গাজা যুদ্ধের তদন্ত নিয়ে হুমকি দেওয়া বন্ধ করতে হবে: আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রসিকিউটর অফিস কর্মকর্তাদের ভয় দেখানোর অভিযোগ উঠেছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে। ইসরায়েলি ও মার্কিন কর্মকর্তারা গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের জন্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে আইসিসিকে সতর্ক বার্তা দেয়।
জবাবে আইসিসির প্রসিকিউটর করিম খানের হেগভিত্তিক কার্যালয় শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেছে, কর্মকর্তাদের বাধা, ভয় দেখানো বা অন্যায়ভাবে প্রভাবিত করার সব প্রচেষ্টা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। এ ধরনের হুমকি বিশ্বের স্থায়ী যুদ্ধাপরাধ আদালতের বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।
তবে প্রসিকিউটরের বিবৃতিতে সরাসরি ইসরায়েলের নামের উল্লেখ নেই।
গত সপ্তাহে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে এমন খবর পাওয়া গেছে যে আইসিসি গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সহ ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে পারে। এছাড়া আইসিসি যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং গণহত্যার মতো অপরাধের জন্য ব্যক্তিদের বিচার করতে পারে।
মঙ্গলবার নেতানিয়াহু আইসিসিকে তিরস্কার করে একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ইসরায়েল আশা করে মুক্ত বিশ্বের নেতারা ইসরায়েলের আত্মরক্ষার সহজাত অধিকারের ওপর আইসিসির আপত্তিকর আক্রমণের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে দাঁড়াবেন।
নেতানিয়াহু বলেন, 'আমরা আশা করি বিশ্বনেতারা এই বিপজ্জনক পদক্ষেপ বন্ধ করার জন্য তাদের ক্ষমতার সমস্ত উপায় ব্যবহার করবে।'
ওয়াশিংটনের বেশ কয়েকজন আইনপ্রণেতা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে হস্তক্ষেপ করে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আইসিসির যেকোনো পদক্ষেপ ব্যর্থ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
ডেমোক্র্যাট সিনেটর জন ফেটারম্যান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে লিখেছেন, 'ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এই পথ অনুসরণ করা আইসিসির বিচারিক ও নৈতিক অবস্থানের জন্য মারাত্মক আঘাত হবে।'
প্রসিকিউটর অফিস জানিয়েছে, তারা প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলোতে জড়িত সমস্ত পক্ষের সাথে আলোচনা এবং সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক। তবে তা অবশ্যই রোম সংবিধিতে বর্ণিত আইসিসির ম্যান্ডেটের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। এই আদেশে স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতার নীতি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যার অর্থ আইসিসি বাহ্যিক পক্ষের প্রভাব বা পক্ষপাত ছাড়াই কাজ করে এবং আইনের অধীনে সমস্ত মামলা এবং ব্যক্তিদের প্রতি সমানভাবে আচরণ করে।
আইসিসি বিবৃতিতে আরও বলেছে, যখন কেউ আদালতের বিরুদ্ধে বা আদালতের কর্মীদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দেয় তখন স্বাধীনতা এবং নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হয়। তাই রোম সংবিধির অধীনে তাদের দায়িত্ব পালনের জন্য আইসিসি বা এর কর্মীদের বিরুদ্ধে ভয় দেখানো বা প্রতিশোধ নেওয়ার যে কোনো প্রচেষ্টা সংবিধির লঙ্ঘন হিসাবে বিবেচিত হবে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ২০২১ সাল থেকে অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে সম্ভাব্য ইসরায়েলি নির্যাতনের তদন্ত করছে। অক্টোবরে ইমরান খান বলেন, ইসরায়েলে হামাস যোদ্ধারা এবং গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর দ্বারা সংঘটিত সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধের বিচারের এখতিয়ার আদালতের রয়েছে।
অনুবাদ: সাকাব নাহিয়ান শ্রাবন