লোহিত সাগরে জাহাজে হামলা চালাতে হুথি বিদ্রোহীদের স্যাটেলাইট তথ্য দিয়েছে রাশিয়া: রিপোর্ট
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা ও হামলা চালানোর জন্য রাশিয়ার সরবরাহ করা স্যাটেলাইট তথ্য ব্যবহার করেছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা।
দুই ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাসহ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনটি সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি এ তথ্য জানিয়েছে।
জার্নালটির একটি সূত্র জানিয়েছে, ইয়েমেনের বিদ্রোহীদের সঙ্গে সম্পৃক্ত ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের সদস্যদের মাধ্যমে স্যাটেলাইট তথ্য হুথিদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত জার্নালের এই প্রতিবেদনে আরও স্পষ্ট ইঙ্গিত দেওয়া হলো যে, রাশিয়া পর্দার আড়ালে হুথিদের সমর্থন দিচ্ছে।
পশ্চিমা গোয়েন্দাদের মতে, ক্রেমলিন এ বছরের শুরুতে হুথিদের জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর বিষয়টি আলোচনা করেছিল।
গত সেপ্টেম্বরে তিনটি আঞ্চলিক ও পশ্চিমা সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছিল, ইরানের মাধ্যমেই এই চুক্তি সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ক্রেমলিন বিজনেস ইনসাইডারের মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।
পশ্চিমাদের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মস্কো স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, তারা মধ্যপ্রাচ্যে ওয়াশিংটনের জড়িত থাকার বিরোধিতা করে।
অন্যদিকে, মার্কিন নৌবাহিনী লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক শিপিং লেনগুলো রক্ষা এবং সর্বাত্মক আঞ্চলিক যুদ্ধের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করার অজুহাতে মধ্যপ্রাচ্যে নিজের উপস্থিতি জোরদার করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য যখন হুথিদের লক্ষ্যবস্তুতে কয়েক ডজন হামলা চালায়, সেসময় ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এই হামলাকে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী 'অবৈধ' বলে নিন্দা জানিয়েছিলেন।
হুথিরা কয়েক মাস ধরে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে।
তাদের দাবি, গাজায় বোমা হামলার জন্য ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিচ্ছে তারা।
গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় দেশটির ৪১ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
তবে ইয়েমেনের বিদ্রোহীদের হামলার মুখে থাকা অনেক জাহাজের সঙ্গে ইসরায়েলের কোনো সুস্পষ্ট সম্পর্ক নেই।
সামুদ্রিক গবেষণা পরামর্শদাতা ড্রিউরির তথ্যমতে, লোহিত সাগর চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠায় এবং জাহাজগুলো কেপ রুট হয়ে ঘুরে যাওয়ায়, জানুয়ারিতে বিশ্বব্যাপী মালামাল পরিবহনের ভাড়া কন্টেইনারপ্রতি প্রায় ৪ হাজার ডলারে দাঁড়িয়েছিল। তারপরে জুলাই মাসে তা ৫ হাজার ৯০০ ডলারেরও বেশি বেড়েছে।
ড্রিউরির সূচক অনুসারে, গত বছরের অক্টোবরে সাধারণত প্রতি ট্রিপের ভাড়া ছিল ১৩০০ ডলার মতো।
এদিকে, লোহিত সাগরে হুথিদের হামলা ঠেকাতে মার্কিন সামরিক বাহিনী একাধিক বিমানবাহী রণতরী গ্রুপকে মোতায়েন করেছে। গত সপ্তাহে তারা বি-২ স্পিরিট স্টিলথ বোমারু বিমান দিয়ে ইয়েমেনের বেশ কয়েকটি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে।
ভাবানুবাদ: তাবাসসুম সুইটি