স্ত্রীর জামিন বাতিল, ক্ষোভে ভরা আদালতে বিচারককে গুলি করলেন কেনিয়ান পুলিশ কর্মকর্তা
কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে আদালতে বিচারককে গুলি করেছেন দেশটির একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা। পরে অন্য পুলিশের গুলিতে ওই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) এ ঘটনা ঘটে।
ওই পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীর একটি মামলার শুনানি করছিলেন মাকাদারা প্রিন্সিপাল ম্যাজিস্ট্রেট মনিকা কিভুতিকে। বিচারক ওই শুনানি শেষ করার খানিক পরই চিফ ইন্সপেক্টর কিপচিরচির কিপ্রুতো তাকে গুলি করেন।
জানা গেছে, শুনানিতে কিপ্রুতোর স্ত্রী অনুপস্থিত থাকার কারণে তার জামিন বাতিল করেন বিচারক মনিকা কিভুতি। এ রায়ে ক্ষুব্ধ হন কিপ্রুতো।
স্ত্রীকে জামিন না দেওয়ার ক্ষোভে বন্দুক বের করে বিচারককে গুলি করেন কিপ্রুতো। এতে বিচারক আহত হন। কিপ্রুতু পশ্চিম কেনিয়ার লন্ডিয়ানির একটি পুলিশ স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
বিচারককে গুলি করার ঘটনায় আদালতে উপস্থিত অন্য পুলিশ কর্মকর্তারা তৎক্ষণাৎ পদক্ষেপ নেন। একজন পুলিশ কর্মকর্তা কিপ্রুতোকে গুলি করেন। এতে তিনি নিহত হন।
এ ঘটনায় আরও তিন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। বিচারক ও আহত পুলিশ কর্মকর্তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
কেনিয়ার বিভার বিভাগ এক বিবৃতিতে বলেছে, জামিনে মুক্তি পাওয়া একজন অভিযুক্ত বিচারকাজে উপস্থিত হননি এবং উপস্থিত হতে না পারার সন্তোষজনক ব্যাখ্যাও দিতে পারেননি। এর ফলে বিচারক মনিকা কিভুতি তার জামিন বাতিল করেন।
এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একজন ব্যক্তি বিচারককে গুলি করে তাকে আহত করেন বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।
বিচার বিভাগের বিবৃতিতে বলা হয়, প্রাথমিক প্রতিবেদনে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, 'গুলিবর্ষণকারী ব্যক্তি একজন পুলিশ কর্মকর্তা এবং অভিযুক্তের স্বামী'।
ন্যাশনাল পুলিশ সার্ভিস বলেছেন, কিপ্রুতো 'অজ্ঞাত কারণে' তার স্ত্রীর মামলার শুনানির সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালতকক্ষের ভেতরে একজন পুলিশ কর্মকর্তার বিচারককে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণের ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে গেছে গোটা কেনিয়া।
দেশটিতে পুলিশের বিরুদ্ধে প্রায়ই বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ এলেও আদালতের ভেতরে কখনও এরকম ঘটনা ঘটার খবর পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনার পর বিচারিক কর্মকর্তা এবং আদালতের সঙ্গে যুক্ত অন্যদের নিরাপত্তা বাড়াতে পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছে কেনিয়ার বিচার বিভাগ।