সিগারেটের দাম বাড়া যুক্তরাজ্যে ধূমপান ছাড়ার প্রচেষ্টাকে অনুপ্রাণিত করে, গবেষণা
সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, সিগারেটের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় যুক্তরাজ্যে প্রতি চারজনে একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি সিগারেট ছাড়তে আগ্রহী হচ্ছেন।
প্রায় ৬ হাজার মানুষের ওপর চালানো এ গবেষণায় অবশ্য অনেকেই স্বাস্থ্য সচেতনতাকেই সিগারেট ছাড়ার প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
কিন্তু ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের গবেষণায় বলা হয়েছে, ধূমপান বন্ধ করে যে অর্থ সঞ্চয় করা যেতে পারে তা থেকে উৎসাহিত হয়ে অনেকেই সিগারেট ছাড়তে আগ্রহী হতে পারেন। যুক্তরাজ্যে বর্তমানে এক প্যাকেট (প্যাকেটে ২০টি সিগারেট) সিগারেট কিনতে গুনতে হয় ১৪ পাউন্ড যা ২০২৬ সালে ১৬ পাউন্ডে পৌঁছাবে।
সিগারেটকে যুক্তরাজ্যে মৃত্যু ও স্বাস্থ্যঝুঁকির প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সিগারেটে থাকা তামাক ও নিকোটিন থেকে ফুসফুসের ক্যান্সার ও হৃদরোগ হতে পারে। অনেকদিন ধূমপান করা ব্যক্তিদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই অল্প বয়সে মারা যান।
২০১৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ধুমপায়ীদের ওপর সমীক্ষা চালিয়ে গবেষণায় দেখা গেছে, কোভিড মহামারি শুরু হওয়ার পর একটা বিশাল পরিসরের মানুষ সিগারেট ছাড়ার চেষ্টা করেছেন যা অন্যদেরও অনুপ্রাণিত করেছে।
সম্প্রতি কিছু তথ্য থেকে দেখা যায়, বর্তমানে ইংল্যান্ডের ১২.৭ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ধূমপান করেন যেখানে ২০১১ সালে দেশটিতে প্রায় ২০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ধূমপান করতেন। ধূমপান ছাড়ার কারণ হিসেবে অনেকেই স্বাস্থ্যঝুঁকি ও সিগারেটের দাম বেড়ে যাওয়ার কথা বলেছেন।
বিএমজে পাবলিক হেলথ জার্নালে গবেষকরা লিখেছেন, মহামারি সম্ভবত ধূমপায়ীদের মধ্যে স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়িয়েছে। এর ফলে ২০২০ এবং ২০২১ সালে সুস্বাস্থ্যের কথা ভেবে ধূমপান ছাড়ার চেষ্টা বেড়েছে।
আবার কোভিডের কারণে অনেক লোকের চাকরি চলে গিয়েছে ও আয়ের ক্ষতি হয়েছে যা জীবনযাত্রার মানে প্রভাব ফেলেছে।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের ড. সারা জ্যাকসন ধূমপান কমাতে আগ্রহীদের ই-সিগারেট (বৈদ্যুতিক সিগারেট) ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন।
২০১৮ থেকে ২০২২ সালের পূর্ববর্তী গবেষণায় দেখা গেছে, ধূমপায়ীরা প্রতি সপ্তাহে সিগারেটের জন্য গড়ে ২০ পাউন্ড খরচ করে যেখানে ই-সিগারেট ব্যবহারকারীরা ৬.৩০ পাউন্ড খরচ করে। দাম বাড়ার সাথে সাথে ধূমপায়ীরা হয় তাদের সিগারেটের সংখ্যা কমিয়ে দেয় অথবা সস্তা হাতে রোল করা সিগারেটের দিকে আগ্রহী হয়। কিন্তু সেটিরও একটি মাত্রা আছে যা ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার প্রতি আগ্রহ বাড়ায়।
নতুন ধূমপান আইন
গত সপ্তাহে, দেশটির সংসদ সদস্যরা ২০০৯ সালের পরে জন্মগ্রহণকারীদের জন্য যুক্তরাজ্যে সিগারেট কেনা নিষিদ্ধ করার পক্ষে ভোট দিয়েছেন।
'টোবাকো এন্ড ভ্যাপস বিল'-এ (তামাক ও ভ্যাপ প্রস্তাবনা) বিশ্বের অন্যতম কঠোর ধূমপান আইনের প্রস্তাব করা হয়েছে। নতুন এ প্রস্তাবনায় সিগারেটের স্বাদ ও প্যাকেজিংয়ের ওপর নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করার পাশাপাশি ভ্যাপকে শিশুদের কাছে নিষিদ্ধ করে তোলার লক্ষ্য রয়েছে।
অনুবাদ: তাসবিবুল গনি নিলয়