কিংমেকার: চন্দ্রবাবু নাইডু, নীতীশ কুমারকে দলে টানার তোড়জোড় শুরু ইনডিয়া ব্লকের
সরকার গঠনের জন্য জোট সমর্থন পেতে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং তেলুগু দেশম পার্টির প্রধান চন্দ্রবাবু নাইডুর সঙ্গে আলোচনা করবে কংগ্রেস।
ইনডিয়া জোটের মিত্র উদ্ধব ঠাকরে জানান, কংগ্রেস উভয় নেতার সাথে আলোচনায় বসতে চায়। আর প্রবীণ কংগ্রেস নেতা সলমন খুরশিদ বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য সমস্ত জোট শরিকদের একত্রিত করে একটি স্থিতিশীল সরকার গঠন করা।'
ভারতের রীতি অনুযায়ী, সংখ্যাগরিষ্ঠতার সীমা অতিক্রমকারী দল বা গোষ্ঠীকে সরকার গঠনের জন্য আমন্ত্রণ জানান রাষ্ট্রপতি।
মোদির এনডিএ জোট প্রায় ২৯২ টি আসনে এগিয়ে আছে, সরকার গঠনের জন্য দরকার ২৭২টি আসন। নীতীশ কুমারের জনতা দল-ইউনাইটেড এবং চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলুগু দেশম পার্টি, যাদের একসঙ্গে ২৮টি আসন রয়েছে, তারা যদি এনডিএ-তে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তবে তাদের সমর্থন এনডিএর অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে এবং জোট সরকার গঠনের দিকে এগিয়ে যাবেন মোদি।
তবে তারা যদি মত পালটে জোট বদল করেন তখন ইনডিয়া ব্লকের আসন সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ২৩২ থেকে ২৬০-এ। আর এনডিই'র আসন কমে আসবে ২৬৪-এ। তারপর সরকার গঠনের জন্য দুটি জোটেরই বাকি আসন পূরণের জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সমর্থন প্রয়োজন হবে। বলা যায়, কঠিন এক সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে আছে দুটি জোট।
তবে নীতিশ এবং চন্দ্রবাবু কখন কার দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেন তা বলা মুশকিল। নীতিশ গত এক দশকে পাঁচবার দল পরিবর্তন করেছেন, সম্প্রতি ফেব্রুয়ারিতে ইনডিয়া জোট থেকে বিজেপিতে যোগ দেন।
চন্দ্রবাবু, এখন এনডিএ-র অংশ হলেও, ২০১৯ সালের নির্বাচনের আগে জোট থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন, পরবর্তীতে বর্তমান নির্বাচনের আগে আবার যোগ দেন।
ইনডিয়া ব্লক আগামীকাল একটি বৈঠক করছে যেখানে এটি এবং অন্যান্য সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কংগ্রেসের এক নেতা জানিয়েছেন, নীতীশ কুমার ও টিডিপি-র মতো সমমনোভাবাপন্ন দলগুলোকে নিয়ে সরকার গঠনের কথা ভাববেন তারা।
এদিকে কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রী মোদিকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছে, এই যুক্তিতে যে বিজেপি এবং তার সহযোগীরা ৩৭০টি আসন জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি, যা তাদের '৪০০-পার' (৪০০-এরও বেশি আসন) লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম। এই খারাপ ফলাফল প্রধানমন্ত্রী মোদির জন্য একটি বড় ধাক্কা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা হ্রাসের প্রমাণ।
একই দাবি তুলেছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
প্রবীণ কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ এক্স-এ লেখেন, 'দেশের প্রধানমন্ত্রী শুধু ভোটেই নির্বাচিত হন না, তার ব্যক্তিগত মর্যাদা ও আত্মসম্মান দিয়েও নির্বাচিত হন। আজ নরেন্দ্র মোদী শুধু বিপুল ভোটেই হারিননি, তার ব্যক্তিগত ভাবমূর্তিতেও গভীরভাবে আঘাত লেগেছে। দেশ চালাতে গেলে শুধু আসন নয়, সুনামও দরকার।'