বিজেপি প্রার্থীকে বিপুল ভোটে হারানো কে এই ওয়াইসি?
সাত ধাপে ভোটগ্রহণের পর ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশ হয়েছে গতকাল (৪ জুন)। বুথফেরত জরিপ সংস্থাগুলো ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল, এবারও বিপুল বিজয় পাচ্ছে ক্ষমতাসীন বিজেপি ও তার নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ। কিন্তু প্রাথমিক ফল ঘোষণা শুরু হতেই সমস্ত বুথফেরত জরিপের ভবিষ্যদ্বাণী উল্টে দিয়েছে বিরোধী জোট ইনডিয়া। বিরোধীদের প্রত্যাশার চেয়েও বড় জয়ে সরকার গঠনে চাপের মুখেই পড়তে হতে পারে নরেন্দ্র মোদি ও এনডিএ জোটকে।
তারই ধারাবাহিকতায় এবার কড়া ভাষায় নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করলেন এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। হায়দ্রাবাদ লোকসভা কেন্দ্র থেকে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন ওয়াইসি। তারপরই প্রধানমন্ত্রী পদে নরেন্দ্র মোদিকে সমর্থন করতে চান না বলে স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দিলেন তিনি।
কে এই আসাদউদ্দিন ওয়াইসি?
আসাদউদ্দিন ওয়াইসির জন্ম ১৯৬৯ সালের ১৩ মে। ১৯৯৪ সালে তিনি হায়দ্রাবাদের চারমিনার নির্বাচনী এলাকা থেকে অবিভক্ত অন্ধ্র প্রদেশ বিধানসভায় নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯৯ সালের নির্বাচনেও তিনি ওই আসনে আবারও নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৪ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত হায়দ্রাবাদ আসন থেকে টানা চারবার নির্বাচিত হন তিনি।
আসাদউদ্দিন ওয়াইসির বাবা সুলতান সালাহউদ্দিন ওয়াইসি হায়দ্রাবাদ আসন থেকে ছয়বার নির্বাচিত হয়েছিলেন। অসুস্থতার কারণে ২০০৪ সালের তিনি নির্বাচনে দাঁড়াননি। তার জায়গায় ছেলে আসাদউদ্দিন ওয়াইসি নির্বাচন করেন।
২০০৮ সালে সালাহউদ্দিন ওয়াইসি মারা যান। এরপর আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এআইএমআইএম-এর সভাপতি নির্বাচিত হন।
দলটির দাবি- আসাদউদ্দিন ওয়াইসি দেশে মুসলিমসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের কল্যাণে সংখ্যালঘু বিষয়ক একটি মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছেন।
এবারের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বলেন, "বিজেপি ভেবেছিল তারা অদৃশ্য, কিন্তু কেউ অজেয় নয়। প্রধানমন্ত্রী মোদি কি লাঠির সাহায্য ছাড়া সরকার গড়তে পারবে?'
নিজ কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থীকে বিপুল ভোটে হারাবার পর ওয়াইসি সাংবাদিকদের বলেন, "আমি মানুষকে ধন্যবাদ জানাতে চাই আমাদের দলকে ঐতিহাসিক জয় দেওয়ার জন্য। পঞ্চমবার মানুষ আমাদের সফল করেছে। হায়দরাবাদের সকল মানুষকে ধন্যবাদ জানাই।"
এদিকে লোকসভায় বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি, পেয়েছে ২৪০টি আসন। অথচ ২০১৯ সালের নির্বাচনে বিজেপির মোট আসন সংখ্যা ছিল ৩০৩। কিন্তু পুরো ভারতের ভোটের হার হিসাব করা হলে বিজেপি ২০১৯ সালের তুলনায় এবার মাত্র ০.৭ শতাংশ কম ভোট পেলেও হারিয়েছে ৬৩ আসন।
সরকার গঠনে লোকসভার ২৭২ আসনের জন্য শরিকদের ওপর বিশেষভাবে নির্ভরশীল হতে হচ্ছে নরেন্দ্র মোদিকে। বিজেপি নিজে থেকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে ব্যর্থ হওয়ায় তেলেগু দেশম পার্টির (টিডিপি) প্রধান চন্দ্রবাবু নাইডুকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জোট গঠনের আলোচনা করতে ফোন দিয়েছেন।