ফ্যাশন সাইট ‘শেইনে’ অর্ডার করা জুতার প্যাকেটে এলো বিচ্ছু!
ফ্যাশন সাইট শেইন থেকে একটি বুট কিনেছিলেন সোফিয়া আলোনসো-মোসিঙ্গার নামের এক শিক্ষার্থী। কিন্তু শুধু জুতাই নয়; বরং ঐ পার্সেলের ভেতর সাথে চলে আসে একটি জীবন্ত বিচ্ছু। এক্ষেত্রে ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐ শিক্ষার্থী স্বাভাবিকভাবেই ভয়ে চমকে ওঠেন।
সোফিয়া বিবিসিকে বলেন, "আমি ভেবেছিলাম এটা হয়তো খেলনা। কিন্তু পরে এটিকে নাড়াচাড়া করতে দেখতে পাই।"
সোফিয়া তার ফ্লাটের অন্য বন্ধুদের সাথে নিয়ে প্রথমে বিচ্ছুটিকে একটি পাত্রে রাখেন। পরবর্তীতে বিশেষজ্ঞের কাছে এটি হস্তান্তর করা হয়।
ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে চীন ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান শেইন একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত করেছে। সেক্ষেত্রে কোম্পানিটি নিশ্চিত করেছে যে, সমস্ত স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রক্রিয়া মেনেই এই পার্সেল করা হয়েছিল।
তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী সোফিয়া বলেন, "আমি বাইরের প্যাকেজটি খুললে কিছু একটা নড়তে দেখি। তখন আমি ভাবছিলাম, এটা আবার কী?"
ভেতর বিচ্ছু বুঝতে পেরে সোফিয়া জুতার প্যাকেটটি বন্ধ করে দেন। এক্ষেত্রে নিজের রুম থেকে বের হয়ে তিনি অতি দ্রুত ফ্লাটের অন্য বন্ধুদের ডাক দেন।
১৮ বছর বয়সি এই শিক্ষার্থী বলেন, "আমি মনে করেছিলাম, আমি স্বপ্ন দেখছি। আমি ভাবছিলাম মাকড়সা হলেও ঠিক ছিল। কিন্তু আমার ঘরে এলোমেলো অবস্থায় বিচ্ছু থাকাটা ভীতিজনক ছিল৷"
পাশে থাকা আরেক বন্ধু ফোয়েবে হান্ট চিৎকার শুনে সোফিয়ার কাছে যান। সেখানে পৌঁছে তিনি জুতার ব্যাগে জীবন্ত বিচ্ছু দেখতে পান।
ফোয়েবে বলেন, "সত্যি কথা বলতে আমি বলেছিলাম যে, আমাদের এটিকে মেরে ফেলা উচিত। তারপরে সবাই বলেন যে, এমনটা করা মানবিক হবে না। তাই আমরা এটিকে তুলে একটি পাত্রে রেখেছিলাম।"
মূলত অলিভার জেমস নামের প্রাণীবিদ্যার এক শিক্ষার্থী বিচ্ছুটিকে একটি প্লাস্টিকের কন্টেইনারের ভেতর রাখেন। তিনি বলেন, "বিষয়টি কিছুটা মানসিক চাপের ছিল। কেননা এটি কতটা বিষাক্ত তা আমরা কেউ জানতাম না।"
ফ্ল্যাটের সদস্যরা এরপর বিচ্ছুটিকে কিছু পানি দিয়েছিল। প্রাণীটি অবিলম্বে সেটি পান করে ফেলে।
এরপর ফোয়েবে ন্যাশনাল সেন্টার ফোর রেপটাইল ওয়েলফেয়ার (এনসিআরডব্লিউ) এর সাথে যোগাযোগ করে। এই চ্যারিটির পক্ষ থেকে কয়েক ঘণ্টার মাঝেই একজনকে পাঠানো হয়।
এনসিআরডব্লিউ-এর ক্রিস নিউম্যান জানান, বিচ্ছুটির নাম অলিভিয়েরাস মার্টেনসি। এটি চাইনিজ বিচ্ছু হিসেবেই সাধারণভাবে পরিচিত।"
নিউম্যান বলেন, "বিচ্ছুটির কারণে জীবন বিপন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এক্ষেত্রে একজন প্রাপ্তবয়স্কের দিনকে এটি বিষিয়ে তুলতে পারে। এক মাসের কম সময়ের মধ্যে আমরা এমন দ্বিতীয় ঘটনার সম্মুখীন হলাম।"
সোফিয়া বলেন, "এখন মনে হচ্ছে যে, এটি একটি মজার ঘটনা। তবে এটি তখন বেশ ভীতিকর ছিল।"
শেইন জানায়, সমস্যাটি সমাধানের জন্য তারা কাজ করছে। সেক্ষেত্রে এক বিবৃতিতে বলা হয়, "খবরটি পাওয়ার পর আমরা অবিলম্বে একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত পরিচালনা করেছি।"
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ""আমাদের মাঠ পর্যায়ের দলগুলি প্যাকিং প্রক্রিয়াটি পরীক্ষা করেছে। একইসাথে গুদামে থাকা পণ্যগুলি পরিদর্শন করেছে। সেক্ষেত্রে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, সমস্ত স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রক্রিয়াগুলি মেনে চলা হয়েছে৷"
অনুবাদ: মোঃ রাফিজ খান