তৃণমূলের পাঠান, শত্রুঘ্ন ও কীর্তির কাছে ধরাশায়ী বিজেপি ও কংগ্রেসের প্রার্থীরা
তৃণমূল প্রার্থী ইউসুফ পাঠান, কীর্তি আজাদ ও শত্রুঘ্ন সিন্হা বিজেপি ও কংগ্রেসের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের হারিয়ে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। বহরমপুরে কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী হেরেছেন ইউসুফ পাঠানের কাছে, বর্ধমান-দুর্গাপুরে বিজেপির দিলীপ ঘোষ হেরেছেন কীর্তি আজাদের কাছে, আর আসানসোলে বিজেপির পবন সিংহকে হারানোর মধ্যে দিয়ে দ্বিতীয় বার বিজেপিকে হারিয়েছেন শত্রুঘ্ন সিন্হা। খবর আনন্দবাজার পত্রিকা
ইউসুফ পাঠান ক্রিকেটের মাঠে বড় ছক্কা হাঁকানোয় খ্যাত হলেও রাজনীতিতে নতুন। তবে শত্রুঘ্ন সিন্হা ও কীর্তি আজাদের ভোটে লড়া এবং সংসদে যাওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে।
শত্রুঘ্ন সিন্হা ও কীর্তি আজাদ বিহারের, আর ইউসুফ পাঠান গুজরাটের বাসিন্দা।
বহরমপুরের মতো কেন্দ্রে বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেট তারকা ইউসুফ পাঠানকে প্রার্থী করে চমক দিয়েছিল তৃণমূল। শুরুর দিকে পাঁচবারের সাংসদ কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী এগিয়ে থাকলেও, সময় যত গড়িয়েছে তৃণমূলের পাঠান তত এগিয়েছেন। প্রথম দিকে ৬১৮ ভোটে এগিয়ে থাকলেও নবম রাউন্ড গণনার পর দেখা যায় অধীরের চেয়ে পাঠান ৩৩ হাজার ৯৩৪ ভোটে এগিয়ে আছেন। বেলা গড়ানোর পর জানা যায় পাঠানের লিড ৫০ হাজার। শেষ পর্যন্ত পাঠানের কাছে প্রায় ৮০ হাজার ভোটে পরাজিত হয়েছেন অধীর।
ভোটের ফল ঘোষণার পর অধীর বলেন, 'বাংলার রাজনীতি ক্রমশ ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। উদার ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি যারা আছে, তাদের জন্য নির্বাচন কঠিন হচ্ছে।'
তিনি আরও বলেন, 'ভোট ঠিকঠাক হয়েছিল। আমাদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি ছিল না। পর পর পাঁচবার জিতেছিলাম। মানুষের দোয়া-আশীর্বাদের ত্রুটি ছিল না। মানুষ মনে করছিল জেতানো দরকার, জিতিয়েছিল। এখন মনে করেছে যে কোনো দরকার নেই , তাই জেতায়নি। কিন্তু নির্বাচন তো নির্বাচন। হেরেছি মানে হেরেছি।'
২০২২ সালে আসানসোলে উপনির্বাচনে জিতে সাংসদ হন শত্রুঘ্ন সিনহা। এবারও তাকেই প্রার্থী করার কথা আগেই জানিয়েছিল তৃণমূল। অন্যদিকে বিজেপি আসানসোলে প্রার্থী হিসেবে ভোজপুরি তারকা পবন সিংহের নাম ঘোষণা করে।
মঙ্গলবার আসানসোলে শত্রুঘ্ন সিন্হার জয়ের পথে তেমন বাধা দেখা যায়নি।
২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে আসানসোল লোকসভার সাতটি আসনের মাত্র দু'টি দখলে ছিল বিজেপির। তাই এ বারের লড়াই যে সহজ হবে না, তা বিজেপির কাছে অনুমেয় ছিল। তাই প্রচার হয়েছিল জোরদার। সে তুলনায় আসানসোলের তীব্র গরমে তৃণমূলের শত্রুঘ্ন সিন্হাকে সেভাবে প্রচারে দেখা যায়নি।
তবে শেষমেশ রঙিন পর্দার মতোই ভোটের ময়দানেও দাপট দেখালেন শত্রুঘ্ন সিন্হা। বিকালেই তাকে জয়ী ঘোষণা করে ভারতের নির্বাচন কমিশন।
বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভা এলাকার মধ্যে দুটি দুর্গাপুর এবং পাঁচটি পূর্ব বর্ধমানের গ্রামীণ এলাকায় পড়ে। সাবেক ক্রিকেটার কীর্তি আজাদকে প্রার্থী করার পরে স্থানীয় তৃণমূলের একাংশেরও আশঙ্কা ছিল, তার ভাষার সমস্যা গ্রামীণ এলাকায় জনসংযোগে অন্তরায় হতে পারে।
কিন্তু ভোটের ফলে দেখা গেল উল্টো ছবি। '৮৩-র বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য কীর্তির কাছে পরাজিত হয়েছেন দিলীপ। তৃণমূলের এই প্রার্থী প্রায় এক লাখ ৩৭ হাজার ভোটে জিতেছেন।