালিপ্যাড
অ্যান্টিলিয়ায় তিনটি হ্যালিপ্যাড আছে। হ্যালিপ্যাডগুলো থেকে মুম্বাই শহরের দিগন্ত এবং আরব সাগর দেখা যায়।
৯. তুষার কক্ষ
মুম্বাইয়ের গ্রীষ্মকালে গরম এবং আর্দ্রতা বেশী থাকলেও মুকেশ আম্বানির বাড়ির জন্য সেটি খাটে না। এই তাপ থেকে বাঁচার জন্য আম্বানির বাড়িতে আলাদা একটি তুষার কক্ষের ব্যবস্থা আছে।
১০. আম্বানির পরিবার সূর্যের আলো ভালোবাসে
অ্যান্টিলিয়ার কক্ষগুলোর দেয়াল এমন কিছু উপকরণ দিয়ে বানানো হয়েছে যাতে অনেক বেশী সূর্যের আলো বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করতে পারে।
১১. ৬ তলা বিশিষ্ট পার্কিং
অ্যান্টিলিয়ার ৬ তলা পার্কিংয়ে ১৬৮ টি গাড়ি রাখার ব্যবস্থা আছে। এমনকি ৭ তলায় গাড়িগুলোর জন্য একটি সার্ভিসিং স্টেশনও রয়েছে।
১২. দ্রুত গতির লিফট
আম্বানির বারিতে দ্রুত গতির মোট ৯টি লিফট আছে। সাধারণ লিফটের চেয়ে এগুলো অনেক দ্রুত এক ফ্লোর থেকে অন্য ফ্লোরে পৌঁছে দিতে পারে।
মুকেশ আম্বানির বাড়ি অ্যান্টিলিয়ার প্রতিটি তলায় বিলাসবহুল সুযোগ-সুবিধা এবং অনন্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এজন্যই এটি বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল আবাসিক সম্পত্তিগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে বিবেচিত হয়।