গাজায় ত্রাণ সরবরাহে ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণ ‘যুদ্ধাপরাধ’ হতে পারে: জাতিসংঘের সতর্কতা
গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা প্রদানে ইসরায়েলের বিধিনিষেধ 'যুদ্ধাপরাধ' এর সমতুল্য হতে পারে; এমনটাই মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার প্রধান।
এদিকে গত মঙ্গলবার জাতিসংঘ সংশ্লিষ্ট এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের অবসান না হলে এবং ত্রাণের পরিমাণ দ্রুত বৃদ্ধি করা না হলে অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনে মে মাসের মধ্যে দুর্ভিক্ষের সম্ভাবনা রয়েছে।
এ সম্পর্কে হিউম্যান রাইটসের হাইকমিশনার ভলকের টার্ক বলেন, "গাজায় সাহায্য প্রবেশে ইসরায়েল ক্রমাগত নিষেধাজ্ঞা ও বিরোধিতা চালিয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে বিষয়টি অনেকটা যুদ্ধের টুল হিসাবে অনাহারকে ব্যবহার করার মতো, যা একটি যুদ্ধাপরাধ।"
আর জেনেভায় হাইকমিশনারের মুখপাত্র জেরেমি লরেন্স রিপোর্টারদের বলেন, "অনাহারকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে কি-না তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আইন আদালত দ্বারা নির্ধারিত হবে। গাজার জনগণের দুর্ভোগ অমূলক।"
গাজায় অবরোধে ত্রাণ বিতরণকারী সংস্থাগুলি ইসরায়েলকে সংকটের জন্য দায়ী করলেও দেশটির বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারের দাবি, তারা ত্রাণ সরবরাহের সুবিধা দিচ্ছে। তেল আবিবের দাবি, জাতিসংঘ ও ত্রাণ প্রদানের সাথে সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীগুলো সাহায্য বিতরণের পরিমাণ ও গতির জন্য দায়ী।
আর টার্ক মুখপাত্রের মাধ্যমে প্রকাশ করা এক বিবৃতিতে বলেন, "দখলকারী শক্তি হিসাবে ইসরায়েলের গাজাবাসীদের প্রতি তাদের চাহিদার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ খাদ্য ও চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার এবং সহায়তা প্রদানের জন্য মানবিক সংস্থাগুলির কাজকে সহজতর করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।"
গত সোমবার প্রকাশিত ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) রিপোর্টে বলা হয়েছে, উত্তর গাজায় অপুষ্টি ও খাদ্যের ঘাটতি সম্ভবত দুর্ভিক্ষের মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। জলদিই ক্ষুধায় মৃত্যু দেখা যেতে পারে।"
রিপোর্ট অনুযায়ী, যুদ্ধের কারণে গাজার প্রায় ১১ লাখ মানুষ 'বিপর্যয়কর' অনাহারের সম্মুখীন হয়েছে বলে সতর্ক করেছে। যা উপত্যকাটির মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক।
টার্ক মনে করেন, চলমান সংকট 'মানবসৃষ্ট' এবং 'পুরোপুরি প্রতিরোধযোগ্য'। তিনি বলেন, "গাজায় খাদ্য, পানি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহসহ প্রয়োজনীয় সেবাগুলো সম্পূর্ণ চালু করা দরকার।"