প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত প্রবৃদ্ধি হয়েছে মালয়েশিয়ার অর্থনীতির, আছে মূল্যস্ফীতির ঝুঁকিও
২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত প্রবৃদ্ধি হয়েছে মালয়েশিয়ার অর্থনীতির। দেশটির পরিবারগুলোর ব্যয় এবং রপ্তানি ঘুরে দাঁড়ানোর ফলে প্রবৃদ্ধির গতি বেড়েছে। যদিও কিছু বিশ্লেষক বলেছেন, মূল্যবৃদ্ধির চাপ বাড়তে পারে, যার ফলে দেশটির অর্থনীতির এ ঘুরে দাঁড়ানো দীর্ঘস্থায়ী না-ও হতে পারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকারের তথ্য বলছে, জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে মালয়েশিয়ার মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪.২ শতাংশ বেড়েছে। এর আগে রয়টার্সের এক জরিপে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল, এ সময়ে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৩.৯ শতাংশ।
এছাড়া টানা তিন প্রান্তিকে কমার পর চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশটির রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২.২ শতাংশ।
মালয়েশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ব্যাংক নেগারা মালয়েশিয়া—বিএনএম) গভরনর আব্দুল রশিদ গফুর বলেছেন, 'টেকসই চাহিদার ওপর ভর করে এ বছর রপ্তানি আরও বাড়বে বলে আশা করছি।'
গত বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে মালয়েশিয়ার অর্থনীতি ১ শতাংশ সংকুচিত হয়েছিল। তবে এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশটির অর্থনীতির ১.৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রক্ষেপণ অনুসারে, ২০২৪ সালে মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৪-৫ শতাংশ। ২০২২ সালে ২২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ৮.৭ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছিল দেশটির। তবে ২০২৩ সালে তা ৩.৭ শতাংশে নেমে আসে।
বিএনএমের প্রক্ষেপণ অনুসারে চলতি বছর মালয়েশিয়ার সার্বিক মূল্যস্ফীতি ২ থেকে ৩.৫ শতাংশের মধ্যে থাকবে বলে জানিয়েছেন আব্দুল রশিদ। গত বছর সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ২.৫ শতাংশ।
মালয়েশিয়া ভর্তুকি কমিয়ে রাজস্ব আয় এবং নিম্ন-আয়ের মানুষকে সহায়তা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। তবে কবে থেকে ডিজেলসহ অন্যান্য জ্বালানিতে ভর্তুকি প্রত্যাহার এবং অন্যান্য মূল্য নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ, তা ঘোষণা করেনি মালয়েশিয়া।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্যয় বৃদ্ধির কারণে ভোক্তাদের ব্যয় প্রভাবিত হতে পারে। অন্যদিকে অন্যতম বাণিজ্য অংশীদার যুক্তরাষ্ট্রে চাহিদা কমায় দেশটির রপ্তানির পুনরুদ্ধারের গতি ধীর হয়ে যেতে পারে।
ব্যাংক মুয়ামালাত মালয়েশিয়ার প্রধান অর্থনীতিবিদ মোহাম্মদ আফজানিজাম আব্দুল রশিদ বলেন, ওভারনাইট পলিসি রেট বাড়ানো হতে পারে।
অর্থনীতিবিষয়ক গবেষণা সংস্থা ক্যাপিটাল ইকোনমিকস-এর বিশ্লেষক শিভান ট্যান্ডন বলেন, মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আশাপ্রদ, তবে এটি টেকসই হওয়ার সম্ভাবনা কম।
তিনি বলেন, শ্রমবাজার শিথিল করা, কঠোর রাজস্ব নীতি ও বৈদেশিক চাহিদা কমে যাওয়ার প্রভাব পড়তে পারে আগামী প্রান্তিকের ওপর।
বিএনএম ২০২৩ সালের মে থেকে নীতি সুদহার (পলিসি রেট) স্থির রেখেছে। ওই মাসে পলিসি রেট ২৫ শতাংশীয় পয়েন্ট বাড়িয়ে ৩ শতাংশ করে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক।