পয়ঃবর্জ্যে দূষিত সিন, প্রতিবাদে নদীতে ‘গণ-মলত্যাগ’ করার হুমকি প্যারিসবাসীর
২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকের বাকি আর মাত্র এক মাস, কিন্তু নগরীতে এখন সমালোচনার ঝড় উঠেছে সিন নদী নিয়ে। দূষণে জর্জর সিন নদী। কয়েক মাস আগে পরীক্ষায় পয়ঃনিষ্কাশন ও বর্জ্যপানির ব্যাকটেরিয়ার বাড়াবাড়ি রকমের উপস্থিতি পাওয়া গেছে নদীটিতে পানিতে।
সিনের দূষণ নিয়ে রীতিমতো তিতিবিরক্ত প্যারিসের বাসিন্দারা। তাই অলিম্পিক শুরু কয়েক সপ্তাহ আগে এ দূষণের প্রতিবাদে নদীতে 'গণ-মলত্যাগ'-এর হুমকি দিচ্ছেন নগরবাসীরা।
ভাইরাল হ্যাশট্যাগ #JeChieDansLaSeineLe23Juin ব্যবহার করে একটি ওয়েবসাইটও চালু করা হয়েছে। এ হ্যাশট্যযাগের অর্থ: '২৩ জুন আমি সিনে মলত্যাগ করব'। এই শব্দবন্ধটি গুগলে সার্চ করলেই এ ওয়েবসাইটে চলে আসছে। এ সাইটের প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি বাছাই করা হয়েছে মলের স্তূপের ইমোজি (?)।
এ ওয়েবসাইটে হ্যাশট্যাগের কথাগুলোর পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ ও প্যারিসের মেয়র অ্যান হিডালগোকে নিন্দা জানানোর উদ্দেশ্যেই এ কাজ। সিন যে নিরাপদ, তা প্রমাণের উদ্দেশ্যে অলিম্পিক শুরু হওয়ার আগে নদীতে সাঁতার কাটার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মাখোঁ ও হিডালগো।
ওয়েবসাইটটি ঘোষণা দিয়েছে, 'কারণ, আমাদেরকে মলের মধ্যে ডুবিয়ে রাখার পর এখন তাদেরও মলের মধ্যে গোসল করার পালা।'
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম অ্যাকটুপ্যারিস জানিয়েছে, গত মে মাসে হিডালগো ও অন্যান্য কর্মকর্তা সিনকে অলিম্পিকের আগে সাঁতারের যোগ্য করে তোলার ঘোষণা দেওয়ার পরই একটি কৌতুকের রেশ ধরে এ প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে।
সাম্প্রতিক বেশ কিছু পরীক্ষায় দেখা গেছে, সিনের পানিতে এখনও 'আতঙ্কজনক মাত্রায়' ব্যাকটেরিয়া রয়ে গেছে।
অ্যাকটুপ্যারিসের তথ্যমতে, এই ভাইরাল প্রতিবাদের বুদ্ধিটা এসেছে একজন কম্পিউটার প্রকৌশলীর মাথা থেকে। নাম না প্রকাশের শর্তে তিনি ওই সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'শুরুতে উদ্দেশ্য ছিল এই ব্যঙ্গাত্মক হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে স্রেফ মজা করা।'
আসন্ন অলিম্পিকে সিনে দূষণ বড় বিতর্কের বিষয় হয়ে আছে। নদীটিকে পরিষ্কার করে সাঁতারের যোগ্য করে তুলতে ফ্রান্স সরকার ইতিমধ্যে প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে শহরের পুরনো পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা পরিষ্কার করতে। ভারী বৃষ্টি হলেই শহরের পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা উপচে ময়লা পানি নদীতে গিয়ে পড়ে।
শুক্রবার কর্মকর্তারা জানান, মধ্য-জুনের পরীক্ষায় দেখা গেছে, নদীর পানিতে ব্যাপক মাত্রায় ই. কোলাই ও এন্টেরোকক্কাই ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি রয়েছে।
ডায়রিয়া, নিউমোনিয়ার জন্য দায়ী ই. কোলাই। অন্যদিকে এন্টেরোকক্কাইয়ের সঙ্গে মেনিনজাইটিসের সংযোগ আছে।